ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
সদকা অর্থ দান, আর ফিতর অর্থ রমজানের সমান। রোজার সমান দান। আরবী
শব্দ সদকাতুল ফিতর এর বাংলা
অর্থ হচ্ছে ‘ফিতরার সদকা’। ইসলামী
শরিয়তের পরিভাষায় যে ব্যক্তির উপর
ফিতরা ওয়াজিব তাকে রমজানুল মোবারক
শেষ হওয়ার পর পবিত্র ঈদের
দিন ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব
সর্বোচ্চ দিন হিসেবে, তবে
ঈদের আগেই আদায় করা
উত্তম। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ
মূল্য অথবা সমপরিমাণ খাবার
দান করতে হবে নির্দিষ্ট
সংখ্যক ব্যক্তির মধ্যে। তাকেই সদকাতুল ফিতর বলা হয়।
ফিতরা অর্থ
কি
ফিতরা
অর্থ হলো রোজাদারগণের গরীব দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করাকে বুঝায়। ফিতরা ইসলামী ইবাদতের মধ্যে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ
ইবাদত। যা আমাদের প্রত্যেক
মুসলিম ব্যক্তিকে আদায় করতে হবে।
ফিতরা আদায় অনেক সওয়াবের
একটি কাজ। আগে আপনার
পরিবার থেকে ফিতরা আদায়
করবেন। আজকে এই পর্যন্তই
আল্লাহ হাফেজ।
ফিতরা দান
করার
উদ্দেশ্য
ফিতরা
দান করার মাধ্যমে আমাদের
মাঝে যদি কোনো ব্যক্তির
রোজা রাখাকালীন কোনো ভুল ত্রুটি
হয়ে যায় তার কাফফারা
হিসেবে সদকাতুল ফিতরা আদায় করা হয়ে
থাকে।
ফিতরা কার
উপর
ওয়াজিব
- ফিতরা প্রত্যেক মুসলিম স্বাধীন নর-নারীর উপর ওয়াজিব যাদের নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে।
- নিসাব বলতে যে ব্যক্তির উপর যাকাত ওয়াজিব হয়েছে তাকে।
- এক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদ যদি আপনার না থাকে তাহলে আপনার উপর ফিতরা ওয়াজিব নয়।
- শুধুমাত্র মুসলিম ব্যক্তির উপরই ফিতরা ওয়াজিব।
- স্বাধীন ব্যক্তির উপরই ফিতরা ওয়াজিব।
- ঈদের দিন পর্যন্ত যে বেচে থাকবে শুধুমাত্র তারই উপর ফিতরা ওয়াজিব।
ফিতরা কাকে
দেওয়া
যাবে
- যে ব্যক্তি একদমই নিঃস্ব, খুবই গরীব, অসহায় তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে।
- ঋণেরভারে যে ব্যক্তির সংসার চালানো দায় তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে।
- যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে বা দ্বীনের পথে প্রচার ও প্রসারে লিপ্ত আছে তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে।
- মুসাফির ব্যক্তিকে ফিতরা দেওয়া যাবে।
- যে ব্যক্তি যাকাত গ্রহণ করতে পারবে সে ফিতরাও পেতে পারবে।
ফিতরা কাকে
দেওয়া যাবে না
- যে ব্যক্তি তার নিজের খরচ ও পরিবারের খরচ চালাতে পারে তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
- অর্থ সম্পদওয়ালা ধনী ব্যক্তিকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
- যে ব্যক্তি যাকাত দান করতে পারে তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
- মদ্যপায়ী ব্যক্তিকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
- যেনাকারী ব্যাক্তিকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
ফিতরা কত
টাকা
ফিতরা
বিভিন্নভাবে দেওয়া যায় নগদ অর্থ
বা খাদ্য সামগ্রীর দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়।
যেমনঃ আটা, যব, ছাতু ইত্যাদি।
আটার
ক্ষেত্রে ১ কেজি ৬০০
গ্রাম আটা দিতে হবে
বা তার বর্তমান সমমূল্য
ওজনে যত টাকা হয়
তা দিতে হবে। যার
বর্তমান বাজার মূল্য ৮০ টাকা বা
কম বেশি। এভাবে আপনাকে ফিতরা দিতে হবে।
ফিতরা
কত টাকা তা জানতে
হলে আপনি নিকটস্থ মসজিদের
ইমামের নিকট থেকে জেনে
নিতে পারবেন।
এভাবে
যব, ছাতু বা শরিয়তে
নির্ধারিত পণ্যের মাধ্যমে আপনি আপনার ফিতরার
পরিমান টাকা আদায় করতে
পারবেন।
ফিতরা দেয়ার
নিয়ম
নিচে
দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যে কাউকে আপনি
আপনার ফিতরার টাকা দান করতে
পারবেন।
- খুবই অভাবী ও দরিদ্র ব্যক্তিকে
- ঋণে জর্জরিত ব্যক্তি
- মহান আল্লাহপাকের পথে যারা কাজ করে থাকেন তাকে।
- মুসাফির ব্যক্তিকে
- যাকাত গ্রহণের জন্য যোগ্য ব্যক্তিকে আপনার ফিতরা দিতে পারেন।
ফিতরা কাকে
দেওয়া
যাবে
ফিতরা দেওয়ার জন্য আপনি নিম্নলিখিত
ব্যক্তিদের মধ্যে যেকোনো একজনকে দিতে পারেন:
- দরিদ্র এবং অভাবী ব্যক্তি
- ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি
- আল্লাহর পথে কাজ করে এমন ব্যক্তি
- মুসাফির
- যারা জাকাত গ্রহণের যোগ্য
- মুসলিম অভাবী ব্যক্তি অমুসলিমকে ফিতরা দেওয়া যাবে না মনে রাখবেন।
পোস্ট ট্যাগঃ