যাকাত প্রদানের খাত কয়টি

যাকাত প্রদানের খাত কয়টি

যাকাত হচ্ছে সঞ্চিত সম্পদের সুনির্দিষ্ট অংশ যা দরিদ্র ও অভাবীদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয়। 

যাকাত ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। আরবী শব্দ 'যাকাহ; মানে 'পবিত্র করা' (বাংলায় প্রচলিত উচ্চারণ 'যাকাত')। সঞ্চিত সম্পদের ওপর বছরে একবার যাকাত দিতে হয়। যাকাতের হার বা যাকাতের হিসাব হচ্ছে বার্ষিক শতকরা আড়াই (২.৫%) ভাগ। 

নগদ অর্থ, ব্যাঙ্কে রাখা টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা ও সোনা-রূপার অলঙ্কারের ওপর এ হারে যাকাত দিতে হয়। গরু-মহিষ-ছাগল-ভেড়া এবং ফসলের যাকাতের হার আলাদা।

নিসাব কাকে বলে

কম পক্ষে যে পরিমাণ সম্পদের ওপর যাকাত ফরয হয় তাকে নিছাব বলা হয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের ধনসম্পদের নিছাব ও তার যাকাতের হার টেবিল আকারে উল্লেখ করা হল:

যাকাতের হিসাব ২০২৩- Account of Zakat 2023
লোভ ও আত্মস্বার্থপরতার কলুষ-[-কালিমা থেকে আমাদের সম্পদকে পবিত্র করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে যাকাত। এছাড়া যাকাত আমাদেরকে আয়-উপার্জন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে সততার আশ্রয় নিতে উৎসাহিত করে।

মনে রাখতে হবে, যাকাত একটি বাধ্যতামূলক বা ফরয কর্তব্য। অতএব তা কোন দান-খয়রাত বা কর নয়। দান-খয়রাত হচ্ছে ঐচ্ছিক ব্যপার। অন্যদিকে কর হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ব্যাপার: রাষ্ট্র বা সরকার যে কোন কাজের জন্যে ব্যক্তির ওপর কর আরোপ করতে পারে। কিন্তু যাকাত কেবল ইসলাম কর্তৃক নির্ধারিত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা যেতে পারে যাকাতের হিসাব।

এ খাতগুলো হচ্ছে: দরিদ্র ও অভাবীদের সাহায্য করা, যাকাত আদায়কারীদের বেতন প্রদান, বন্দী মুক্তকরণ, ঋণী ব্যাক্তিকে ঋণমুক্ত করণ, আর্থিক অসুবিধায় পড়েছে এমন মুসাফিরকে সাহায্য করা, নও মুসলিমদের অন্তর জয় করা এবং আল্লাহর রাস্তায়। (সূরাহ আত-তাওবাহ্- ৬০)

যাকাত প্রদান একটি ইবাদত

‘ইবাদাত একটি আরবী শব্দ যার অর্থ হচ্ছে উপাসনা ও আনুগত্য। আমরা যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করি তাহলে আমাদের জীবনের সকল কাজই 'ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। আমরা আল্লাহ্ তা'আলার সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ লাভের জন্য যাকাত দেই। যাদের জীবন ধারণের ন্যূনতম ধনসম্পদ নেই যাকাত ব্যবস্থা তাদেরকে আমাদের অতিরিক্ত ধনসম্পদে অংশীদার করার সুযোগ করে দেয়। 

বস্তুতঃ আমাদের ও আমাদের ধনসম্পদের মালিক আল্লাহ্। তিনিই হচ্ছেন প্রকৃত মালিক, আর আমরা তাঁর পক্ষ থেকে তাঁর সম্পদের আমানতদার মাত্র। আমরা যখন বাধ্যতামূলক ‘ইবাদত হিসেবে যাকাত প্রদান করি তখন,

কার্যতঃ আমরা আমানতদার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করি মাত্র। (কুরআন মজীদে ‘যাকাত' ও ‘ছাদাকাহ' শব্দ দুটি পরস্পরের প্রতিশব্দ বা সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে)।

আমরা জানি যে, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এতে মানবজীবনের অন্যান্য দিকের সাথে অর্থনৈতিক দিকও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইসলামের নিজস্ব অর্থনৈতিক মূলনীতি রয়েছে। ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম মূলনীতি যাকাত- যার লক্ষ্য হচ্ছে সমাজকল্যাণ ও সম্পদের ন্যায়সঙ্গত বন্টন। 

বাধ্যতামূলক যাকাত (Zakat) দেয়া ছাড়াও মুসলমানদেরকে দরিদ্র ও অভাবীদের প্রয়োজন পূরণে ঐচ্ছিক দান ও অন্যান্য সমাজকল্যাণমূলক লক্ষ্যে অর্থ ব্যয়ের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ধরনের ঐচ্ছিক দানকে ছাদাকাহ্ বলা হয়েছে ৷

সম্পদশালীরা যাকাত দেয়ার মাধ্যমে তাদের সম্পদে দরিদ্র ও অভাবীদের অংশীদার করে নেয় । এভাবে ইনসাফসম্মত বন্টন নিশ্চিত হয়। যেসব খাতে যাকাত ব্যয় করতে হবে কুরআন মজীদে তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। (সূরাহ আত্-তাওবাহ্- ৯: ৬০)

ট্যাগঃ
যাকাত প্রদানের খাত কয়টি
যাকাত প্রদানের খাত কয়টি ও কি কি
যাকাত প্রদানের নিয়ম
যাকাতের ইতিহাস
যাকাতের খাতসমূহ
যাকাত প্রদানের খাত সমূহ
যাকাতের খাত কয়টি ও কি কি
যাকাতের খাত কয়টি
যাকাত কিভাবে দিবেন
যাকাত বিতরণের খাত কয়টি
যাকাতের ৮ টি খাত কি কি
যাকাতের ৮টি খাত

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url