জাহান্নামের ঘটনা
জাহান্নামের ঘটনা
বান্দা জাহান্নামে
যাওয়ার পর কি হবে? জাহান্নামের শাস্তি কি? জাহান্নামীগণ আল্লাহর সাথে কি কথা বলবে জাহান্নামের যাওয়ার সাথে সাথে
কি ঘটবে ইত্যাদি আজ জানবো আমরা।
পথভ্রষ্টকারী নেতাদের
জন্য
জাহান্নাম
পথভ্রষ্টকারী
নেতাদের জন্য জাহান্নামে তাদের
ভক্তদের লা'নত ও
তাদেরকে দ্বিগুণ আজাব দেয়ার জন্য দরখাস্ত:
আরবির বাংলা অর্থ:
“যেদিন তাদের মুখমণ্ডল অগ্নিতে উলট পালট করা
হবে, সেদিন তারা বলবে হায়!
আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম
ও রাসূলকে মানতাম! তারা আরো বলবে:
হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নেতা
ও বড় লোকদের আনুগত্য
করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে
পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের প্রতিপালক!
তাদের দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন এবং তাদেরকে
দিন মহা অভিসম্পাত।” (সূরা
আহযাব ৬৬-৬৮)
জাহান্নামে যাওয়ার
পর
পথভ্রষ্ট
আলেম
জাহান্নামে
যাওয়ার পর পথভ্রষ্ট আলেম
ও তাদের ভক্তদের পরস্পরের ঝগড়া:
আরবির বাংলা অর্থ:
আর তারা একে অপরের
মুখোমুখি হয়ে জিজ্ঞেস করবে,
তারা বলবে, ‘তোমরাই তো আমাদের কাছে
আসতে ধর্মীয় দিক থেকে। জবাবে
তারা (নেতৃস্থানীয় কাফিররা) বলবে, ‘বরং তোমরা তো
মু'মিন ছিলে না'। আর তোমাদের
উপর আমাদের কোনো কর্তৃত্ব ছিল
না, বরং তোমরা ছিলে
সীমালঙ্ঘনকারী কওম'। ‘তাই
আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের রবের বাণী সত্য
হয়েছে; নিশ্চয় আমরা আস্বাদন করব
(আজাব)'। ‘আর আমরা
তোমাদেরকে
এ
আয়াতে jall বলতে দীন বুঝানো
হয়েছে। কারো কারো মতে
এ দ্বারা শক্তি-সামর্থ্য বা কল্যাণ-স্বাচ্ছন্দ্য
বুঝানো হয়েছে।
জাহান্নামের আজাব
বিভ্রান্ত
করেছি, কারণ আমরা নিজেরাই
ছিলাম বিভ্রান্ত'। নিশ্চয় তারা
সবাই . সেদিন আযাবে অংশীদার হবে। (সূরা সাফ্ফাত ২৭-৩৩ )
জাহান্নামে মুশরিকরা
জাহান্নামে
মুশরিকরা স্বীয় উস্তাদদের চক্রান্তের ভর্ৎসনা করবে তখন উস্তাদরা
নিজেদের নির্দোষিতা প্রমাণ করতে চাইবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
আর কাফিরগণ বলে, 'আমরা কখনো এ
কুরআনের প্রতি ঈমান আনব না
এবং এর পূর্ববর্তী কোনো
কিতাবের প্রতিও না'। আর
তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে,
যখন তাদের রবের কাছে দাঁড়
করিয়ে দেয়া হবে তখন তারা
পরস্পর বাদানুবাদ করতে থাকবে। যাদেরকে
দুর্বল করে রাখা হয়েছিল
তারা অহঙ্কারীদেরকে বলবে, 'তোমরা না থাকলে অবশ্যই
আমরা মু'মিন হতাম'।
যারা অহঙ্কারী
ছিল
তারা
যারা অহঙ্কারী ছিল তারা, তাদেরকে বলবে, যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল, ‘তোমাদের কাছে হিদায়াত আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা থেকে বাধা দিয়েছিলাম? বরং তোমরাই ছিলে অপরাধী'। আর যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তারা, যারা অহঙ্কারী ছিল তাদেরকে বলবে,
‘বরং এ ছিল
তোমাদের দিন-রাতের চক্রান্ত,
যখন তোমরা আমাদেরকে আদেশ দিয়েছিলে যেন
আমরা আল্লাহকে অস্বীকার করি এবং তাঁর
সমকক্ষ স্থির করি'। আর
তারা যখন আজাব দেখবে তখন তারা অনুতাপ
গোপন করবে। আর আমি কাফিরদের
গলায় শৃঙ্খল পরিয়ে দেব। তারা যা
করত কেবল তারই প্রতিফল
তাদেরকে দেয়া হবে । (সূরা
সাবা ৩১-৩৩)
জাহান্নামে মুরীদরা
পীরদেরকে
বলবে
জাহান্নামে
মুরীদরা পীরদেরকে বলবে আমাদেরকে আল্লাহর
আজাব
থেকে রক্ষা কর, তারা উত্তরে
বলবে: এখানে আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচানোর মত
কেউ নেই
আরবির বাংলা অর্থ: আর তারা সবাই আল্লাহর সামনে হাজির হবে, অতঃপর যারা অহঙ্কার করেছে দুর্বলরা তাদেরকে বলবে, 'নিশ্চয় আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম। সুতরাং তোমরা কি আল্লাহর আযাবের মোকাবেলায় আমাদের কোনো উপকারে আসবে?
তারা বলবে, 'যদি আল্লাহ আমাদের
হিদায়াত করতেন, তাহলে আমরাও তোমাদের হিদায়াত করতাম, এখন আমরা অস্থির
হই কিংবা সবর করি, উভয়
অবস্থাই আমাদের জন্য সমান, আমাদের
পালানোর কোনো জায়গা নেই'। (সূরা ইবরাহীম
২১)
দৃষ্টান্তমূলক কথাবার্তা
জাহান্নামের পাহারাদার:
তোমাদের নিকট কি আল্লাহর
রাসূল আসেন নি?
কাফির:
এসেছিল কিন্তু আমরা নিজেরাই জাহান্নামের
আজাব
মেনে নিয়েছি। জাহান্নামের পাহারাদার: তাহলে এ দরজা দিয়ে
জাহান্নামে প্রবেশ কর।
আরবির বাংলা অর্থ:
আর কাফিরদেরকে দলে দলে জাহান্নামের
দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে তারা
যখন জাহান্নামের কাছে এসে পৌঁছবে
তখন তার দরজাগুলো খুলে
দেয়া হবে এবং জাহান্নামের
রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, 'তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের
কাছে কি রাসূলগণ আসেনি,
যারা তোমাদের কাছে তোমাদের রবের
আয়াতগুলো তিলাওয়াত করত এবং এ
দিনের সাক্ষাৎ সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করত'?
তারা
বলবে, ‘অবশ্যই এসেছিল'; কিন্তু কাফিরদের উপর আযাবের বাণী
সত্যে পরিণত হলো। বলা হবে,
'তোমরা জাহান্নামের দরজাসমূহে প্রবেশ কর, তাতেই স্থায়ীভাবে
থাকার জন্য। অতএব অহঙ্কারীদের আবাসস্থল
কতই না নিকৃষ্ট'! (সূরা
যুমার ৭১-৭২)
জাহান্নামের পাহারাদার
জাহান্নামের
পাহারদার: তোমাদের নিকট কি কোনো
ভয় প্রদর্শনকারী আসে নি?
কাফির:
এসেছিল কিন্তু আমরা তাদেরকে মিথ্যায়
প্রতিপন্ন করেছি, হায়। আমরা যদি তাদের
কথা মনযোগ দিয়ে শুনতাম তাহলে জাহান্নাম থেকে বেঁচে যেতাম
জাহান্নামের পাহারাদার:
এখন অন্যায় স্বীকার করার ফায়দা এই
যে, তোমাদের প্ৰতি লা'নত:
জাহান্নামের পাহারাদার জিজ্ঞেস করবে
আরবির বাংলা অর্থ:
যখনই তাতে কোনো দলকে
নিক্ষেপ করা হবে, তখন
তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো
সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবে, 'হ্যাঁ,
আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল।
তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ
কিছুই নাযিল করেননি।
তোমরা
তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ'। আর তারা
বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম
অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের
অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না'। অতঃপর
তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব ধ্বংস জ্বলন্ত
আগুনের অধিবাসীদের জন্য। (সূরা মূলক ৮-১১)
জাহান্নামের পাহারাদার:
তোমাদের বিপদাপদ দূর কারীরা কোথায়?
কাফির:
আফসোস! তাদের বিপদাপদ দূর করার কথা
তো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে:
তাদের গলদেশে
বেড়ী
ও
শিকল
থাকবে
আরবির বাংলা অর্থ:
যখন তাদের গলদেশে বেড়ী ও শিকল থাকবে,
তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া
হবে ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে পোড়ানো হবে। তারপর তাদেরকে
বলা হবে, ‘কোথায় তারা, যাদেরকে তোমরা শরীক করতে আল্লাহ
ছাড়া’?
তারা
বলবে, 'তারা তো আমাদের
কাছ থেকে উধাও হয়ে
গেছে', বরং এর পূর্বে
আমরা কোনো কিছুকে আহ্বান
করিনি'। এভাবেই আল্লাহ
কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করেন। (সূরা মু'মিন
৭১-৭৪)
কাফির
স্বীয় চোখ, কান, চামড়াকে
লক্ষ্য করে বলবে: তোমরা
আল্লাহর সামনে আমাদের বিরুদ্ধে কেন সাক্ষী দিয়েছ?
চোখ, কান, চামড়া বলবে:
আমাদের ঐ আল্লাহ সাক্ষী
দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন,
যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাই আমরা সাক্ষী
দিয়েছিঃ
জাহান্নামের কাছে
পৌঁছবে
আরবির বাংলা অর্থ:
আর যেদিন আল্লাহর দুশমনদেরকে আগুনের দিকে সমবেত করা
হবে তখন তাদেরকে বিভিন্ন
দলে বিন্যস্ত করা হবে। অবশেষে
তারা যখন জাহান্নামের কাছে
পৌঁছবে, তখন তাদের কান,
তাদের চোখ ও তাদের
চামড়া তাদের বিরুদ্ধে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে।
আর
তারা তাদের চামড়াগুলোকে বলবে, ‘কেন তোমরা আমাদের
বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে'? তারা বলবে, 'আল্লাহ
আমাদের বাকশক্তি দিয়েছেন যিনি সবকিছুকে বাকশক্তি
দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার
সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই প্রতি
তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।' (সূরা হা-মীম
সেজদাহ ১৯-২১)
জাহান্নামীরা বলবে
জান্নাতীরা
জাহান্নামীদেরকে লক্ষ্য করে বলবে: আল্লাহ
আমাদের সাথে কৃত সমস্ত
ওয়াদা পূরণ করেছেন, তোমাদের
সাথে কৃত সমস্ত ওয়াদাও
কি পুরণ করেছেন?
জাহান্নামীরা
বলবে: হ্যাঁ আমাদের সাথে কৃত সমস্ত
ওয়াদাও পুরণ করেছেন, জাহান্নামের
পাহারাদার বলবে লা'নত
পরকালকে অস্বীকার কারীদের প্রতি এবং ইসলামের রাস্তা
থেকে বাঁধা দানকারীদের প্রতি:
আল্লাহর লা'নত
যালিমদের
উপর
আরবির বাংলা অর্থ
: আর জান্নাতের অধিবাসীগণ আগুনের অধিবাসীদেরকে ডাকবে যে, ‘আমাদের রব
আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন
তা আমরা সত্য পেয়েছি।
সুতরাং তোমাদের রব তোমাদেরকে যে
ওয়াদা দিয়েছেন, তা কি তোমরা
সত্যই পেয়েছ'? তারা বলবে, 'হ্যাঁ'।
অতঃপর
এক ঘোষক তাদের মধ্যে
ঘোষণা দেবে যে, আল্লাহর
লা'নত যালিমদের উপর'। 'যারা আল্লাহর
পথে বাধা প্রদান করত
এবং তাতে বক্রতা সন্ধান
করত এবং তারা ছিল
আখিরাতকে অস্বীকারকারী'। (সূরা আরাফ
৪৪-৪৫ )
পৃথিবীতে
এক সাথে জীবন যাপনকারী
মুনাফিক ও মু'মিনদের
মাঝে নিন্মোক্ত কথাবার্তা হবে
তোমাদের ঠিকানা
জাহান্নাম
এ
অন্ধকারে আমাদেরকে তোমাদের আলো থেকে কিছু
আলো দাও। মু'মিন:
এ আলো পাওয়ার জন্য
আবার পৃথিবীতে যাও যদি সম্ভব
হয়, এ অস্বীকৃতি শুনে
মুনাফিক দ্বিতীয়বার বলবে: দুনিয়াতে আমরা কি তোমাদের
সাথে ছিলাম না?
মু'মিন: তোমরা আমাদের
সাথে তো ছিলো কিন্তু
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের
রাস্তার ব্যাপারে সন্দেহে লিপ্ত ছিলে। মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিতে ছিলে তাই
তোমাদের
ঠিকানা
জাহান্নাম।
মুনাফিক পুরুষ
ও
মুনাফিক
নারীগণ
আরবির বাংলা অর্থ:
সেদিন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীগণ ঈমানদারদের বলবে, ‘তোমরা আমাদের জন্য অপেক্ষা কর,
তোমাদের নূর থেকে আমরা
একটু নিয়ে নেই', বলা হবে, ‘তোমরা
তোমাদের পিছনে ফিরে যাও এবং
নূরের সন্ধান কর,' তারপর তাদের
মাঝখানে একটি প্রাচীর স্থাপন
করে দেয়া হবে, যাতে একটি
দরজা থাকবে।
তার
ভিতরভাগে থাকবে রহমত এবং তার
বহির্ভাগে থাকবে আজাব। মুনাফিকরা মু'মিনদেরকে ডেকে বলবে, ‘আমরা
কি তোমাদের সাথে ছিলাম না?
তারা বলবে 'হ্যাঁ, কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ।
আর
তোমরা অপেক্ষা করেছিলে এবং সন্দেহ পোষণ
করেছিলে এবং আকাঙ্ক্ষা তোমাদেরকে
প্রতারিত করেছিল, অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ এসে গেল। আর
মহা প্রতারক” তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছিল। (সূরা হাদীদ ১৩-১৪)
আল্লাহর সাথে
কাফিরদেরদের
কথাবার্তা
আল্লাহ: আমার নিদর্শনসমূহ কি
তোমাদের নিকট আসে নি?
কাফির: হে আল্লাহ! আমরা
বাস্তবেই পথভ্রষ্ট ছিলাম একবার আমাদেরকে এখান থেকে বের
করুন দ্বিতীয় বার কুফরী করলে
তখন আমাদেরকে শাস্তি দিবেন।
আল্লাহ:
তোমরা লাঞ্ছিত হও এখান থেকে
বের হওয়ার ব্যাপারে আমার সাথে কোনো
কথা বলবে না। বল
পৃথিবীতে তোমরা কতদিন জীবিত ছিলে?
কাফির: এক
বা
দু'দিন।
আল্লাহ:
এত অল্প সময়ের জন্য
তোমরা বিবেক খাটিয়ে কাজ করতে পার
নি আর মনে করেছিলে
যে আমার নিকট আর
কখনো আসবে না?
আরবির বাংলা অর্থ: তোমাদের সামনে কি আমার আয়াতসমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দুর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি।
হে আমাদের পালনকর্তা!
এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার
কর; আমরা যদি পুনরায়
তা করি, তবে আমরা
গুনাহগার হব। আল্লাহ বলবেনঃ
তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং
আমার সাথে কোনো কথা
বলো না।
আমাদেরকে ক্ষমা
কর
আমার
বান্দাদের একদলে বলত: হে আমাদের
পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন
করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে
ক্ষমা কর ও আমাদের
প্রতি রহম কর। তুমি
তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতে।
এমনকি,
তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে
দিয়েছিল এবং তোমরা তাদেরকে
দেখে পরিহাস করতে। আজ আমি তাদেরকে
তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি
যে, তারাই সফলকাম। আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়?
তোমরা তাতে
অল্পদিনই
অবস্থান
করেছ
তারা
বলবে, আমরা একদিন অথবা
দিনের কিছু অংশ অবস্থান
করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে
জিজ্ঞেস করুন। আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান
করেছ, যদি তোমরা জানতে?
তোমরা কি ধারণা কর
যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক
সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার
কাছে ফিরে আসবে না?
(সূরা মু'মিনূন ১০৫-১১৫)
আল্লাহর সাথে
কাফিরদের
কথপোকথন
আল্লাহর
সাথে কাফিরদের আরো একটি কথপোকথন:
আল্লাহ: মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত
হওয়া সত্য কি না?
কাফির:
কেন নয় বিলকুলই সত্য
আল্লাহ:
তাহলে তা অস্বীকারের স্বাদ
গ্রহণ কর।
কাফির:
আফসোস। কিয়ামতের ব্যাপারে আমরা বিরাট ভুল
করেছি?
আল্লাহর সাক্ষাৎ
অস্বীকার
করেছে
আরবির বাংলা অর্থ: আর যদি তুমি দেখতে যখন তাদেরকে দাঁড় করানো হবে তাদের রবের সামনে এবং তিনি বলবেন 'এটা কি সত্য নয়'? তারা বলবে, 'হ্যাঁ, আমাদের রবের কসম!' তিনি বলবেন, 'সুতরাং তোমরা যে কুফরী করতে তার কারণে আজাব আস্বাদন কর।'
যারা আল্লাহর
সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে, এমনকি যখন হঠাৎ তাদের
কাছে কিয়ামত এসে যাবে, তারা
বলবে, 'হায় আফসোস! সেখানে
আমরা যে ত্রুটি করেছি
তার উপর।' তারা তাদের পাপসমূহ
তাদের পিঠে বহন করবে;
সাবধান! তারা যা বহন
করবে তা কত নিকৃষ্ট!
(সূরা আনআম ৩০-৩১)
জান্নাতী ও
জাহান্নামীদের
কথপোকথন
জান্নাতী
ও জাহান্নামীদের মাঝে একটি কথপোকথন:
জান্নাতী: তোমরা কি কারণে জাহান্নামে
আসলে?
জাহান্নামী:
আমরা নামায পড়তাম না মিসকীনদেরকে খাবার দিতাম না। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিদ্রূপকারীদের সাথে মিলে আমরাও তাদের সাথে বিদ্রূপ করতাম এবং কিয়ামতের দিনকে অস্বীকার করতাম।
জাহান্নামের আজাব
আরবির বাংলা অর্থ:
বাগ-বাগিচার মধ্যে তারা একে অপরকে
জিজ্ঞাসা করবে, অপরাধীদের সম্পর্কে, কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামের
আগুনে প্রবেশ করাল? তারা বলবে, ‘আমরা
সালাত আদায়কারীদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিলাম না'। ‘আর
আমরা অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করতাম না’। ‘আর আমরা
অনর্থক আলাপকারীদের সাথে (বেহুদা আলাপে) মগ্ন থাকতাম’।
‘আর আমরা প্রতিদান দিবসকে
অস্বীকার করতাম'। ‘অবশেষে আমাদের
কাছে মৃত্যু আগমন করে'।
(সূরা মুদ্দাসসির 80-89)
আল্লাহ ও
তার
ওলীদের
মাঝে
আল্লাহ
ও তার ওলীদের মাঝে
একটি শিক্ষামূলক কথপোকথন:
আল্লাহ্:
তোমরা কি আমার বান্দাদেরকে
পথ ভ্রষ্ট করেছ? না তারা নিজেরাই
পথভ্রষ্ট হয়েছে?
আল্লাহর
ওলী: সুবহানাল্লাহ!
আমরা তুমি ব্যতীত অন্য
কাউকে আমাদের বিপদাপদ দূরকারী কি করে বানাতে
পারি? তুমি তাদেরকে দুনিয়ার
সম্পদ দিয়েছ আর তারা তা
পেয়ে নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছে:
আল্লাহর পরিবর্তে
যাদের
ইবাদত
করত
আরবির বাংলা অর্থ:
সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর
পরিবর্তে যাদের ইবাদত করত তাদেরকে, সেদিন
তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই
বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই
পথভ্রান্ত হয়েছিল?
তারা
বলবে- আপনি পবিত্র, আমরা
আপনার পরিবর্তে অন্যকে মুরুব্বীরূপে গ্রহণ করতে পারতাম না;
কিন্তু আপনিই তো তাদেরকে এবং
তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলেন, ফলে তারা আপনার
স্মৃতি বিস্মৃত হয়েছিল এবং তারা ছিল
ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি। (সূরা ফুরকান ১৭-১৮)
জাহান্নামের পাহারাদারের
সাথে
জাহান্নামী
জাহান্নামের
পাহারাদারের সাথে জাহান্নামীদের কিছু
শিক্ষনীয় কথপোকথনঃ
আরবির বাংলা অর্থ:
আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ)
আল্লাহর বাণী তারা চিৎকার
করে বলবে: হে জাহান্নামের পাহারাদার
তোমার প্রতিপালক আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন। (বর্ণনাকারী
বলেন) এরপর চল্লিশ বছর
পর্যন্ত (ফেরেশতা) তাদের কাছ থেকে দূরে
থাকবে, এর কোনো উত্তর
দিবে না।
জাহান্নাম থেকে
উদ্ধার
করুন
এরপর
উত্তরে সে বলবে: তোমরাতো
এভাবেই থাকবে। তখন তারা বলবে:
হে আমাদের প্রতিপালক! এই অগ্নি থেকে
আমাদেরকে উদ্ধার করুন। অতঃপর আমরা যদি পুনরায়
কুফরী করি তবে তো
আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব।
আল্লাহ
তাদের একথা শুনে এমনভাবে
মুখ ফিরিয়ে নিবেন, যেমন তারা দুনিয়াতে
তাঁর কথা শুনে মুখ
ফিরিয়ে নিয়েছিল, এরপর আল্লাহ তাদের
উত্তরে বলবেন: তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই
থাক এবং আমার সাথে
কোনো কথা বলবে না।
বর্ণনাকারী বলেন: আল্লাহর কসম! এর পর
তাদের ঠোট বন্ধ হয়ে
যাবে আর শুধু তাদের
চিল্লাচিল্লির আওয়াজই শোনা যাবে।” (হাকেম
৪/৮৭৭০)
জাহান্নামের ঘটনা
উপসংহার
জাহান্নামের আজাব কি? জাহান্নামে না যাওয়ার দোয়াগুলো আমাদের নিয়মিত পড়তে হবে ও আল্লাহর আদেশ নিষধ মেনে আমাদেরকে চলতে হবে। মানুষ জাহান্নামে যাওয়ার পর কি হবে? জাহান্নামের শাস্তি কি?
জাহান্নামীগণ আল্লাহর সাথে কি
কথা বলবে; জাহান্নামের যাওয়ার সাথে সাথে কি ঘটবে ইত্যাদি আজ
আমরা জানলাম। তাই আমরা
যে কাজে আল্লাহপাক নারাজ হন অখুশি হন সে কাজগুলো করবো না আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জন
করে চলবো তাহলে মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন ইনশাআল্লাহ্।