আদম হাওয়া জীবনী

 আদম হাওয়া জীবনী

আদম হাওয়া জীবনী
আদম হতে তার সঙ্গীনী সৃষ্টির প্রসঙ্গ

স্রষ্টা সৃষ্টির সূচনার আদিতে প্রত্যেক জিনিসের নমুনা বা ডাইছ উৎপন্ন করেন। বৈজ্ঞানিক পর্যায়ে সৃষ্টির সূচনার ক্ষেত্রে “আদি একক” হিসেবে একটি সংকোচিত বিন্দুর অস্তিত্ব কল্পনা করা হয়। এ হিসেবে একটি মাত্র সংকোচিত বিন্দু থেকে মহাবিশ্বের সমস্ত পদার্থ ও শক্তির উৎপত্তি ঘটে। অতঃপর সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে সৃষ্টি সর্বদাই সম্প্রসারিত হচ্ছে।

বিগ ব্যাং তত্ত্ব

তারা ভেবেও দেখেনি “আদি একক” (Singularity)-এর ক্ষেত্রে একই সাথে ধ্বনাত্মক ও ঋণাত্মক সত্তা উৎপত্তি হওয়া কতটা যুক্তি সঙ্গত। কিন্তু পরম প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিভাবে পুরুষ (+) ও স্ত্রী (-) সত্তার উৎপত্তি ঘটিয়েছেন তার ব্যাখ্যা আল-কোরআনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

উপরোল্লিখিত সূরা নিসার ১নং আয়াতে বলা হয়েছে মানব জাতির সমস্ত সদস্যকে একমাত্র ব্যক্তি (পুরুষ) হতে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তার থেকেই তার সঙ্গীনী (স্ত্রী) সৃষ্টি করেন এবং তাদের মাধ্যমে সকল পুরুষ ও নারীকে সৃষ্টি করে দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন।

জগতের সকল সৃষ্টির মূল উপাদান হলো তথ্যকণা। সৃষ্টির ক্ষেত্রে “আদি একক” হিসেবে যে তথ্য কণার উৎপত্তি ঘটে সেটি হলো Positive Information bit বা ধ্বনাত্মক তথ্য কণা। তারপর এ ধ্বণাত্মক তথ্য কণা থেকে উদ্দেশ্যমুখী সাংগঠনিক বিবর্তন প্রক্রিয়ায় Negative Information bit বা ঋণাত্মক তথ্য কণার উৎপত্তি ঘটে। এ পর্যায়ে পৃথক যৌনাঙ্গ সৃষ্টি হয়নি। এতে পূর্ববর্তী প্রজন্মের বৈশিষ্ট্যগুলি ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী প্রজন্মের বৈশিষ্ট্যগুলি

জিন তত্ত্ব

অতঃপর পৃথিবীর আদি এক ও অভিন্ন প্রাণ সত্তা বা একক জীবকোষের আবির্ভাব ঘটে সাগরের লোনা পানিতে। এ জীবকোষে 'জিন' নামের যে জটিল উপাদান থাকে তার কার্যক্রমের ধারা হলো তথ্য প্রেরণ ও তথ্য গ্রহণ করা। পৃথিবীর এই আদি প্রাণ সত্তা বা একক জীবকোষ (প্রোটোজোয়া) যখন বিভাজিত হয় তখন সেটি ভেঙ্গে দু'ভাগ হয়ে যায়। 

এ ধরনের বিভক্তির সময় Positive Information bit বা ডি.এন.এ (DNA) টেপ ভেঙ্গে দ্বিখণ্ডিত হয়। পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়। এ পরবর্তী প্রজন্মে প্রবেশ করার সময় সামান্য কিছু রূপান্তরিত হয়। এককোষী কিংবা বহুকোষী সকল প্রাণীর বেলায় আদি সেই কোষ বিভাজন পদ্ধতি আজও চালু আছে। এ ধরনের কোষ বিভাজন পদ্ধতি বিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে।

তবে এ পর্যায়েও যৌনতাসম্পন্ন পার্থক্যসূচক অঙ্গ সৃষ্টি হয়নি। বিবর্তনের বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে এক কোষী জীব থেকে যখন বহুকোষী জীবের উদ্ভব ঘটে তখন এর মধ্যে যৌনতা সম্পন্ন প্রজননধর্মী অঙ্গের প্রথম সূত্রপাত ঘটে, ‘স্পঞ্জ' এর ক্ষেত্রে। কিন্তু দৈহিক গঠন দেখে এদের পার্থক্য করা খুব কঠিন।

অভিন্ন প্রাণ সত্তার আবির্ভাব ঘটে রূহানী জগতে

সৃষ্টির আদিতে পরম প্রতিপালকের পরম ইচ্ছায় এক অভিন্ন প্রাণ সত্তার আবির্ভাব ঘটে রূহানী জগতে। তারপর দুনিয়ার ক্ষেত্রে এককোষী জীবের উদ্ভব ঘটে। এদের থেকেই তাদের জোড়া সৃষ্টি হয়। স্রষ্টার প্রত্যক্ষ ইচ্ছায় যার উদ্ভব ঘটে তার নাম Positive (প্রত্যক্ষ) বা ধ্বনাত্মক সত্তা। 

আবার এ সত্তার ইচ্ছাতে তার অস্তিত্ব থেকে যে সত্তার উদ্ভব ঘটে তার নাম Negative (পরোক্ষ) বা ঋণাত্মক সত্তা। তারপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সৃষ্টির যৌন মিলনে ও জেনেটিক রূপান্তরের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে বিবর্তনের ফলে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত চরিত্র, দৈহিক গঠন ইত্যাদির ভিন্নতার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী নিয়ে আস্তে আস্তে দুনিয়া ভরে যায়।

আদম থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি হয়েছে

এর মধ্যে মানব প্রজাতির উন্নতর মডেল আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া ও তাঁদের বংশধরও বিদ্যমান। তাই বলা যায় মানুষসহ সকল জীবই যেমন একটি মাত্র জীব বা একক প্রাণ থেকে উদ্ভব হয়েছে তেমনি আদম থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি হয়েছে। তারপর এ দু'জনের মাধ্যমে বংশগতির ধারা অব্যাহত থাকায় পৃথিবী আজ মানব প্রজাতির পদভারে কোলাহলমুখর।

দ্বিতীয় পর্যায়ে সঙ্গীনী সৃষ্টি হয় কোষ বিভাজনের মাধ্যমে। দুনিয়াতে আদমের সঙ্গীনী সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি শুরু হয় একমাত্র জীবন্ত জীব কোষ থেকে। কারণ পানি হচ্ছে জীবন্ত জীবকোষ গঠনের প্রধান উপাদান। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো একটা বহুকোষী পূর্ণাঙ্গ মানুষ থেকে কখনো বিভাজিত বা দ্বিখণ্ডিত হয়ে তার সঙ্গীনীর উদ্ভব ঘটেনি।

ভ্রূণ মূল কি

এ ধরনের কোন ইতিহাস নেই বা এটা কোন বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াও নয়। তবে মাতৃগর্ভে একটি শুক্রকীট (একক প্রাণ সত্তা) একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে সেটি বিভাজিত হয়ে দু'টি ভ্রূণে বিভক্ত হয়ে দু'টি মানুষে পরিণত হতে পারে।

এটি সমাজিক ভাবে ও বৈজ্ঞানিক ভাবে স্বীকৃত। কারণ একজন মায়ের গর্ভ থেকে দু'টি সন্তান হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই চূড়ান্ত পর্যায়ে আদমের সঙ্গীনি সৃষ্টি হওয়ার প্রক্রিয়াটি অনেকটা এমনই বুঝা যায়। অতঃপর এ দু'জনের মাধ্যমেই স্রষ্টা পৃথিবীতে বিভিন্ন সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছেন। নিম্নে হাদীসে কুদসীতে এ সম্পর্কে ইঙ্গিত রয়েছে।

“আল্লাহ তা'আলা বলেন, হে মানবকুল! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে একজন নর ও একজন নারী হতে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তোমাদেরকে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোত্রে ভাগ করেছি, যেন তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার।” (আল-হাদীস)

শয়তানের উৎপত্তি ঘটে

আত্মিক পর্যায়ে আদমের ইচ্ছার ব্যগ্রতা থেকে তার অস্তিত্বের অংশ দিয়ে তার সঙ্গীনী সৃষ্টি করা হয়। পদার্থের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ায় যখন নিউটন দিয়ে প্রোটনকে আঘাত করা হয় তখন প্রোটন থেকে চেইন বিক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে নতুনের আবির্ভাব ঘটতে থাকে। এ সময় জগতের ক্ষতিকারক পারমাণবিক শক্তিও বের হয়। এ শক্তিকে পরিকল্পিত ভাবে ভাল কাজেও লাগানো যায়।

এরা জান্নাতবাসী হবে

এখানে কৃষ্ণকায়া বিকীর্ণ শক্তি বা কৃষ্ণকায়া সন্তান এর সাথে “বর্জ্য তথ্য কণার” সম্পর্ক রয়েছে। যা নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ার সময় পারমাণবিক শক্তি বা বর্জ্যশক্তি হিসেবে বের হয়। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে এক ব্যক্তি হতে তার সঙ্গীনি পয়দা হওয়া অবিশস্বাস্য কিছু নয়। 

এ যুগের বিজ্ঞান কোরআনের শাশ্বত বাণীর সত্যতা প্রমাণে সচেষ্ট। তাই এখন আর কেউ আদম থেকে যে তার সঙ্গীনী পয়দা হয়েছে, এ কথা অবিশ্বাস করে না।

মানুষ মাটির তৈরি কুরআনের আয়াত

তবে আদমকে বিভিন্ন দেশের মাটি দিয়ে মূর্তির মতো তৈরী করে রেখে দেওয়ার পর তার অস্তিত্ব থেকে পূর্ণাঙ্গ একটি নারী (হাওয়া) বের হয়ে গেল, এ ধরনের যুক্তির কতটা নির্ভরতা আছে তা ভেবে দেখার বিষয়৷ 

আমার যুক্তিতে পৃথিবীর ক্ষেত্রে আদম থেকে তার সঙ্গীনী পয়দা হওয়ার দৃষ্টান্ত হলো-আল্লাহ তা'আলা নির্বাচিত মৃত্তিকা দিয়ে শুক্রবিন্দু তৈরী করে সেটি রাখলেন এক সুরক্ষিত স্থানে, সেখানে ঐ শুক্রকীট বা একক জীব কোষ মাতার ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে তার থেকে দু'টি মানুষের (বিভাজিত হয়ে) ভ্রুণ তৈরী হয়।

পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবীর উদ্ভব

এ ভ্রুণ দু'টি থেকে পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবীর উদ্ভব ঘটে। এখানে মা হলো বন্য প্রজাতির মানুষের (হোমো স্যাপিয়ানস গোত্রের নারী) প্রজন্মের নারী। এ ক্ষেত্রে শুক্রকীট কোন বন্য প্রজাতির পুরুষ মানুষের দেহে উৎপন্ন হয়নি। 

এ শুক্রকীট পরম স্রষ্টার বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মাটির সার অংশের মাধ্যমেই উৎপন্ন হয়। এভাবে মাতৃগর্ভে একটা শুক্রকীট দিয়ে একটা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে দু'টি ভ্রুণে বিভাজিত হওয়া বিজ্ঞান সম্মত।

মূলত এ প্রক্রিয়ায় একের থেকে তার সাথী বা সঙ্গীনী সৃষ্টি হওয়াই বৈধ ও যুক্তিসঙ্গত পথ। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ একটি পুরুষ মানুষ বিভাজিত হয়ে তার অস্তিত্ব থেকে (ভিন্ন কাঠামোর স্ত্রী অঙ্গসহ) অন্য আর একটি মানুষের উদ্ভব হওয়া সম্ভব বলে ধরে নেয়া যায় না। 

অপরদিকে আদমের বাম বুকের পাজরের বাঁকা হাড় দিয়ে তার সঙ্গীনী পয়দা করা হয়েছিল, এটাও বিশ্বাস যোগ্য নয়। এ কথা কোরআন বা সহীহ হাদীসের কথা নয়।

এটি বাইবেলের উক্তি। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে এর দার্শনিক ব্যাখ্যা হলো আদমের ইচ্ছার ব্যগ্রতা থেকেই তার অস্তিত্বের অংশ দিয়ে তার সঙ্গীনী পয়দা করা হয়। এক্ষেত্রে মানুষের ইচ্ছার ব্যগ্রতা উদয় হয় বুকের বাম অংশের বাঁকা পাঁজর বেষ্টিত হৃৎপিণ্ডের গুপ্ত স্থান থেকে। 

এখানেই রূহ বা প্রাণের অবস্থান। সে কারণেই হয়ত আদমের সঙ্গীনী সৃষ্টিতে বাঁকা পাঁজরের কথা এসেছে। অথবা ভ্রূণ বিভাজনের জন্যও এটা বলা হয়ে থাকতে পারে। বাইবেলের সে বাণীটি নিম্নে তুলে ধরা হল।

বাইবেলের বৈজ্ঞানিক ভুল

“আর সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন, মানুষের একাকী থাকা ভাল নয়। আমি তাহার জন্য তাহার অনুরূপ সহকারিণী নির্মাণ করি। আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মৃত্তিকা হইতে বন্য পশু ও আকাশের সকল পক্ষী নির্মাণ করিলেন, পরে আদম তাহাদের কি কি নাম রাখিবেন, তাহা জানিতে সে সকলকে তাহার নিকট আনিলেন, তাহাতে আদম যে সজীব প্রাণীর নাম রাখিলেন, তাহার সে নাম হইল।

আদম যাবতীয় গ্রাম্য পশুর ও খেচর পক্ষীর ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখিলেন, কিন্তু মানুষের জন্য তাঁহার সহকারীনি পাওয়া গেলনা। পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে ঘোর নিদ্রায় মগ্ন করিলে তিনি নিদ্রিত হইলেন, আর তিনি তাহার একখানা পঞ্জর লইয়া মাংস দ্বারা সেই স্থান পুরাইলেন। 

সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম হইতে গৃহীত সেই পঞ্জরে এক স্ত্রী নির্মাণ করিলেন ও তাহাকে আদমের নিকট আনিলেন। তখন আদম কহিলেন;এবার (হইয়াছে); ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস, ইহার নাম নারী হইবে, কেননা ইনি নর হইতে গৃহীত হইয়াছেন। 

এই কারণে মনুষ্য আপন পিতামাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে। ঐ সময়ে আদম ও তাঁহার স্ত্রী উলঙ্গ থাকিতেন; আর তাহাদের লজ্জাবোধ ছিলনা।” (বাইবেল দ্বিতীয় অধ্যায়, বাণী ১৮ থেকে ২৫)

বাইবেলের বাণী

আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি জগৎ সৃষ্টির সূচনাও করেছেন এক ও অদ্বিতীয় প্রাণ সত্তা থেকেই। তাই সৃষ্টির প্রতিটি অণু পরমাণু পর্যন্ত একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। একক প্রাণ সত্তার (পুরুষ) ইচ্ছার ব্যগ্রতা থেকে তার অস্তিত্বের অংশ দিয়ে যদি তার সঙ্গীনী সৃষ্টি না করা হতো তাহলে পুরুষ কখনো স্ত্রী সঙ্গীনীর দিকে ফিরে তাকাত না। এমন কি তারা একে অন্যের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারতো না।

বলা হয় আদম (আ) কে সৃষ্টি করার পর তিনি একাকিত্ববোধ করছিলেন। তাঁর মাঝে ছিল সঙ্গীনী পাওয়ার ব্যগ্রতা। ছিল সাথী বিহীন জীবনের অতৃপ্তি ও ক্ষুধা। তার সাথে ছিল কথোপকথনের বা বৈধ প্রেমালাপের গভীর আকুতি। 

আদমের (Positive Information bit) ইচ্ছার ব্যগ্রতা নিমিষেই স্রষ্টার কাছে পৌছে যায় তখন স্রষ্টার নির্দেশে তার অস্তিত্বের অংশ থেকেই তার সঙ্গীনী পয়দা হয়। আত্মিক পর্যায়ে “ধ্বনাত্মক তথ্য কণাতে ছিল তথ্য গ্রহণ ও প্রেরণ করার মতো গুণ। তার পাশাপাশি ছিল অভাববোধ। এ থেকেই তার সঙ্গীনী পাওয়ার অভাব বোধ বা আকাংখা জাগ্রত হয়। তাই আদম (আ) সঙ্গীনী পাওয়াতে উল্লসিত হন।

মাইটোসিস

মহাবিশ্বের বিবর্তন প্রক্রিয়াতে তিনটি পর্যায়ে একক প্রাণ সত্তা থেকে তার সঙ্গীনীর উদ্ভব ঘটে। প্রথম ঘটে আত্মিক পর্যায়ে। সেটা ছিল নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ার মতো দ্বিখণ্ডিত হওয়ার প্রক্রিয়া তারপর ঘটে কোষ বিভাজন পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে একটি জীবকোষ যখন দ্বিখণ্ডিত হয় তখন নিউক্লিয়াসের ৪৬টি ক্লোমোজোমই সমান ভাগে বিভক্ত হয়।

এ প্রক্রিয়াকে বলে মাইটোসিস (Mitosis)। তারপর চূড়ান্ত পর্যায়ে আবার একক প্ৰাণ সত্তা (শুক্রকীট) একটি ডিম্বানুকে নিসিক্ত করে। মিউসিস (Meosis) প্রক্রিয়ায় জননযন্ত্রে দু'টি ভ্রূণে রূপান্তরিত হয়ে পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী হিসেবে আবির্ভাব হয়। তবে পৃথিবীতে আজকের ন্যায় আধুনিক মানুষের জন্ম হতে অনেক পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিবর্তন ও রূপান্তর কাজ করেছে। 

এ রূপান্তর প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়েছে জেনেটিক কোড এর নিয়মে। যখনি নব প্রজাতির মানুষ আগমনের পথ সুগম হয়েছে তখনি পুরাতন প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটেছে। এ ধরনের রূপান্তর প্রক্রিয়া ঘটেছে মাতৃগর্ভে মানব ভ্রুণের ক্ষেত্রে। কোন কোন ক্ষেত্রে জেনেটিক রূপান্তর ও বিলুপ্তির কাজ পাশাপাশি ঘটেছে।

উপসংহার

উপসংহারে বলতে চাই আমার এ সব বক্তব্য পড়ে অনেকের মনে বিতর্ক ও নতুন নতুন প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমি এ বইয়েই বিতর্কের অবসান ও সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা রেখেছি। আশা করি এ থেকে চিন্তাশীল মানুষের মনের ক্লান্তি দূর হতে পারে। আল্লাহই সকল বিষয়ে ভাল জানেন।

সংগৃহীতঃ আদমের আদি উৎস
আল মেহেদী

পোস্ট ট্যাগঃ

আদম হাওয়া জীবনী
আদম ও হাওয়ার কাহিনী
আদম হাওয়ার জীবনী
আদম ও হাওয়ার জীবনী
আদম ও হাওয়ার জীবন কাহিনী
আদম হাওয়ার জীবন কাহিনী
মা হাওয়া বাবা আদম এর জীবনী
আদম হাওয়া কাহিনী

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url