জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি হবে

জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি হবে

জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি হবে

হাজারে মাত্র একজন জান্নাতে যাবে আর বাকী ৯৯৯ জন যাবে জাহান্নামে

অর্থ: আদম (আ) বলবে: হে আল্লাহ আমি তোমার আনুগত্যে উপস্থিত, আর সমস্ত কল্যাণ তোমার হাতেই। তখন আল্লাহ বলবেন: সৃষ্টির মধ্য থেকে জাহান্নামীদেরকে পৃথক করো।

জাহান্নামীদের সংখ্যা কত

আদম বলবে: জাহান্নামীদের সংখ্যা কত? আল্লাহ বলবেন: এক হাজারের মধ্যে ৯৯৯ জন। নবী সাঃ বলেন: এটা ঐ সময় যখন বাচ্চা বৃদ্ধ হয়ে যাবে, আর গর্ভধারিনীদের গর্ভপাত হয়ে যাবে, আর তুমি লোকদেরকে দেখে বেহুশ বলে মনে করবে, অথচ তারা বেহুশ নয়, বরং আল্লাহর আযাব এতো কঠিন হবে যে, লোকেরা হুশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে।

ইয়াজুজ মাজুজের সংখ্যা

বর্ণনাকারী বলেন: একথা শুনে সাহাবাগণ হয়রান হয়ে গেল, আর বলতে লাগলো, হে আল্লাহর রাসূল! সাঃ তাহলে আমাদের মধ্যে এমন সৌভাগ্যবান কে হবে যে জান্নাতে যাবে? তিনি বললেন: আশান্বিত হও। ইয়াজুজ মাজুজের সংখ্যা এতো বেশি হবে যে, ৯৯৯ জন তাদের মধ্য থেকে হবে আর বাকী একজন তোমাদের মধ্য থেকে।” (মুসলিম ১/২২২)

উম্মতে মুহাম্মাদী সংখ্যাগরিষ্ঠ জান্নাতি

জান্নাতিদের দুই তৃতীয়াংশ মুহাম্মদ -এর উম্মত আর বাকী এক তৃতীয়াংশ হবে সমস্ত নবীদের উম্মত:

অর্থ: “বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ জান্নাতিদের একশ বিশটি কাতার হবে, যার মধ্যে আশি কাতার হবে মুহাম্মদ সাঃ-এর উম্মত আর বাকী চল্লিশ কাতার হবে অন্যান্য উম্মত।” (তিরমিযী ৪/২৫৪৬)

জান্নাতিদের অর্ধেক সংখ্যক হবে উম্মতে মুহাম্মাদী
জান্নাতিদের এক তৃতীয়াংশ তোমরা হবে

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন: তোমরা কি এতে খুশি নও যে, জান্নাতিদের এক তৃতীয়াংশ তোমরা হবে? আমরা আনন্দে আবারো আল্লাহু আকবার বললাম। আবার রাসূলুল্লাহ বললেন: আমি আশা করতেছি যে, জান্নাতিদের অর্ধেক তোমরা হবে, আর এর কারণ এই যে, কাফিরদের তুলনায় মুসলমানদের সংখ্যা এমন যেমন কাল চুল বিশিষ্ট এক শরীরে একটি সাদা চুল, বা সাদা চুল বিশিষ্ট শরীরে একটি কাল চুল। (মুসলিম ১/২২১)

উম্মতে মুহাম্মদীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ জান্নাতিদের মধ্যে

নোট: প্রথম হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ জান্নাতিদের মধ্যে উম্মতে মুহাম্মদীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ বলে বলেছেন আর পরবর্তী অংশে বলেছেন অর্ধেক, মূলত উভয় অংশের মাধ্যমে জান্নাতে উম্মতে মুহম্মদীর সংখ্যাধিক্য বুঝানোই উদ্দেশ্য। (আল্লাহই এ ব্যাপারে ভাল জানেন)

উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্যে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে বিনা শাস্তিতে জান্নাতে যাবে

প্রত্যেক হাজারের সাথে আরো একহাজার করে (অর্থাৎ ৪৯ লক্ষ) লোক মুহাম্মদ জান্নাতিদের মধ্যে উম্মতে মুহাম্মদীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ -এর উম্মতের মধ্য থেকে জান্নাতে যাবে:

এতদ্ব্যতীত আল্লাহর তিন লুফ পূর্ণ (যার সংখ্যা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন) মানুষও উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্য থেকে জান্নাতে যাবে:

সত্তর হাজার লোক জান্নাতে যাবে

অর্থ: “আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমার রব আমার সাথে ওয়াদা করেছেন যে, আমার উম্মতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোককে বিনা হিসাব ও শাস্তিহীন ভাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর এ প্রত্যেক হাজারের সাথে আরো সত্তর হাজার লোক জান্নাতে যাবে। এর সাথে আরো আল্লাহর তিন লুফপূর্ণ লোক জান্নাতে যাবে।” (তিরমিযী)‍

সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে

অর্থ: “ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমার উম্মতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলো ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! ঐ সৌভাগ্যবানরা কারা?

আমার জন্য দু'করুন

তিনি বললেন: তারা ঐসমস্ত লোক যারা কোনো দিন (অসুস্থতার কারণে) কোনো চিকিৎসা বা ঝাড় ফুকের বা ছেঁক দেয়ার ব্যবস্থা করে নি। বরং তারা শুধু তাদের রবের উপর ভরসা করে থাকে। উক্কাসা (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর নবী! আমার জন্য দু'আ করুন আমিও যেন তাদের একজন হতে পারি। নবী সাঃ বললেন: তুমি তাদের একজন।” (মুসলিম ১/২১৮)

জান্নাতে আল্লাহর দিদার

আল্লাহর দিদার সময় জান্নাতিদের চেহারা খুশিতে উজ্জ্বল থাকবে:

জান্নাতে জান্নাতিরা এত স্পষ্টভাবে আল্লাহকে দেখবে

রাসূলূল্লাহ সাঃ বললেন: ১৪ তারিখের রাতের চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কোনো সমস্যা হয়?  তারা বললো: না হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, স্বচ্ছ আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের কোনো সমস্যা হয়? তারা বললো: না। তখন তিনি বললেন: তোমরা এভাবেই তোমাদের রবকে দেখতে পারবে।” (মুসলিম)

তোমাদের রবকে দেখতে পাবে

যেমন এ চাঁদকে বিনা বাধায় দেখতে পাচ্ছ।” (মুসলিম)

জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পর

অর্থ: “সুহাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাঃ বলেন জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পর আল্লাহ বলবেন: তোমাদের কি আরো কোনো দাবী আছে? তারা বলবে হে আল্লাহ! তুমি কি আমাদের চেহারাকে আলোকিত করো নি? তুমি কি আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাও নি?

তুমি কি আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও নি? (এর পর আমরা আর কি দাবী করতে পারি!) এরপর হঠাৎ করে আল্লাহ ও জান্নাতিদের মাঝের পর্দা উঠে যাবে, আর তখন জান্নাতিরা তাদের রবকে সরাসরি দেখবে আর তাদের এ দেখা জান্নাতের সমস্ত নিআমত থেকে উত্তম হবে।” (মুসলিম ১/১৮১)

দুনিয়াতে আল্লাহর দিদার সম্ভব নয়

জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি আপনার রবকে দেখেছেন? তিনি উত্তরে বললেন: তিনি তো নূর আমি তা কি করে দেখবো”? (মুসলিম ১/১৭৮)

জান্নাতিদের পায়খানা পেসাবের প্রয়োজন দেখা দিবে না

জান্নাতিদের খানা পিনা ঘাম ও ঢেকুরের মাধ্যমে হজম হয়ে যাবে ৷ জান্নাতিরা নিঃশ্বাস ত্যাগ করার ন্যায় প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর প্রশংসা করবে:

তাহলে তাদের খাবার কোথায় যাবে? তিনি উত্তরে বললেন: ঢেঁকুর ও ঘামের মাধ্যমে তা হজম হবে। জান্নাতিরা এমনভাবে আল্লাহর প্রশংসা ও তাসবীহ পাঠ করবে যেমন তারা শ্বাস গ্রহণ করে। (মুসলিম ২৮৩৫)

জান্নাতিরা ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে না

অর্থ: “জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সালারা বলেছেন, ঘুম মৃত্যুর ভাই, তাই জান্নাতিদের মৃত্যু হবে না।” (আবু নুআইম

সমস্ত জান্নাতিদের উচ্চতা

অর্থ: “আম্মার বিন ইয়াসির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাঃ নামাযে এ দুআ করতেন যে, হে আল্লাহ! তোমার অদৃশ্য জ্ঞান ও সৃষ্টির ওপর তোমার ক্ষমতার ওসীলায় তোমার নিকট দুআ করছি যে, তুমি আমাকে ঐ সময় পর্যন্ত জিবিত রাখ যতোক্ষণ পর্যন্ত জিবিত থাকা আমার জন্য কল্যাণকর হয়।

হে আল্লাহ আমি দৃশ্য ও অদৃশ্যে তোমাকে ভয় করার তাওফিক লাভের জন্য দুআ করছি, রাগ ও সম্ভষ্ট উভয় অবস্থায়ই তোমার জন্য একনিষ্ঠ থাকার তাওফিক কামনা করছি। তোমার নিকট এমন নিআমত কামনা করছি যা কখনো শেষ হবে না।

মৃত্যুর পর আরামদায়ক জীবন কামনা করছি

এমন চক্ষু তৃপ্তি কামনা করছি যা সর্বদা বিদ্যমান থাকবে। তোমার সকল ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকার তাওফিক কামনা করছি। মৃত্যুর পর আরামদায়ক জীবন কামনা করছি। আর তোমার চেহারা দেখার স্বাদ আস্বাদনের তাওফিক কামনা করছি। তোমার দিদার লাভের আকাঙ্খা প্রকাশ করছি।

আমি তোমার আশ্রয় কামনা করছি এমন অপারগতা থেকে যা আমার দ্বীন ও দুনিয়ার জন্য ক্ষতিকর। আর তোমার আশ্রয় কামনা করছি এমন ফেতনা থেকে যা পথভ্রষ্ট করবে। হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে ঈমানের সৌন্দর্যে মণ্ডিত করো। আর আমাদেরকে হিদায়াতের পথের পথিকদের অনুসারী করো।” (নাসায়ী)

জান্নাতিদের গুণাবলী

জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পর আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে:

অর্থ: “আর তাদের অন্তরে যে ঈর্ষা ছিল, আমি তা বের করে নিয়েছি। তাদের নীচ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। আর তারা বলবে, 'সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি এর জন্য আমাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন।

হলো জান্নাত

অবশ্যই আমার রবের রাসূলগণ সত্য নিয়ে এসেছেন এবং তাদেরকে ডাকা হবে যে, ঐ হলো জান্নাত, তোমরা যা আমল করেছো, তার বিনিময়ে তোমাদেরকে এর উত্তরাধিকারী করা হয়েছে” (সূরা আরাফ ৪৩)

সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা

জান্নাতে জান্নাতিদের প্রার্থনা হবে “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা” আর তারা পরস্পর পরস্পরের সাথে সাক্ষাতে” আসসালামু আলাইকুম বলবে। আর প্রত্যেক কথার শেষে” আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন” বলবে

অর্থ: “সেখানে তাদের কথা হবে, 'হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র মহান’ এবং তাদের অভিবাদন হবে, 'সালাম'। আর তাদের শেষ কথা হবে যে, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি সকল সৃষ্টির রব।” (সূরা ইউনুস ১০)

জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশের সময় ফেরেশতারা

জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশের সময় ফেরেশতারা তাদের জন্য বরকত ও নিরাপত্তার জন্য দুআ করবে

তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা ভাল ছিলে। অতএব স্থায়ীভাবে থাকার জন্য এখানে প্রবেশ করো” (সূরা যুমার ৭৩)

অর্থ: “ফেরেশতারা তাদের নিকট আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে, বলবে তোমাদের সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।” (সূরা রাদ ২৩-২৪)

স্বয়ং আল্লাহও জান্নাতিদেরকে সালাম করবে

অর্থ: “করুনাময় পালকর্তার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে 'সালাম'।” (সূরা ইয়াসীন ৫৮)

সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশকারীদের চেহারা ১৪ তারিখের চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল হবে: দ্বিতীয় দলটির চেহারা আকাশের উজ্জ্বল তারকার ন্যায় হবে: জান্নাতে কোনো ব্যক্তি অবিবাহিত থাকবে না প্রত্যেকের কমপক্ষে দু'জন করে স্ত্রী থাকবে:

জান্নাতিদের চেহারা সর্বদা সতেজ হাসি খুশি থাকবে

জান্নাতিরা সর্বদা সুস্থ থাকবে কখনো রোগাক্রান্ত হবে না।

জান্নাতিরা সর্বদা যুবক বয়সী থাকবে কখনো বৃদ্ধ হবে না

জান্নাতিরা সর্বদা জীবিত থাকবে মৃত্যু তাদেরকে কখনো গ্রাস করবে না।

জান্নাতিরা সর্বদা আনন্দের মাঝে থাকবে কখনো চিন্তিত হবে না।

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাঃ বলেছেন: (কিয়ামতের দিন) এক আহ্বানকারী আহ্বান করে বলতে থাকবে, তোমরা সর্বদা সুস্থ থাকবে, কখনো অসুস্থ হবে না। সর্বদা জীবিত থাকবে কখনো মৃত্যু বরণ করবে না। সর্বদা যৌবনকাল নিয়ে থাকবে কখনো বৃদ্ধ হবে না।

এই সেই জান্নাত যার উত্তরসূরি তোমাদেরকে করা হয়েছে

সর্বদা আনন্দে মেতে থাকবে কখনো চিন্তিত হবে না। আর আল্লাহর বাণীর ও এ অর্থই “এই সেই জান্নাত যার উত্তরসূরি তোমাদেরকে করা হয়েছে, ঐ আমলের ওসীলায় যা তোমরা করতেছিলে।” (মুসলিম ৪/২৮৩৭)

অর্থ: আবু হুরাইরা (রাঃ) নবী সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে সে সর্বদা আনন্দে মেতে থাকবে, তাদের পোশাকও পুরাতন হবে না। না যৌবন কখনো চিন্তিত হবে না, শেষ হবে” (মুসলিম ৪/২৮৩৬)

জান্নাতে প্রবেশকারী প্রত্যেক ব্যক্তি ষাট হাত লম্বা হবে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশকারী প্রত্যেক ব্যক্তি আদম (আঃ)-এর ন্যায় ষাট হাত লম্বা হবে, (প্রথমে মানুষ ষাট হাত ছিল) পরবর্তীতে তারা খাট হতে লাগলো শেষে বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছেছে।” (মুসলিম ৪/২৮৪১)

জান্নাতিদের চেহারায় দাড়ি-গোফ থাকবে না:

জান্নাতিদের চোখ অলৌকিক ভাবে লাজুক হবে:

জান্নাতিদের বয়স ৩০-৩৩ বছরের মাঝামাঝি হবে

অর্থ: “মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাঃ বলেছেন, জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশের সময় তাদের চেহারায় কোনো দাড়ি, গোফ থাকবে না। চক্ষুদ্বয় লাজুক হবে। বয়স হবে ৩০-৩৩ এর মাঝামা”(তিরমিযি ৪/২৫৪৫)

জান্নাতিরা যা কামনা করবে তা সাথে সাথেই পূর্ণ হবে:

অর্থ: “আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, মু'মিন ব্যক্তি জান্নাতে যদি সন্তান কামনা করে তাহলে মুহূর্তের মধ্যেই গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব হয়ে যাবে।” (ইবনে মাজা ৪/২৫৬৩)

অর্থ: আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাঃ একদা তাঁর সাহাবীদের সাথে কথা বলতে ছিলেন আর তাঁর পাশে একজন গ্রাম্য লোক বসছিলো, তিনি বললেন: জান্নাতিদের মধ্যে এক ব্যক্তি তার রবের নিকট কৃষি কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে।

জান্নাতি বলবে, কেন সবই আছে

আল্লাহ বলবেন: তুমি যা চাচ্ছ তা কি তোমার নিকট নেই? জান্নাতি বলবে, কেন সবই আছে, কিন্তু কৃষি কাজ আমার পছন্দনীয়, তাই আমি তা করতে চাই। তখন ঐ ব্যক্তি যমীনে বিচ বপন করবে, মুহূর্তের মধ্যেই তার ফল আসবে এবং কাটার উপযুক্ত হয়ে যাবে।  

এখন খুশি হও, তোমার পেট কোনো কিছুতেই ভরবে না। গ্রাম্য লোকটি বললো: আল্লাহর কসম! এ লোকটি অবশ্যই কুরাইশ বা আনসারদের মধ্য থেকে হবে, কেননা তারাই কৃষি কাজ করে, আমরা কখনো কৃষি কাজ করি না। রাসূলুল্লাহ সাঃ একথা শুনে মুচকি হাসলেন।” (বুখারী ৩/২৩৪৮)

বিভিন্ন নবীর উম্মতদেরকে পেশ করা হলো

অর্থ: “ইবনে আব্বাস (রাঃ) নবী সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: আমার সামনে বিভিন্ন নবীর উম্মতদেরকে পেশ করা হলো, কোনো কোনো নবী এমন ছিল যাদের সাথে দশজন লোকও ছিল না। আবার কোনো কোনো নবীর সাথে এক বা দুজন লোক ছিল, আবার কোনো কোনো নবীর সাথে কোনো লোকই ছিল না।

এমতাবস্থায় আমার সামনে এক বিশাল জনসমুদ্র আসল, আমি ভাবলাম তারা আমার উম্মত, কিন্তু আমাকে বলা হলো যে, এ হলো মূসা (আঃ) এবং তাঁর উম্মত। আমাকে বলা হলো আপনি আকাশের কর্ণারের দিকে তাকান, আমি দেখতে পেলাম সেখানেও এক বিশাল জনসমুদ্র।

সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে

অতঃপর আমাকে বলা হলো আপনি আকাশের অন্য কর্ণারের দিকে তাকান, আমি দেখলাম সেখানেও এক বিশাল জনসমুদ্র। তখন আমাকে বলা হলো এরা হলো আপনার উম্মত। যাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে এবং শাস্তি ছাড়াই ভাবে জান্নাতে যাবে।” (মুসলিম ১/২২০)

জান্নাতে প্রবেশকারী আমলসমূহ কঠিন
জান্নাত কঠিন এবং মানুষের মন তিক্তকারী আমল দ্বারা ঢাকা রয়েছে

হযরত জিবরাঈল (আঃ) (আঃ) এসে তা দেখলেন এবং জান্নাত ও জান্নাতিদের জন্য যে নিআমত প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে তা দেখলো, এরপর আল্লাহর নিকট আসলো, এবং বললো তোমার ইয্যতের কসম! যে-ই এর কথা শুনবে সে অবশ্যই তাতে প্রবেশ করবে।

জান্নাতকে কষ্টকর আমলসমূহ দিয়ে ঢেকে দাও

অতঃপর আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে জান্নাতকে কষ্টকর আমলসমূহ দিয়ে ঢেকে দাও। এরপর আল্লাহ হযরত জিবরাঈল (আঃ) (আঃ)-কে দ্বিতীয়বার নির্দেশ দিলেন তুমি আবার জান্নাতে যাও এবং জান্নাতিদের জন্য আমি যে নিআমত প্রস্তুত করে রেখেছি তা দেখে আস। জিবরীল গেল তখন জান্নাত কষ্টকর আমলসমূহ দ্বারা ঢাকা ছিল,

জাহান্নামীদের জন্য আমি যে শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি

তখন সে আল্লাহর নিকট ফিরে এসে বললো: তোমার ইয্যতের কসম! আমার ভয় হচ্ছে যে এতে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। অতঃপর আল্লাহ তাকে নির্দেশ দিলেন যে, এখন জাহান্নামের দিকে যাও এবং জাহান্নামীদের জন্য আমি যে শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি তা দেখে আস যে, কিভাবে তার এক অংশ অপর অংশকে গ্রাস করছে,

জাহান্নামকে মনের কামনা দিয়ে ঢেকে দাও

হযরত জিবরাঈল (আঃ) সবকিছু দেখে ফিরে এসে বললো: তোমার ইযযতের কসম! এমন কোনো লোক হবে না যে তার সম্পর্কে শোনবে অথচ সেখানে সে প্রবেশ করবে। তখন আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, জাহান্নামকে মনের কামনা দিয়ে ঢেকে দাও।

হযরত জিবরাঈল (আঃ) দ্বিতীয় বার গেল এবং সবকিছু দেখে এসে বললো

আল্লাহ হযরত জিবরাঈল (আঃ) কে দ্বিতীয়বার বললেন: তুমি আবার যাও, তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) দ্বিতীয় বার গেল এবং সবকিছু দেখে এসে বললো: তোমার ইয্যতের কসম! আমার ভয় হচ্ছে যে, এখন এখান থেকে কোনো ব্যক্তিই মুক্তি পাবে না, সবাই সেখানে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী ৪/২৫৬০)

অর্থ: “আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: জান্নাত কষ্টকর আমলসমূহ দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়েছে, আর জাহান্নাম মনের কামনা দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়েছে।” (মুসলিম ৪/২৮২২)

জান্নাত পেতে হলে কঠোর সাধনার প্রয়োজন রয়েছে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি ভয় করেছে সে পালিয়েছে, আর যে পালিয়েছে সে লক্ষস্থলে পৌঁছেছে। (তিরমিযী ৪/2450)

নিয়ামতে ভরপুর জান্নাত অন্বেষণকারী পৃথিবীতে কখনো নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারবে না:
পরকালে মর্যাদা পুরস্কৃত হওয়ার আমলসমূহ পার্থিব দিক থেকে তিক্ত

অর্থ: “আবু মালেক আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: পৃথিবীর মিষ্টতা পরকালের তিক্ততা। আর পৃথিবীর তিক্ততা পরকালের মিষ্টতা।” (আহমদ, হাকেম ৩৭/২২৮৯৯)

দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: পৃথিবী মু'মিনের জন্য কারাগারের ন্যায় আর কাফিরের জন্য জান্নাতের ন্যায়।” (মুসলিম ৪/২৯৫৬)

পোস্ট ট্যাগঃ

জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি হবে
পৃথিবীতে ইহুদি সংখ্যা কত
জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি
জাহান্নামে কাদের সংখ্যা বেশি হবে এবং কেন
জাহান্নামে কাদের সংখ্যা বেশি হবে
জান্নাতে মদ
সাদ্দাদের জান্নাত
8 জান্নাতের নাম

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url