জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের নাম

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের নাম

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের নাম

আশারায়ে মুবাশশারা বা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের নামের তালিকা ও জান্নাতীদের নাম ও তাদের ঘটনাসমূহ নিচে দেয়া হলোঃ

সর্বপ্রথম জান্নাতে যাবে

রাসূলুল্লাহ সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন

আবু বকর ও ওমর (রাঃ) ঐ সমস্ত জান্নাতিদের সরদার হবেন যারা বৃদ্ধ বয়সে ইন্তেকাল করেছেন:

অর্থ: “আলী বিন আবু তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি একদা রাসূলুল্লাহ সাঃ-এর সাথে ছিলাম হঠাৎ করে আবুবকর ও ওমর (রাঃ) ও চলে আসলো, রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন: তারা উভয়ে বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুবরণকারী মুসলমানদের সরদার হবে, চাই তারা পূর্ববর্তী উম্মতের লোক হোক আর পরবর্তী উম্মতের। তবে নবী-রাসূলগণ ব্যতীত। হে আলী তুমি এ সংবাদ তাদেরকে দিওনা।” (তিরমিযী ৫/৩৬৬৫)

কে জান্নাতে যুবকদের সর্দার হবেন

হাসান ও হুসাইন (রাঃ) জান্নাতী যুবকদের সরদার হবে

অর্থ: “আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: হাসান ও হুসাইন (রাঃ) জান্নাতী যুবকদের সরদার হবে।” (তিরমিযী ৫/৩৭৬৮)

হযরত খাদিজা রাঃ এর কে নবী সাঃ জান্নাতে একটি ঘরের সুসংবাদ দিয়েছেন

অর্থ: “আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ খাদীজা (রাঃ)-কে জান্নাতে একটি ঘরের সুসংবাদ দিয়েছেন।” (মুসলিম)

আয়েশা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ সাঃ জান্নাতের সু সংবাদ দিয়েছেন:

হে আয়েশা! তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার স্ত্রী হবে? আয়েশা বললো কেন নয়? তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন: তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে আমার স্ত্রী।” (হাকেম)

(তালহা (রাঃ)-এর স্ত্রী) উম্মে সুলাইমকেও নবী সাঃ জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন
বেলাল (রাঃ)-কে নবী জান্নাতে একটি ঘরের সু সংবাদ দিয়েছেন:

অর্থ: “জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমাকে জান্নাত দেখানো হলো, আমি আবু তালহা (রা)-এর স্ত্রী উম্মে সুলাইমকে সেখানে দেখতে পেলাম, অতপর আমি সামনে অগ্রসর হয়ে কোনো মানুষের চলার আওয়াজ পেলাম, হঠাৎ দেখলাম বেলাল কে।” (মুসলিম ৪/২৪৫৭)

হযরত ওমর রাঃ-কে নবী সাঃ জান্নাতে একটি ঘরের সু সংবাদ দিয়েছেন:
তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ (রা)-কে নবী সাঃ জান্নাতের সু সংবাদ দিয়েছেন:

অর্থ: “যুবায়ের (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাঃ দু জোড়া কাপড় পরিধান করেছিলেন। তিনি একটি পাথরের উপর আরোহণ করতে ছিলেন কিন্তু তিনি তাতে চড়তে পারতেছিলেন না। তখন তিনি তালহা (রা)-কে তার নীচে বসালেন এবং তার ওপর আরোহণ করে তিনি তাতে চড়লেন।

যুবায়ের বলেন, এ সময় আমি নবী সাঃ-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: তালহার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে।” (তিরমিযী ৬/৩৭৩৮)

সাদ বিন মুয়াজ (রা) জান্নাতী

বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এবং বৃক্ষের নীচে বাইয়াত গ্রহণ কারীরা জান্নাতী সাদ বিন মুয়াজ (রা) জান্নাতী।

অর্থ: “জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সা বদরের যুদ্ধে এবং হুদায়বিয়ার সন্ধিতে অংশগ্রহণকারী কোনো লোক জাহান্নামী হবে না।” (আহমদ ২৩/১৫২৬২)

আসহাবে সুফফা

নোট: হুদায়বিয়ার সন্ধি ৬ হি: যিলকাদ মাসে সংঘটিত হয়, সাহাবাগণ হুদায়বিয়ার ময়দানে একটি গাছের নীচে রাসূলুল্লাহ সাঃ হাতে হাত রেখে তাঁর অনুগত্যে জীবন দেয়ার ওপর বাইয়াত গ্রহণ করে। আর ঐ বাইয়াতে অংশগ্রহণকারী সমস্ত সাহাবাগণকে আসহাবে সুফফা বলা হয় ।

আবদুল্লাহ বিন সালামকে নবী জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন

অর্থ: “সা'দ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে কোনো জীবিত চলমান ব্যক্তির ব্যাপারে একথা বলতে শুনি নি যে সে জান্নাতী তবে শুধু আবদুল্লাহ বিন সালামকে একথা বলেছেন।” (মুসলিম ৪/২৪৮৩)

নোট: সা'দ (রা) শুধু আবদুল্লাহ বিন সালাম (রা)-কেই এ সুসংবাদ দিতে শুনেছেন তাই তিনি তার ব্যাপারেই বর্ণনা করেছেন, কিন্তু অন্যান্য সাহাবাগণ রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে অন্য সাহাবীদেরকেও জান্নাতের সু সংবাদ দিতে শুনেছেন তাই তারা অন্যদের কথাও বর্ণনা করেছেন।

মাসআলা-৩২১: মারইয়াম বিনতে ইমরান, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ মালালার -এর স্ত্রী খাদীজা ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া জান্নাতী রমণীদের সরদার হবে:

জান্নাতী রমণীদের সরদার মারইয়াম বিনতে ইমরান-এর পরে ফাতেমা, খাদীজা,

আবদুল্লাহ বিন আমর বিন হারাম (রা) জান্নাতী

অর্থ: “যাবের বিন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: উহুদ যুদ্ধের দিন যখন আবদুল্লাহ বিন হারাম (রা) শহীদ হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন: হে যাবের! আমি কি তোমাকে ঐ কথা বলবো না, যা আল্লাহ তোমার পিতা সম্পর্কে বলেছেন? আমি বললামঃ কেন নয়? তিনি বললেন: আল্লাহ কোনো ব্যক্তির সাথে পর্দার আড়াল ব্যতীত কথা বলেন নি।

কিন্তু তোমার পিতার সাথে কোনো পর্দা ব্যতীত কথা বলেছে এবং বলেছেন হে আমার বান্দা! তুমি যা চাওয়ার তা চাও, আমি তোমাকে দিব। তোমার পিতা বলেছে হে আমার রব? আমাকে দ্বিতীয় বার জীবিত করো, যাতে আমি তোমার রাস্তায় শহীদ হতে পারি । আল্লাহ বললেন: আমার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, মৃত্যুর পর দুনিয়াতে আর ফেরত আসা যাবে না।

তোমার পিতা বললোঃ হে আমার রব! তাহলে তুমি আমার পক্ষ থেকে দুনিয়াবাসীকে আমার এ পয়গাম শুনিয়ে দাও যে, (আমি দ্বিতীয় বার শহিদ হয়ে মৃত্যুবরণের আকাঙ্খা করেছিলাম) তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে কর না। বরং তারা জীবিত। তারা তাদের পালনকর্তার নিকট রিযিক প্রাপ্ত হয়।” (সূরা আলে ইমরান: ১৬৯) (ইবনে মাজা ২/২৮০০)

নিচের চারজন সাহাবীগণও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী হিসেবে ইসলামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।

আম্মার বিন ইয়াসার এবং সালমান ফারসী (রা) জান্নাতী:
জা'ফর বিন আবু তালেব এবং হামজা (রা) জান্নাতী:
যায়েদ বিন হারেসা (রা) জান্নাতী
গুমাইসা বিনতে মিলহান (রা) জান্নাতী

গুমাইসা বিনতে মিলহানের শশুর ও ছেলে ওহুদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিল, আর তার ভাই হারাম বিন মিলহান বি'র মাউনার ঘটনায় শহীদ হয়েছিল। আর সে নিজে কুবরুস দ্বীপে আক্রমণ করে প্রত্যাবর্তনকারী সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত ছিল, আর ঐ সফরেই তিনি আল্লাহর প্রিয় হয়ে গিয়ে ছিলেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

হারেসা বিন নোমান (রা) জান্নাতী

অর্থ: “আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমি জান্নাতে প্রবেশ করে ক্বেরাতের আওয়াজ শুনতে পেলাম, আমি জিজ্ঞেস করলাম এ কে? ফেরেশতা উত্তরে বললো: হারেসা বিন নোমান। একথা শুনে তিনি বললেন: এটিই নেকীর প্রতিদান এটিই নেকীর প্রতিদান।” (হাকেম ২/১০০৪)

মদিনায় প্রথম হিজরত করা সাহাবীগণকে রাসূলুল্লাহ সাঃ জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন:

অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন আমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: তোমরা কি জান যে, আমার উম্মতের মধ্যে কোন্ দলটি সর্ব প্রথম জান্নাতে যাবে? তখন তিনি বললেন: মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত কারীরা কিয়ামতের দিন জান্নাতের দরজায় আসবে আর তাদের জন্য দরজা খুলে যাবে।

জান্নাতের দারওয়ান তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের হিসাব নিকাশ হয়ে গেছে? তখন তারা বলবে কিসের হিসাব? আমাদের তরবারী আল্লাহর পথে আমাদের কাঁধে ছিল আর ঐ অবস্থায়ই আমরা মৃত্যুবরণ করেছি। তখন জান্নাতের দরজা তাদের জন্য খুলে দেয়া হবে, আর তারা অন্যদের জান্নাতে প্রবেশের চল্লিশ বছর পূর্বে সেখানে প্রবেশ করে আনন্দ করতে থাকবে।” (হাকেম)

ইবনে দাহদাহ (রা) জান্নাতী:

অর্থ: “জাবির বিন সামুরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহসাঃ ইবনে দাহদাহ (রা) জানাযার নামায পড়ানোর পর তাঁর পাশে উন্মুক্ত পিঠ বিশিষ্ট একটি ঘোড়া আনা হলো, এক ব্যক্তি তা ধরলো এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ তাতে আরোহণ করলেন।

ঘোড়াটি তখন ভয়ে ভিত হয়ে বলতে লাগল আমরা সবাই আপনার পিছনে পিছনে চলতে ছিলাম, হঠাৎ লোকদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠলো যে, নবী সাঃ বলেছেন: ইবনে দাহদার জন্য জান্নাতে কত ফল ঝুলছে।” (মুসলিম)

উম্মুল মু'মিনীন হাফসা (রা) জান্নাতী

অর্থ: “আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: জিবরীল আমাকে বলেছে যে, আপনি হাফসা (রা) থেকে প্রত্যাবর্তন করুন, কেননা সে অধিক রোযাদার ও অধিক নফল নামায আদায়কারী এবং সে জান্নাতে আপনার স্ত্রী।” (হাকেম)

উকাসা (রা) জান্নাতী

পোস্ট ট্যাগঃ

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত পুরুষ সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবীর নাম
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবীর নাম
জান্নাত প্রাপ্ত দশজন সাহাবীর নাম
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ১০ সাহাবীর নাম
জান্নাতের ঝর্ণার নাম সমূহ
জান্নাতের ঝর্ণার নাম

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url