আদম আঃ এর কবর কোথায়

 আদম আঃ এর কবর কোথায়

আদম আঃ এর কবর কোথায়

১. ভারতের সেই পাহাড়ে যেখানে আদম (আঃ) কে নামিয়ে দেওয়া হয়

২. মক্কার জাবালে আবু কুবাইস নামক জায়গায়।

৩. পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস নামক জায়গায় (তবে এ জায়গার বিষয়ে অনেক মতভেদ আছে ঐতিহাসিকদের মতে)।

আদম আঃ এর সৃষ্টি সম্পর্কে প্রাচীন কালের প্রচলিত ধারণা

যুগে যুগে মানুষ ‘মানুষের আদি উৎস” সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করেছে ৷ ফলে কখনো মানুষ দ্বারস্ত হয়েছে ধর্মগ্রন্থ বাইবেলের (ইঞ্জিল) দুয়ারে। আবার কখনো তাওরাত ও যবুরসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের কাছে। কিন্তু এ সব ধর্মগ্রন্থের বর্ণনায় যখনি মনে সংকট উদয় হয়েছে তখনি ফিরে গেছে দৰ্শন ও বিজ্ঞানের দিকে। 

তাই ধর্মগ্রন্থের আশ্রয়ে যেমন সৃষ্টি হয়েছে পৌরাণিক কাহিনী। তেমনি দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তৈরী হয়েছে মনগড়া মতবাদ ৷ ফলে এসব মতবাদ বা বিভ্রান্তিকর কাহিনী পাঠক মহলের কাছে তুলে ধরে তার পর্যালোচনার গুরুত্ব অনুধাবন করছি বিধায় নিম্নে তা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো।

পবিত্র বাইবেল পুরাতন ও নতুন নিয়ম

“আর সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন, মানুষ্যের একাকী থাকা ভাল নয়। আমি তাহার জন্য অনুরূপ সহকারিনী নির্মাণ করি। আর সদা প্রভু ঈশ্বর মৃত্তিকা হইতে সকল বন্য পশু ও আকাশের সকল পক্ষী নির্মাণ করিলেন। পরে আদম তাহাদের কি নাম রাখিলেন। 

তাহা জানিতে সে সকলকে তাঁহার নিকট আনিলেন, তাহাতে আদম যে সজীব প্রাণীর যেই নাম রাখিলেন, তাহার সে নাম হইল। আদম যাবতীয় গ্রাম্য পশুর ও খেচর পক্ষীর ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখিলেন। কিন্তু মনুষ্যের জন্য তাহার সহকারিণী পাওয়া গেল না।

পরে সদা প্রভু ঈশ্বর আদমকে ঘোর নিদ্রায় মগ্ন করিলে, তিনি নিদ্রিত হইলেন । আর তিনি তাহার একখানা পঞ্জর লইয়া মাংস দ্বারা সে স্থান পুরাইলেন। সদা প্রভু ঈশ্বর আদম হইতে গৃহীত সেই পঞ্জরে এক

স্ত্রী নির্মাণ করিলেন ও তাহাকে আদমের নিকট আনিলেন। তখন আদম কহিলেন, এবার (হইয়াছে) ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস ইহার নাম নারী হইবে। কেননা ইনি নর হইতে গৃহীত হইয়াছেন। এই কারণে মনুষ্য আপন পিতা-মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে। 

ঐ সময়ে আদম ও তাহার স্ত্রী উভয়ে উলঙ্গ থাকিতেন। আর তাহাদের লজ্জাবোধ ছিল না।” (পুরাতন বাইবেল, পুরাতন (তাওরাত জবুর) ও নতুন নিয়ম (ইঞ্জিল) দ্বিতীয় অধ্যায়, বাণী ১৮-২৫)

বাইবেলের পুরাতন নিয়ম হলো তাওরাত ও জবুর এবং নতুন নিয়ম হলো ইঞ্জিল শরীফ। বিভিন্ন সময়ে এগুলোর সংস্করণ হয়েছে। এর ফলে নতুন সংস্করণের রচয়িতাগণ নিজেদের কিছু মনগড়া পৌরাণিক কাহিনী এতে জুড়ে দিয়েছেন। 

কারণ কঠোরভাবে সংরক্ষণ ও সংস্করণের অভাবে এগুলোতে যখনি প্রচলিত ধারণা ঢুকে গেছে তখনি গীর্জার পাদ্রীগণ নতুন সংস্করণ বের করেছেন। এ সময় তারা নিজেদের জানা কিছু তথ্য এবং লোক মুখে শ্রুতি কাহিনী পরিমার্জিত করে নিয়ে নতুন সংকলন বের করেছেন। এর ফলে বাইবেলের অনেক তথ্যই বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক।

আদম আঃ এর সৃষ্টি কিভাবে

আল-কোরআনে মানুষকে পানি থেকে সৃষ্টির কথা বলা আছে। আবার মাটির কথাও বলা আছে। এ থেকে বিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিন্তু বাইবেলে শুধু মৃত্তিকার কথা বলা আছে। পানির কোন উল্লেখ নেই। তাছাড়া আদমের বুকের পাজরের অস্থির দ্বারা তার স্ত্রীকে সৃষ্টির কথা বলা আছে, যা আল-কোরআনে কোথাও নেই। আবার এ তথ্যের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

আদি এককোষী জীবকোষ বিভাজনের মাধ্যমে নারী-পুরুষের ন্যায় দু'টি শাখায় বিভক্ত হয়ে বিবর্তনের মাধ্যমে আদম ও হাওয়ার আবির্ভাব হয়েছে। এটা হলো জড়দেহ গঠনের প্রক্রিয়ার কথা। আবার আত্মিক পর্যায়েও আত্মিক বিভাজন সংগঠিত হয়ে আদম থেকে তার স্ত্রীর (সহকারিণী) আত্মা পয়দা হয়। কারণ মানুষের রয়েছে আত্মিক ও দৈহিক পরিচয়। এক্ষেত্রে আত্মাই মূল সত্তা।

আল-কোরআন এবং আল-হাদীসের সংরক্ষণ নীতিমালা খুব কঠোর। এক্ষেত্রে একটা দাড়ি, কমা জুড়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বা তফসিরের ক্ষেত্রে অনেকেই প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী তাদের

লেখা ধর্মীয় গ্রন্থ বা তফসির গ্রন্থে “কিতাবে উল্লেখ” আছে বলে জুড়ে দিয়েছেন। কিন্তু সেটি কোন কিতাবে উল্লেখ আছে, তার কোন বিবরণ দেননি। কিন্তু ক্রমে ক্রমে সেসব তথ্য আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে। তার মধ্যে আদম, হাওয়া ও শয়তানের আবির্ভাব সম্পর্কে রয়েছে ব্যাপক রূপক ব্যাখ্যা। যা মুসলমান হিসেবে আমরাও ধর্মের কথা বলে বিশ্বাস করছি। যেমন আদমের বুকের পাজরের অস্থি থেকে হাওয়ার সৃষ্টি। একথা আল-কোরআনে বা হাদীসে কোথাও উল্লেখ নেই।

অপর দিকে আদমের জড় কাঠামো তৈরীর পৌরাণিক রূপক ব্যাখ্যাটিকে ধর্মের কথা বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব তথ্য সম্বলিত একটা গ্রন্থের নাম “আদম ও শয়তান”। আদমের জড়দেহ সৃষ্টির সম্পর্কে সে গ্রন্থের কিছু কথা সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হলো।

আল্লাহ পাক যখন আদমকে সৃষ্টি করার এরাদা করলেন তখন জমীনের প্রতি আল্লাহ খবর পাঠালেন, হে জমীন, আমি তোমার ধূলা দ্বারা ইনসান পয়দা করতে চাই। কিন্তু আমার শরীরের কিছু টুকরা দোজখে জ্বলবে, ইহা শুনে আমি দুঃখিত হয়েছি-এই বলে জমীন এত কাঁদতে লাগল যে, ইহাতে নদী প্রবাহিত হল। কথিত আছে যে, জমীন যদি না কাঁদত তবে মানুষ কেউ কারোও দুঃখে কাঁদত না ৷”

তারপর আল্লাহ তাহার নিকটবর্তী ফিরিশতা জিব্রাইলকে হুকুম করলেন। হে জিব্রাইল! তুমি আমার হুকুম তামিল কর। এখনই জমীনে গিয়া এক মুষ্টি মাটি আন। এতে জমীন জার জার হয়ে রোদন করতে লাগল। এতে জিব্রাইল মাটি ফেলে দিয়ে চলে আসলেন। অতঃপর আজরাইল বলিলেন হে জমীন! তোমার কান্নাকাটি বেকার। আমি তোমার কোন ওজর আপত্তি শুনিব না। 

আমি আল্লাহর হুকুম তামিল করতে এসেছি। আজরাইলের এহেন কঠিন উক্তি শুনে জমীন কাঁদতে লাগল। ওদিকে আজরাইল বিসমিল্লাহ বলে তাঁর কঠিন মুষ্টিতে জমীনের সকল অংগ থেকে মাটি তুলে নিলেন।”

জমীনের মিশ্রিত মাটি খোদার দরবারে পেশ করা হল। তারপর আল্লাহ পাক সেই মাটিকে আরব দেশে ফেলে দিতে আজরাইলকে হুকুম দিলেন। আল্লাহ উহার উপর এক খন্ড মেঘ বর্ষণ করলেন। উহার উপর চল্লিশ বৎসর সেখানে বর্ষা পতিত হল। উহার পরে রাহিক এবং সালসাবীল নামক নহরের পানি দ্বারা সত্তর হাজার ফিরিশতা উহাকে ধৌত করলেন। তৎপর আল্লাহ পাক নিজের কুদরতে আদমের নকশা তৈরী করলেন। আল্লাহর কুদরতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সব তৈরী হল।

“অতঃপর আল্লাহ সূর্যকে হুকুম করলেন, আদমের পুতুলকে শুকাতে। সূর্য উহাতে চল্লিশ বৎসর ধরে তাপ দিল। এই পুতুলের দৈর্ঘ্য ষাট গজ এবং প্রস্থ্য সাত গজ ছিল।”

“কেতাবে বর্ণিত আছে, আদম আঃ এর দেহ আরবের মক্কা এবং তায়েফের মধ্যে ওয়াদীয়ে মোকাম অর্থাৎ তায়েফের ময়দানে তৈরী করা হয়েছে।” (আদম ও শয়তান বইয়ের ২৩, ২৫, ২৬, ২৭) পৃষ্ঠার অংশ বিশেষ আদমের জড়দেহ গঠন সম্পর্কে আদম ও শয়তান বইয়ের লেখক যে কাহিনী তুলে ধরেছেন, তা রূপক এবং পৌরাণিক কাহিনীই বলে মনে হয় ৷

কারণ আল-কোরআনের কোথাও আদমকে এভাবে তৈরী করার কোন ইঙ্গিত নেই। এমন কি কোন সহীহ হাদীস তালাশ করে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মে যেমন ঢুকেছে মনগড়া রূপক কাহিনী (প্রাচীনকালের প্রচলিত ধারণা) তেমনি আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসে ঢুকে যাচ্ছে ধর্মের নামে মনগড়া তথ্য। যা কোরআন ও হাদীসের কোথাও উল্লেখ নেই। 

এক্ষেত্রে কোরআন ও হাদীস চিরদিন নির্ভুল অবস্থায় আছে এবং থাকবে। ধর্মীয় গ্রন্থের নাম ধরে কিছু লেখকের উদ্ভট চিন্তা সুকৌশলে আমাদের বিশ্বাসে ঢুকে পড়ছে। যা কুসংস্কার, বেদআত, ও ঈমানের পরিপন্থী।

আল-কোরআনের সূরা আলে ইমরানের ৫৯ আয়াতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন।

“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের অনুরূপ। তিনি তাকে মৃত্তিকা ' দ্বারা সৃষ্টি করলেন। তৎপর বললেন, ‘হও’ ফলতঃ তাতেই হয়ে গেল।”

বিবি মরিয়মের গর্ভে ঈসা (আ) কোন পুরুষ মানুষের সংস্পর্শ ছাড়াই পয়দা হয়েছিলেন। এক্ষেত্রে শুক্রকীট মৃত্তিকার সারভাগ দিয়ে আল্লাহর ‘হও’ নির্দেশেই সৃষ্টি হয়েছিল। তারপর বিশেষ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শুক্রকীট বিবি মরিয়মের ডিম্বানুকে নিষিক্ত করলে তা থেকে সন্তান পয়দা হয়। 

এ প্রক্রিয়া যে আদম আঃ এর বেলায়ও প্রযোজ্য ছিল তার ইঙ্গিত উপরের আয়াত থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু উদ্ভট চিন্তার লেখকগণ কোরআন হাদীসের সাথে সঙ্গতি না রেখে যা লিখেছেন, এর দ্বারা বিজ্ঞানের সাথে যেমন সৃষ্টি করেছেন বিবাদ-কলহ। তেমনি ধর্মকে করেছেন কলুষিত। অথচ কোরআন হাদীসের তথ্য বিজ্ঞানের সাথে (বিজ্ঞানের তথ্য নির্ভুল হলে) কখনও সাংঘর্ষিক হবে না।,,

আল্লাহ পাক কোন কিছু পয়দা করার সময় শুধু বলেন, 'হও' তাতেই তা হয়ে যায়, এ কথা একশত ভাগ সত্য। এরপরও বলতে হয় আল্লাহ কোন কাজই প্রকৃতির নিয়মের বাইরে ঘটান না। যদি কখনও কোন বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চান, তখন এর জন্য একটা বিশেষ ব্যবস্থার আঞ্জাম করেন। তবে ঐ বিশেষ ব্যবস্থাটিও অবৈজ্ঞানিক হয় না। 

যেমন পিতা ছাড়া সন্তান জন্ম হওয়া প্রজনন রীতিতে অসম্ভব মনে হলেও বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তা অবৈজ্ঞানিক নয়। আজকাল জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং ও মানব ক্লোনিং সে ধরনের ব্যবস্থাপনারই একটা কৌশল।

আদম আঃ এর মা

আদম (আ) কে পৃথিবীতে পাঠানোর ক্ষেত্রে স্রষ্টার যে পরিকল্পনা তা ঈসা (আ)-এর জন্ম পদ্ধতির অনুরূপ ছিল। সেজন্য আদম আঃ এর ও মা ছিল। কিন্তু তার কোন পিতা ছিল না।

তবে আদম আঃ এর মা ছিল পশু শ্রেণীর মানব প্রজাতির মাতা। মৃত্তিকার সারভাগ থেকে আল্লাহর 'হও' নির্দেশে উৎপন্ন শুক্রকীট পশু শ্রেণীর বন্য মানুষের কোন মাতার ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে, তা ঐ মাতৃথলিতেই বিভাজিত হয়ে আদম ও হাওয়ার জড়দেহ গঠিত হয়। 

এখানে ‘একক জীব কোষ' এর মাধ্যমে ডিম্বাণুটি নিষিক্ত হলে সেটি বর্তমান প্রজনন প্রক্রিয়াতে বিভাজিত হয়ে একই মাতৃগর্ভ থেকে পরস্পরের সহধর্মীনি নর-নারী হিসেবে জন্ম হয়। সেই জড়দেহতে রূহ বা আত্মা প্রোথিত হয় আল্লাহর নির্দেশেই।

আমরা যদি নিম্নে উল্লেখিত আয়াতের সাথে উপরের আয়াতটি মিলিয়ে দেখি তাহলে এ ধরনের তথ্যের সন্ধান পাব আশা করি।

“সে বলেছিল (মরিয়ম), হে আমার প্রতিপালক, কিভাবে আমার পুত্র হবে? কোন মানুষ (পুরুষ) তো আমাকে স্পর্শ করে নাই। তিনি বললেন এভাবেই, আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। যখন তিনি কোন কার্যের মনস্থ করেন, তখন তিনি ‘হও' ব্যতীত বলেন না, ফলতঃ তাতেই হয়ে যায়।” (সূরা আলে ইমরান: ৪৭)

ঈসা (আ) জন্ম 

ঈসা (আ) জন্ম দৃষ্টান্ত যেহেতু আদমের অনুরূপ। তাই আমাদেরকে আদম আঃ এর জন্ম ঈসার অনুরূপ হয়েছিল- সে কথাই ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মাটি একত্র করে আদমের মূর্তি বানিয়ে তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেয়া ঈসার দৃষ্টান্তের অনুরূপ হয় না। ফলে এ ধরনের বিশ্বাস ধর্মের নামে চালিয়ে দেয়া কুসংস্কার ও বেদআত।

হাদীসে কুদসীতে উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ নিজ কুদরতি হাতে আদমকে পয়দা করেছেন। কিন্তু কোথাও ফিরিশতাগণ কর্তৃক বিভিন্ন দেশের মাটি নিয়ে আদমের মূর্তি তৈরীর ব্যাখ্যা কোন সহীহ হাদীস গ্রন্থে পাওয়া যায়নি। আত্মা এবং দেহ উভয়টি নিয়েই আদমের পরিচয়। আত্মা সৃষ্টি হয়েছে আত্মিক জগতে আর দেহ জড়জগতের তৈরী। মূলত আল্লাহ আদম সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি স্বীয় কুদরতি দৃষ্টির মাধ্যমেই সম্পন্ন করেছেন। নিম্নের হাদীসে কুদসীর ব্যাখ্যার মাধ্যমে তাই বুঝা যায়-

নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা তিনটি বস্তু ব্যতীত অন্য কিছু সরাসরি নিজ হাতে সৃষ্টি করেন নাই। তিনি যাবতীয় বস্তুকে বলেছেন ‘হও’ তাতেই উহা হয়ে যায়। আল্লাহ যখন আদম ও ফিরদাউসকে স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন এবং উহাকে (ফেরদাউসকে) বলেছেন, আমার ইযযত ও মর্যাদার শপথ তোমার মধ্যে কোন কৃপণ আমার সান্নিধ্যে বাস করতে পারবে না। আর কোন নির্লজ্জ ব্যক্তি তোমার সুগন্ধ পাবে না।” (দায়লামী ইহা আলী (রা.)-স্ব সূত্রে সংগ্রহ করেছেন।)

আদম এবং হাওয়া পরস্পর পরস্পরের সঙ্গীনি। আদম থেকেই হাওয়াকে সৃষ্টি করা হয়েছে। দুনিয়ায় জড় কাঠামো তৈরীর ক্ষেত্রে আদম এবং হাওয়ার প্রসঙ্গ একই সূত্রে গাঁথা। তাই পৃথিবীতে আদমের জড়দেহ যেমন পশু শ্রেণীর বন্য ও বর্বর মানুষের মাতৃগর্ভে সৃষ্টি হয়েছে তেমনি হাওয়ার জড়দেহও অনুরূপ মাতৃগর্ভে সৃষ্টি হয়েছে। 

এক্ষেত্রে পানির আদি এককোষী প্রাণী বিবর্তনের মাধ্যমে পশু শ্রেণীর মানুষে রূপান্তরিত হয়। তাই আদমের প্রজাতিতে পশু শ্রেণীর মানুষের গন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। তাদেরকে নির্বাচিত মৃত্তিকার দ্বারা সৃষ্টি করে (শুক্রকীট) তা কোন এক মাতার সুরক্ষিত স্থানে (জরায়ুতে) শুক্র বিন্দু রূপেই সংস্থাপিত করে জন্ম দিয়েছেন। যেহেতু আদমের অস্তিত্ব থেকেই হাওয়াকে পয়দা করা হয়েছে, তাই বলা যায় তাদের উভয়ের জন্ম একই মাতৃগর্ভে, একই সময়ে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

আল্লাহ বলেন

“(হে মানুষ, তোমরা সৃষ্টি প্রক্রিয়াটা লক্ষ্য করো), আমি মানুষকে মাটির মূল উপাদান থেকে পয়দা করেছি, অতঃপর তাকে আমি (শুক্রকীটের আকারে একটি সংরক্ষিত জায়গায় (সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্যে) রেখে দিয়েছি। এরপর এই শুক্রবিন্দুকে আমি এক ফোটা জমাট রক্তে পরিণত করি, অতঃপর এই জমাট রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করি, (কিছুদিন পর) এই পিণ্ডকে অস্তি পাজরে পরিণত করি, তারপর এক সময় এই অস্তি পাজরকে কিছু গোস্তের পোশাক পরিয়ে দেই, অতঃপর (বানানোর প্রক্রিয়াকে শেষ করে) আমি তাকে (সম্পূর্ণ) ভিন্ন এক সৃষ্টি (তথা মানুষ) রূপে পয়দা করি, আল্লাহ তায়ালা কতো উত্তম সৃষ্টিকর্তা, (কতো নিপুণ তার সৃষ্টি!) (সূরা মোমেনুন: আয়াত ১২-১৪)

তোমরা ভয় কর সেই প্রভুকে যিনি এক আত্মা সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার সহধর্মিনীকে এবং সেই দুইজন (আদম এবং হাওয়া) হতে তিনি সকল পুরুষ ও নারীকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন।” (সূরা নিসা: ১)

এ অধ্যায়ের আলোচনার মধ্যে কোনটি কোরআন হাদীসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ তা যাচাই-বাচাই করার দায়িত্ব পাঠক মহলের হাতেই ছেড়ে দেয়া হল। আমি শুধু বলে যেতে চাই, আসুন আমরা প্রাচীনকালের অবৈজ্ঞানিক প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী পরিহার করে আল-কোরআনের বৈজ্ঞানিক ধারণাকে বিশ্বাস করি এবং কোরআনের পথে ফিরে আসি।

বিবর্তন কেন

মহান রাব্বুল আলামীন জগতের সমুদয় বস্তু এবং বস্তুর উপাদান, উদ্ভিদসমূহ, প্রাণী সকল, মানুষজন সবই সৃষ্টি করেছেন। একদিকে তিনি যেমন তাঁর বিধানের আনুগত্যশীলদের পালনকর্তা তেমনি তিনি তাঁর বিধানের বিরুদ্ধকারীদেরও পালনকর্তা। তিনি আস্তিক, নাস্তিক সকলকেই সৃষ্টি করেছেন। তিনি এক সাথে সৃষ্টি করতে পারেন না, এমন কোন কাজ নেই। 

তবু তিনি জগতের সকল কিছু বিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এ বিবর্তন কেন? বর্তমান যুগের আধুনিক মানুষ কোন কিছুই অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে রাজি নয়। তারা বিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার রহস্য সম্পর্কে জানতে চায়। ফলে বিবর্তন কেন এর সম্ভাব্য জবাব দেয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

মানুষসহ পৃথিবীর সমস্ত জীব ও উদ্ভিদ নিম্নধাপের এককোষী প্রাণী থেকে বিবর্তিত

বিবর্তনের ধারণা হলো মানুষসহ পৃথিবীর সমস্ত জীব ও উদ্ভিদ নিম্নধাপের এককোষী প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে চূড়ান্ত ধাপে এসেছে। তাই আমাদেরকে বিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার জন্য এককোষী প্রাণীর গঠন ও কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জানতে হবে। এককোষী একটি প্রাণী এক মিলিমিটারের সহস্র ভাগের এক ভাগ মাত্র। এর গঠন প্রকৃতি খুব রহস্যময়। এতে রয়েছে সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াসসহ অন্যান্য উপাদান।

নিউক্লিয়াসে রয়েছে ক্রোমোজম

অতঃপর এ নিউক্লিয়াসে রয়েছে ক্রোমোজম, যার মধ্যে 'জিন' নামক এক সূক্ষ্ম সত্তা বিদ্যমান। এটি জীবকোষের নিয়ন্ত্রক। প্রতিটি এককোষী প্রাণীই কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে। কোষ বিভাজনের জন্য অনুঘটনের প্রক্রিয়াসহ কোষের রাসায়নিক পদার্থেই রয়েছে নিজে নিজে বিভক্ত হওয়ার মতো সকল উপাদান। 

যখন একটি কোষ বিভক্ত হয় তখন ‘জিন' থেকে ঐ কোষের সকল উপাদানের কাছে তথ্য বা নির্দেশ প্রেরীত হয়। এ ক্ষেত্রে ‘জিন' শুধু তথ্য প্রেরণেই করে না, বরং সে তথ্য গ্রহণও করে। মূলত কোষের তথ্য আদান-প্রদানের কাজটি করে ডি. এন. এ. নামক একটি জটিল উপাদান। এই ডি. এন. এ. ও আর. এন. এ. নামক আর একটি উপাদানের সাথে সম্পর্ক রেখে কাজ করে।

অসংখ্য জীবকোষ নিয়ে মানুষের জড়দেহ গঠিত

মূলত: এককোষী প্রাণীর এসব জটিল উপাদানগুলো সুসংগঠিত ও আনুপাতিক হারে নির্দিষ্ট পরিমাণে নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান করে ধরনের এককোষী প্রাণীর মতো অসংখ্য জীবকোষ নিয়ে মানুষের জড়দেহ গঠিত। 

তাই মানুষের প্রতিটি জীবকোষের কার্যপদ্ধতি এককোষী প্রাণীর অনুরূপ। এতে বুঝা যায় মানব দেহের প্রতিটি কোষের প্রতিটি অণু-পরমাণু পর্যন্ত সুসংগঠিত রাখা এবং নির্দিষ্ট মাত্রা বা পরিমাণ ঠিক রাখাসহ নির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপনের জন্যই বিবর্তন আবশ্যক ছিল।

বিবর্তন ছাড়া দেহের জৈব প্রক্রিয়া ঠিক রাখা কোন অবস্থায়ই সম্ভব নয়। বিভিন্ন দেশের মাটি একত্র করে মূর্তি বানিয়ে আদমকে পয়দা করা হলে জীবকোষের মধ্যস্থিত এসব জটিল উপাদান সুসংগঠিত না হয়ে পরিমাণের দিক থেকে এলোমেলো থাকতো। 

ফলে আদমের দেহকোষের সাথে পৃথিবীর অন্য কোন জীবের দেহ কোষ সাদৃশ্যপূর্ণ হতো না। এর ফলে একটা বিরাট সমস্যার সৃষ্টি হতো। অর্থাৎ আদম জাতিকে না খেয়ে মরতে হতো।

কারণ আদম এবং তার প্রজাতি বিবর্তিত না হয়ে উদ্ভব হলে, তাদের দেহ কোষের সাথে পৃথিবীর অন্যান্য জীবের দেহ কোষের মিল থাকতো না বিধায় তারা নিম্ম শ্রেণীর হালাল প্রাণীর গোশত খেয়ে সহজে হজম করতে পারতো না। 

ফলে উভয়ের দেহ কোষের অমিলের জন্য আদম জাতের দুনিয়ায় চলা ছিল দুস্কর। কারণ পৃথিবীতে বাস করলেও এখানকার কোন কিছু খেয়ে হজম করতে পারতো না। পিপাসায় এক গ্লাস পানি খেলেই ডায়রিয়ার মতো বেরাম হয়ে মরে যেতে হতো। 

আবার অবৈজ্ঞানিক পন্থায় বিভিন্ন দেশের মাটি একত্র করে আদমকে তৈরী করা হলে কোথাও বেশী মাটি, কোথাও কম মাটি পড়ত। অপর দিকে দেহ কোষের পরস্পরের সাথে তথ্যের আদান প্রদান সম্ভব হতো না। তাই আল্লাহ সৃষ্টির প্রতিটি রেণু কণা পর্যন্ত পরিমাণ ও অনুপাত ঠিক রেখেছেন।

আল্লাহ বলেন- “সব কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে পরিমাণে ও অনুপাতে।” (৫৪ : ৫০) শুধু শুধু পরিমাণ ও অনুপাত বজায় রেখে আকার সৃষ্টি করলে প্রাণী পূর্ণতা লাভ করে না। সৃষ্টির পূর্ণতার জন্য তার প্রকৃতি বা স্বভাব নির্ধারিত করতে হয়। প্রাণীর স্বভাবের উপর নির্ভর করে প্রকৃতিতে টিকে থাকা না থাকার সাফল্য। উঁই পোকার পাখা গজালে তারা আগুনে ঝাপ দিয়ে পুড়ে মরে। 

উঁই পোকার এই স্বভাবের জন্য তারা প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে না। শিয়াল ও কুকুর দেখতে খুব তফাৎ না হলেও কুকুর থাকে মালিকের ঘরে, আর শিয়াল থাকে জঙ্গলে। স্বভাবের ভিন্নতার জন্য দু'টি প্রাণীর দুই জায়গায় বাস করতে হচ্ছে। 

এখানে শিয়ালের স্বভাব হলো মালিকের পোষা মোরগ-মুরগী, ছাগল ইত্যাদি ধরে খাওয়া আর কুকুরের স্বভাব হলো এগুলোকে পাহারা দিয়ে রাখা। স্বভাবের এই ভিন্নতার জন্য শিয়াল মালিকের তাড়া খেয়ে জঙ্গলে বাস করে। আর কুকুরকে মালিক খাবার দাবার দিয়ে পোষে রাখে। স্বভাবের এই গুণাগুণগুলো ডি. এন. এ. কোড বহন করে।

প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে টিকে থাকার আন্দোলনে প্রাণীর স্বভাবের বিচিত্রতা ডি. এন. এ কোডগুলোই বংশানুক্রমিকভাবে বহন করে নিয়ে আসে নতুন প্রজন্মের কাছে।

মানুষের স্বভাব নিয়ে উক্তি

মানুষের মাঝে রয়েছে ৪ প্রকারের স্বভাব তা নিচে দেওয়া হলো।

ক. মানুষের মাঝে রয়েছে পশুর স্বভাব।

খ. রয়েছে শয়তানের স্বভাব।

গ. ফিরিশতার স্বভাব। আরও রয়েছে স্রষ্টার প্রদত্ত জ্ঞান।

ঘ. স্রষ্টার প্রদত্ত জ্ঞান।

মানুষের মাঝে স্রষ্টা প্রদত্ত যে জ্ঞান রয়েছে তা অন্য কোন জীবে নেই। আল্লাহ মানুষকে উপরের সকল গুণের সমন্বয়েই সৃষ্টি করেছেন। তাই মানুষের মাঝে পশু শ্রেণীর স্বভাব সংযোগ করতে গিয়ে তাদেরকে পশু শ্রেণী মানুষ থেকে উদ্ভব ঘটিয়েছেন।

এর প্রমাণ স্বরূপ বলা যায় আধুনিক মানুষ যদি পশুর শ্রেণীর মানুষ থেকে বিবর্তিত না হয়ে সৃষ্টি হতো তাহলে তার মধ্যে পশুর কোন স্বভাবই থাকত না। আবার তাদের মাঝে ফিরিশতার ন্যায় উত্তম ব্যবহার থাকত না। এ ক্ষেত্রে প্রতিয়মান হয় যে, মানুষের মাঝে সকল ব্যবহারের সমন্বয় ঘটানোর জন্যই বিবর্তন প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আদমকে যদি মাটির মূর্তি বানিয়ে সৃষ্টি করা হত তাহলে তার মাঝে হয় পশুর ব্যবহারই থাকত, না হয় শুধু ফিরিশতার ব্যবহার থাকত। কিংবা অন্য গুণাগুণগুলো যে কোন একটি বিদ্যমান থাকত।

মানুষের মাঝে রয়েছে শয়তানী স্বভাব

মানুষের মাঝে রয়েছে খাওয়া-দাওয়া, পয়ঃনিষ্কাশন, যৌনক্ষুধা, ঘুম-নিদ্ৰা, আরাম-আয়েশ, রোগ-বালাই ইত্যদি স্বভাব। এ রকম স্বভাব অন্যান্য যে কোন জীবের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায়। প্রকৃতির এ নিয়মগুলো মানুষের মাঝে এসেছে পশু থেকে। 

আবার মানুষের মাঝে রয়েছে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, রক্তারক্তির স্বভাব এসব শয়তানী স্বভাব। আদমকে শয়তান হিংসা করেছিল। সে আগুনের তৈরী আর আদম মাটির তৈরী। অপর দিকে মানুষের সাথে থাকে একটা বড় জিন শয়তান। তাই মানুষের মাঝে রয়েছে শয়তানী স্বভাব। তাছাড়া মানুষের প্রতিটি কোষ-কলার পরতে পরতে রয়েছে শয়তানী সত্তার অস্তিত্ব।

আল কোরআনে শয়তানের নাফরমানীর কথা এসেছে, “আমি আদম হতে শ্রেষ্ঠ। আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং আদমকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।” (আল কুরআন)

“শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন, সেই শয়তান হতে তোমরা সর্বদা বেঁচে থাকবে।” (আল- কোরআন)

মানুষের মাঝে রয়েছে ফেরেশতার স্বভাব

অপর দিকে মানুষ পর-উপকারী, অপরের কাজে সাহায্যকারী। নিজের লাভের কথা চিন্তা না করে অপরের দুঃখে এগিয়ে যায়, স্রষ্টার আনুগত্য করে। স্রষ্টার বিধান মেনে চলে। কখনো আল্লাহর হুকুমের বিপরীত কাজ করে না। এসব গুণ হলো ফেরেশতার স্বভাব। কারণ ফেরেশতার মাঝে রয়েছে আল্লাহর হুকুম মানা ও আনুগত্য করার গুণ।

আল্লাহ বলেন- “তারা কখনও আল্লাহ যা হুকুম করেন, তা লংঘন করে না এবং যা আদেশ করেন তাই পালন করে।” (আল কোরআন)

মানুষের মাঝে রয়েছে খোদায়ী ইলম বা জ্ঞান

মানুষের মাঝে ৪র্থ যে গুণ রয়েছে তা হলো খোদায়ী ইলম বা জ্ঞান। এ জ্ঞান আছে বলেই মানুষ সৃষ্টির রহস্য তালাশ করে। স্রষ্টাকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল থাকে। অতঃপর রয়েছে আবিষ্কার বা সৃষ্টি করার ব্যাকুলতা, পাশাপাশি রয়েছে নিজকে প্রকাশ করার মানসিকতা।

তাই বলা যায় মানুষের মাঝে চারটি গুণের সমন্বয় ঘটানোর জন্যই বিবর্তন প্রয়োজন ছিল। আল্লাহ বলেন- “আল্লাহ যাকে জ্ঞান দান করেছেন; তাকে অশেষ কল্যাণ দান করেছেন।” (আল কোরআন)

অতঃপর মানুষের খাদ্যের যে উৎস রয়েছে, সেই উৎসের সাথে মানুষের দেহেরকোষ কলার সাদৃশ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যই বিবর্তন ছাড়া অন্য কোন পন্থা ছিল না। এ ক্ষেত্রে মানুষ বিবর্তিত হয়ে উদ্ভব হয়েছে বলেই পৃথিবীর জীব, উদ্ভিদ, আলো বাতাস, রোগ-বালাইর সাথে সম্পর্কিত। ফলে প্রকৃতি ও প্রকৃতির সকল উপাদানের সাথে মানুষ খাপ খাইয়ে চলতে পারছে।

উপসংহার

উপসংহারে বলা যায় এ বিবর্তন ডারউইনের বিবর্তন নয়। মানুষ যে বিবর্তনের মাধ্যমে উদ্ভব হয়েছে তা হলো স্রষ্টার উদ্দেশ্যমুখী সাংগঠনিক বিবর্তন। তাই মানুষের মাঝে এক সাথে চারটি গুণের সমন্বয় ঘটেছে। এক্ষেত্রে মানুষ যদি শুধু ডারউইনের বিবর্তনের মাধ্যমে উদ্ভব হতো তাহলে তার মাঝে খোদায়ী ইলম থাকত না। তাদের মাঝে থাকত শুধু পশুর স্বভাব। সুতরাং বলা যায় প্রকৃতি, প্রাকৃতিক নিয়ম, সৃষ্টি ও স্রষ্টার সাথে সম্পর্কশীল, প্রাণী জগতের শ্রেষ্ঠ প্রজাতি বিবর্তনের মাধ্যমে আল্লাহ উদ্ভব ঘটান ৷

আদম আঃ এর উচ্চতা

আদম আঃ এর উচ্চতা মোট ৬০ হাত বলে পাওয়া যায় বিভিন্ন গ্রন্থে। তবে সঠিক কিনা যাচাই করা হয়নি। অনলাইন থেকে সংগৃহীত এই তথ্যটি।

সংগৃহীতঃ আদমের আদি উৎস
লেখকঃ আল মেহেদী

পোস্ট ট্যাগঃ

আদম আঃ এর কবর কোথায়
হযরত আদম আঃ এর কবর কোথায়
আদম আঃ এর কবর কোথায় অবস্থিত
হযরত আদম (আঃ) এর কবর কোথায় অবস্থিত
আদম আ এর কবর কোথায়
আদম আঃ এর কবর কোন দেশে
আদম (আঃ) এর কবর কোথায়
আদম আঃ এর কবর
আদম আঃ এর রওজা
আদম আঃ কবর কোথায়
আদমের কবর কোথায়
আদম আঃ কবর কোন দেশে
আদম নবীর কবর কোথায়

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url