জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব

জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব

জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব

কি কারণে নামাজি হয়েও জাহান্নামী, বেপর্দা নারীর ওয়াজ কি? জাহান্নামী নারী কারা, জাহান্নামে নারীদের সংখ্যাধিক্য কেন হবে ইত্যাদি আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে।

জাহান্নামে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যাধিক্য হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “ওসামা (রা) নবীজি (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ানো অবস্থায় দেখলাম যে, তাতে অধিকাংশ প্রবেশ কারীরা গরীব মানুষ, সম্পদশালীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করা থেকে বাধা দেয়া হচ্ছে।

জাহান্নামী নারী

আর জাহান্নামে প্রবেশকারী সম্পদশালীদেরকে আগেই জাহান্নামে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতঃপর আমি জাহান্নামের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম যে, তাতে অধিকাংশ প্রবেশকারী হলো নারী।” (বুখারী ৭/৫১৯৬)

জাহান্নামে নারীদের সংখ্যাধিক্য

আরবির বাংলা অর্থ: “ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ বলেছেন: আমি জান্নাতের প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসীরা ফকীর, আর জাহান্নামের প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা।” (তিরমিযী ৪/২৬০২)

স্বামীর অবাধ্য হওয়ার কারণে জাহান্নামী

কোনো কোনো মহিলা স্বীয় স্বামীর অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ হওয়ার কারণে জাহান্নামী হবে:

জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা কেন বেশি হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ আমি জাহান্নাম দেখেছি আর আজকের ন্যায় আর কোনো দিন আমি আর কোনো দৃশ্য দেখি নি। আর তার অধিকাংশ অধিবাসীই মহিলা। তারা (সাহাবাগণ, জিজ্ঞেস করল কেন হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! তিনি বললেন: তাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞেস করা হলো যে, তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে?

তিনি বললেন: তারা স্বীয় স্বামীর অকৃতজ্ঞ হয় এবং তার অনুগ্রহকে অস্বীকার করে, আর তুমি যদি তাদের কারো প্রতি জীবনভর অনুগ্রহ করতে থাক, কিন্তু হঠাৎ যদি তার মর্জি বিরোধী কিছু তোমার কাছ থেকে পায়, তাহলে সে বলে: “আমি কখনো তোমার কাছ থেকে ভাল কোনো কিছু পাই নি।” (মুসলিম ২/৯০৭)

জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা বেশি হবে

কিছু কিছু মহিলা অধিক পরিমাণ লা'নত করার কারণে জাহান্নামে যাবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহের দিকে বের হওয়ার সময়, মহিলাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং বললেন: হে মহিলারা তোমরা সাদকা কর।

জাহান্নামী নারীর বৈশিষ্ট্য

কেননা আমি তোমাদের অধিকাংশকেই জাহান্নামী হিসেবে দেখতে পেয়েছি। তারা বলল: কেন হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! তিনি বললেন: তোমরা তোমাদের স্বামীদের বেশি বেশি অকৃতজ্ঞ হও এবং লা'নত (অভিসম্পাত) বেশি বেশি করে কর।” (বুখারী ১/৩০৪)

জাহান্নামে যাওয়ার কারণ

কিছু কিছু মহিলা হালকা পোশাক পরিধান বা নামকাওয়াস্তে কোনো পোশাক পরিধান করার কারণে জাহান্নামে যাবে:

কোনো কোনো মহিলা পুরুষদেরকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার কারণে জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন: দু'প্রকার লোক জাহান্নামী হবে তবে আমি তাদেরকে দেখি নি। তাদের এক প্রকার হলো তারা, যাদের হাতে গরুর লেজের ন্যায় কোড়া থাকবে, আর তারা তা দিয়ে তাদের অধিনস্ত লোকদেরকে আঘাত করবে।

জাহান্নামী নারী কারা

আরেক প্রকার হলো ঐ সমস্ত মহিলা যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ থাকবে, পুরুষদেরকে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে এবং নিজেরাও পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট থাকে। তাদের মাথা বড় উটের কুঁজের ন্যায় ঝুঁকে থাকবে (আলগা চুল ব্যবহার করার কারণে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ তার সুঘ্রাণ এত এত দূর থেকে পাওয়া যাবে।” (মুসলিম ৩/২১২৮)

জাহান্নামী পুরুষ

আমর বিন লুহাই জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমি আমর বিন লুহাই বিন কাময়া বিন খান্দাফ আবু বানি কা'বকে দেখেছি যে, সে জাহান্নামে স্বীয় নাড়িভূড়ি টেনে নিয়ে চলছে।” (মুসলিম ৪/২৮৫৬)

মূর্তি পূজার ইতিহাস তৈরীকারী

সায়েবা নামক মূর্তির তৈরীকারী আমর বিন আমের খুজায়ী জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ) বলেছেন: আমি আমর বিন আম্মার আল খুযায়ীকে দেখেছি যে সে জাহান্নামে স্বীয় নাড়ীভুড়ি টেনে নিয়ে চলছে, সে ছিল ঐ ব্যক্তি যে, সর্বপ্রথম সায়েবা মূর্তি তৈরী করেছিল।” (মুসলিম ৪/২৮৫৬)

গণীমতের মাল চুরীকারী জাহান্নামী

গণীমতের মাল থেকে চাদর চুরী করার কারণে কারকারা নামক এক ব্যক্তি জাহান্নামী হবে:

বদরের যুদ্ধে নিহত ১৪ জন কুরাইশ নেতা জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু তালহা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: বদরের যুদ্ধের দিন নবীজি (সাঃ) কুরাইশদের ২৪ জন নেতাকে বদরের কুয়াসমূহের মধ্যে একটি দুর্গন্ধময় কুয়ায় নিক্ষেপ করার জন্য নির্দেশ দিলেন, তাদেরকে সেখানে নিক্ষেপ করার পর তিনি কুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে সমস্ত সরদারদেরকে তাদের পিতার নামসহ ডাকলেন,

হে অমুকের ছেলে অমুক, হে অমুকের ছেলে অমুক! তোমাদের কি একথা পছন্দ লাগছে যে, তোমরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর নি? আমাদের সাথে আমাদের রব যে অঙ্গিকার করেছিল তা আমরা সত্য পেয়েছি, তোমাদের সাথে তোমাদের রব যে ওয়াদা করেছিল তা কি তোমরা সত্য পেয়েছ।” (বুখারী ৫/৩৯৭৬)

আবু সামামা আমর বিন মালেক জাহান্নামী

খন্দকের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কাফির ও মুশরিকরা জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আলী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: খন্দকের যুদ্ধের দিন রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন: আল্লাহ তাদের ঘর ও কবর সমূহকে আগুন দিয়ে ভরে দিন তারা আমাদেরকে মধ্যবর্তী নামায (আসরের) আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে, এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।” (বুখারী ৪/২৯৩১)

জাহান্নামে কারা চিরকাল থাকবে

মুশরিক জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “ নিশ্চয় কিতাবীদের মাধ্যে যারা কুফরী করেছে মুশরিকরা, জাহান্নামের আগুনে থাকবে স্থায়ীভাবে। ওরাই হলো নিকৃষ্ট সৃষ্টি। (সূরা বাইয়্যিনাহ ৬)

কাফির জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। (সূরা বাক্বারা ৩৯)

মুরতাদ জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: আর যে তোমাদের মধ্য থেকে তাঁর দ্বীন থেকে ফিরে যাবে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, বস্তুত এদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখিরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। (সূরা বাক্কারা ২১৭)

মুনাফিক জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের লা'নত করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আজাব।(সূরা তাওবা ৬৮)

আহলে কিতাব সহ অন্যান্য অমুসলিমদের মধ্য থেকে যারা মুহাম্মদ শামস-এর প্রতি ঈমান আনবে না তারাও জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: ঐ সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মদ সাঃ-এর প্রাণ! ঐ উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি আমার কথা শুনবে, চাই সে ইহুদী হোক আর নাসারা, সে আমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছি তার প্রতি ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করল জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মুসলিম)

ক্ষণস্থায়ী জাহান্নামী

যে ব্যক্তি যাকাত আদায় করেনি সে জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে।

(আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর'। (সূরা তাওবা ৩৪-৩৫)

মুমিনকে হত্যাকারীর শাস্তি

জেনে শুনে কোনো মুমিনকে হত্যাকারী দীর্ঘসময় পর্যন্ত জাহান্নামে থাকবে:

আরবির বাংলা অর্থ: আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মু'মিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্ষুব্ধ হবেন, তাকে লা'নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আজাব প্রস্তুত করে রাখবেন। (সূরা নিসা ৯৩)

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু সাঈদ ও আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যদি আকাশ ও জমিনে বসবাসকারী সমস্ত সৃষ্টি একজন মু'মিন ব্যক্তিকে হত্যায় শামিল হয়, তাহলে আল্লাহ তাদের সকলকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।” (তিরমিযী ১৩৯৮)

যুদ্ধ থেকে পলায়নকারী জাহান্নামী

কাফিরদের সাথে যুদ্ধ চলাকালে সেনাদল থেকে পলায়নকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: আর যে ব্যক্তি সেদিন তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তাহলে সে আল্লাহর গযব নিয়ে ফিরে আসবে। তবে যুদ্ধের জন্য (কৌশলগত) দিক পরিবর্তন অথবা নিজ দলে আশ্রয় গ্রহণের জন্য হলে ভিন্ন কথা এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর সেটি কতইনা নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল। (সূরা আনফাল ১৬)

ইয়াতীমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “ নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে; আর অচিরেই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। (সূরা নিসা ১০)

নারীদের অপবাদকারী জাহান্নামী

যারা সতী সরলমনা নারীদের প্রতি অপবাদ দেয় তারা জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি। (সূরা নূর ২৩)

ফাসিক, ফাজির অসৎ লোকেরা জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “এবং দুষ্কর্মকারীরা থাকবে জাহান্নামে, তারা কর্মফল দিবসে তাতে প্রবিষ্ট হবে; তারা তা থেকে অন্তর্নিহিত হতে পারবে না”। (সূরা ইনফিতার ১৪-১৬)

নামাজ না পড়ার শাস্তি জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা) নবীজি (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি একদিন নামায সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি যথাযথভাবে নামায আদায় করে, কিয়ামতের দিন তা তার জন্য নূর, দলীল ও মুক্তির ওসিলা হবে।

আর যে ব্যক্তি যথাযথভাবে নামায আদায় করবে না, কিয়ামতের দিন তার জন্য কোনো নূর, দলীল ও মুক্তির মাধ্যম থাকবে না। কিয়ামতের দিন সে কারুন, ফেরাউন, হামান ও উবাই বিন খালফের সাথে থাকবে।” (ইবনে হিব্বান)

রোযা পালন করবে না সে জাহান্নামী

যে ব্যক্তি সমর্থ থাকা সত্ত্বেও হজ্ব পালন করবে না সে জাহান্নামী

কিছু লোককে শহরসমূহে প্রেরণ করি, তারা গিয়ে দেখুক যে, যাদের হজ্ব করার সামর্থ আছে অথচ তারা হজ্ব করতেছে না তাদের ওপর কর ধার্য করুক। তারা মুসলমান নয়, তারা মুসলমান নয়, তারা মুসলমান নয়।” (সাঈদ তার সুনান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)

লোক দেখানো আমলকারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তির ফায়সালা করা হবে, সে হবে ঐ ব্যক্তি যে, আল্লাহর পথে শাহাদাতবরণ করেছে, আল্লাহ তার সামনে তাকে দেয়া নিআমতসমূহের কথা স্মরণ করাবেন আর সে তা স্বীকার করবে, তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন যে, এ নিআমতসমূহের হক আদায় করার জন্য তুমি কি করেছ?

জাহান্নামের আগুন

সে বলবে আমি তোমার পথে যুদ্ধ করেছি, এমনকি এপথে আমি শাহাদাত বরণ করেছি। তখন আল্লাহ বলবেন: তুমি মিথ্যা বলছ, তোমাকে লোকেরা বাহাদুর বলবে এজন্য তুমি যুদ্ধ করেছিলে, আর তোমাকে পৃথিবীতে লোকেরা বাহাদুর বলেছেও। অতঃপর ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

লোক দেখানো ইবাদত নিয়ে হাদিস

এরপর ঐ ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে, যে নিজে জ্ঞান অর্জন করেছে এবং অপরকেও শিক্ষা দিয়েছে, কুরআন শিখেছে। আল্লাহ তাকে দেয়া নিআমত সমূহের কথা স্মরণ করাবেন, তখন সে তা স্মরণ করবে, তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন যে, এ নেআমতসমূহের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য তুমি কি করেছ।

জাহান্নামের আগুনের ছবি

সে বলবে হে আল্লাহ! আমি জ্ঞান অর্জন করেছি, লোকদেরকে তা শিখিয়েছি এবং তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য লোকদেরকে কুরআন তেলাওয়াত করে শুনিয়েছি। আল্লাহ বলবেন: তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি এজন্য জ্ঞান অর্জন করেছ যেন লোকেরা তোমাকে জ্ঞানী বলে।

লোক দেখানো ইবাদত নিয়ে হাদিস

আর এজন্য কুরআন তেলাওয়াত করে শুনিয়েছ যেন লোকেরা তোমাকে ক্বারী বলে। তাই পৃথিবীতে লোকেরা তোমাকে আলেম ও ক্বারী বলেছে। অতঃপর ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে তখন তারা তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে।

এরপর তৃতীয় ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে যাকে পৃথিবীতে স্বচ্ছলতা এবং সর্বপ্রকার সম্পদ দান করা হয়েছিল। আল্লাহ তাকে দেয়া নিআমতসমূহের কথা তাকে স্মরণ করাবেন তখন সে তা স্মরণ করবে, আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন যে, এ নিআমতসমূহের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য তুমি কি করেছ।

জাহান্নামের আগুনের ছবি

সে বলবে হে আল্লাহ! আমি ঐ সমস্ত রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করেছি, যেখানে ব্যয় করা তোমার পছন্দ। আল্লাহ বলবেন: তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি এজন্য সম্পদ ব্যয় করেছ যেন লোকেরা তোমাকে দানবীর বলে। আর পৃথিবীতে লোকেরা তোমাকে দানবীর বলেছেও। অতঃপর ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে তখন তাকে তারা উপুড় করে টেনে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে।” (মুসলিম ৩/১৯০৫)

মিথ্যা অপবাদের কঠিন শাস্তি

নবীজি (সাঃ) -এর নামে মিথ্যা অপবাদ দাতা জাহান্নামে যাবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নবীজি (সাঃ) কে বলতে

শুনেছি, তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার ব্যাপারে এমন কথা বলে যা আমি বলি নি সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে ঠিক করে নেয়।” (বুখারী ১০৯)

অহংকার নিয়ে হাদিস
অহংকারকারী জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: ইজ্জত আমার লুঙ্গি আর অহংকার আমার চাদর, যে ব্যক্তি তা আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চায় আমি তাকে শাস্তি দিব।” (মুসলিম)'

  • সুদখোরের পরিণতি
  • সুদখোর জাহান্নামী হবে
  • জিনাকার নারী পুরুষ জাহান্নামী হবে
  • মদ পানকারী জাহান্নামী হবে
  • আত্ম হত্যাকারী জাহান্নামী হবে
  • ছবি তৈরীকারী জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) নবীজি (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: ছবি তৈরী কারী আল্লাহর নিকট সর্বাধিক আজাব ভোগ করবে।” (বুখারী ৫৯৫০)

পৃথিবীর সম্মান, সম্পদ ও গৌরব লাভের আশায় জ্ঞান অর্জনকারী জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “কা'ব বিন মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নবীজি (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি আলেমদের সাথে ফখর করার উদ্দেশ্যে জ্ঞান অর্জন করে, বা অজ্ঞ লোকদের সাথে ঝগড়া করা ও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য জ্ঞান অর্জন করে, তাকে আল্লাহ জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।” (তিরমিযী ২৬৫৪)

বাইতুলমালে অন্যায়ভাবে জাহান্নামী

বাইতুলমালে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “খাওলা আনসারিয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নবীজি (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সম্পদে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করে সে কিয়ামতের দিন জাহান্নামী হবে।” (বুখারী ৩১১৮)

বৃদ্ধ ব্যভিচারি, মিথ্যুক বাদশা জাহান্নামী

বৃদ্ধ ব্যভিচারি, মিথ্যুক বাদশা ও অহংকারী ফকীর জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: তিন প্রকার লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। তারা হলো: বৃদ্ধ ব্যভিচারি, মিথ্যুক বাদশা, অহংকারী ফকীর।” (মুসলিম)

টাখনুর নিচে কাপড় পড়লে কি ক্ষতি হয়

দান করে খোঁটা দেয়, মিথ্যা শপথ করে পণ্য দ্রব্য বিক্রি করা পায়ের গোছার নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধানকারী জাহান্নামী:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু যার (রা) নবীজি (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: তিন প্রকার লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।

জাহান্নামের আগুন

বর্ণনাকারী বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ এ কথাটি তিন বার বলেছেন, তখন আবু যার বলল: তারা ধ্বংস থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তারা কারা ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন: পায়ের গোছার নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধানকারী, দান করে খোটা দাতা, মিথ্যা শপথ করে পণ্য দ্রব্য বিক্রি কারী।” (মুসলিম ১০৬)

জীব জন্তুর প্রতি যুলুমকারী জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: এক মহিলার জাহান্নামে শাস্তি হচ্ছিল একটি বিড়ালকে তার মৃত্যু পর্যন্ত আটকিয়ে রাখার কারণে, এ কারণে সে জাহান্নামী হয়েছিল, সে তাকে খাবার দেয় নি, পান করায়নি, আটকিয়ে রেখে ছিল এমন কি পোকামাকড় ও খেতে দেয় নি।” (মুসলিম ২২৪২)

অন্যের হক নষ্টকারী জাহান্নামী

অন্যের ওপর যুলুমকারী এবং অন্যের হক নষ্টকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি রাসূলাল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কি জান মোফলেস (গরীব) কে? তারা বলল: আমাদের মাঝে গরীব সে যার ধন-সম্পদ নেই।

তিনি বললেন: আমার উম্মতের মধ্যে মোফলেস সে যে কিয়ামতের দিন নামায, রোযা, যাকাত (ইত্যাদি আমল) নিয়ে উপস্থিত হবে, কিন্তু সে ওমুককে গালি-গালাজ করেছে, ওমুককে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, ওমুকের সম্পদ নষ্ট করেছে, ওমুককে হত্যা করেছে,

ওমুককে মারধর করেছে, তখন তার নেকীসমূহ ওমুক ওমুককে দিয়ে দেয়া হবে, যখন তার অপরাধ শেষ হওয়ার আগেই নেকী শেষ হয়ে যাবে, তখন তাদের গুনাহসমূহ থেকে গুনাহ তার আমলনামায় দেয়া হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (মুসলিম ২৫৮১)

হারাম উপার্জনকারী জাহান্নামী

হারাম উপার্জনকারী, খিয়ানতকারী, ধোঁকাবাজ, মিথ্যুক, অশ্লীল কথা বলে এ ধরনের লোক জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “ইয়াজ বিন হিমার আল মাজাসি (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ একদা খুতবা দিতে গিয়ে বলেছেন:

পাঁচ প্রকার লোক জাহান্নামী

(১) ঐ সমস্ত অজ্ঞ লোক যারা হালাল ও হারামের মাঝে কোনো পার্থক্য করে না।

(২) যারা চোখ বন্ধ করে চলে, এমনকি তারা ধন-সম্পদ ও পরিবার পরিজনের প্রয়োজন থেকেও বে-পরওয়া।

হারাম উপার্জনকারীর দাওয়াত

(৩) খিয়ানতকারী যে সামান্য প্রয়োজনেই খিয়ানত করতে থাকে।

(৪) যে ব্যক্তি তোমার পরিবার-পরিজন ও সম্পদে তোমাকে ধোঁকা দেয়। অতঃপর তিনি বখীল ও মিথ্যুকের কথা উল্লেখ করলেন।

(৫) যে ব্যক্তি অশ্লীল কথা বলে।” (মুসলিম, বায়হাকী ২০১৬১)

অসৎ চরিত্রের অধিকারী জাহান্নামী

অসৎ চরিত্রের অধিকারী ও ঝগড়া-ঝাটিকারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “হারেসা বিন ওহাব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: অসৎ চরিত্রের অধিকারী ও ঝগড়া-ঝাটিকারী জাহান্নামী হবে।” (আবু দাউদ ৪৮০১)

মুসাফিরকে পানি দেয়না সে জাহান্নামী

কোনো অনাবাদী এলাকায় নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি মুসাফিরকে পানি দান করেনা, দুনিয়ার স্বার্থে রাষ্ট্রনায়কের নিকট বাইয়াত গ্রহণকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: তিন প্রকার লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।

(১) কোনো ব্যক্তির নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত পানি থাকা সত্ত্বেও মরুভূমিতে অন্য লোকদেরকে পানি নেয়া থেকে বাধা দেয়।

(২) যে ব্যক্তি আসরের পর আল্লাহর নামে এ বলে কসম করে মাল বিক্রি করল যে, এ মাল আমি এত দিয়ে ক্রয় করেছি, আর ক্রেতাও তা বিশ্বাস করে ক্রয় করল, অথচ সে এদামে তা ক্রয় করে নি।

(৩) যে ব্যক্তি দুনিয়াবী স্বার্থে কোনো রাষ্ট্রনায়কের নিকট বাইয়াত করল, যদি তাকে কিছু দেয়া হয় তাহলে সে তা পূর্ণ করে, আর কিছু না দিলে সে তা পূর্ণ করে না।” (মুসলিম ১০৮)

লাগামহীন কথাবার্তা বলে জাহান্নামী

লাগামহীন কথাবার্তা বলে এমন লোকও জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন, কোনো কোনো সময় বান্দা তার মুখ দিয়ে এমন কোনো কথা বলে ফেলে যার মাধ্যমে সে পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্বের চেয়ে ও জাহান্নামের অধিক গভীরে গিয়ে পৌঁছে।” (মুসলিম ২৯৮৮)

কসম করে হক নষ্টকারীও জাহান্নামী

কসম করে অপরের হক নষ্টকারীও জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি কসম করে কোনো মুসলমানের হক নষ্ট করল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন। এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল ইয়া রাসূলুল্লাহ। যদি সামান্য কিছুও হয়? তিনি বললেন: যদি বাবলা গাছের একটি শাখাও হয় তবুও।” (মুসলিম ১/১৩৭)

পায়জামা, সেলওয়ার, লুঙ্গি ইত্যাদি টাখনুর নিচে পরিধানকারী জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) নবীজি (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে যাবে সেই অংশটুকু জাহান্নামী হবে।” (বুখারী ৫৭৮৭)

যে ভাল করে অযু না করে সে জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন ওমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ কিছু লোককে ওযু করতে দেখেছেন যে, তাদের গোড়ালী চমকাচ্ছে। তিনি বললেন: ধ্বংস শুষ্ক গোড়ালীর লোকদের জন্য, তা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। অতএব তোমরা ভাল করে ওযু কর।” (ইবনে মাজা ৪৫০)

হারাম সম্পদে লালিত ব্যক্তি জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “জাবের (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যে শরীর হারাম মালে লালিত হয়েছে তার জন্য জাহান্নামই উত্তম।” (ত্বাবারানী

প্রসিদ্ধি লাভের জন্য যে ব্যক্তি কোনো পোশাক পরে সে জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন ওমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহবলেছেন: যে ব্যক্তি দুনিয়াতে প্রসিদ্ধি লাভের জন্য পোশাক পরল, কিয়ামতের দিন তাকে লাঞ্ছনার পোশাক পরানো হবে। এরপর তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হবে।” (ইবনে মাজাহ ৩৬০৭)

জেনে বুঝে দ্বীনের কথা গোপনকারী জাহান্নামী হবে

হত্যার উদ্দেশ্যে একে অপরের ওপর হামলাকারীরা জাহান্নামী হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু মূসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন: যখন দু'জন মুসলমান স্বীয় তরবারী নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত উভয়ই জাহান্নামী। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! হত্যাকারী জাহান্নামী হবে এটাতো স্পষ্ট, কিন্তু নিহত কিভাবে জাহান্নামী হবে? তিনি বললেন: নিহত ব্যক্তিও স্বীয় সাথীকে হত্যা করার জন্য আগ্রহী ছিল।” (ইবনে মাজাহ ৩৯৬৪)

ধোঁকা চক্রান্তকারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ বলেছেন যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। ধোঁকাবাজ ও চক্রান্ত কারী জাহান্নামী হবে।” (ত্বাবারানী ১০২৩৪)

সোনার আংটি ব্যবহারকারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ ব্যক্তির হাতে একটি আংটি দেখে হাত থেকে তা খুলে বাহিরে নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন: তোমাদের মধ্যে কেউ যদি আগুনের আঙ্গরা হাতে রাখা পছন্দ করে তাহলে সে যেন সোনার আংটি ব্যবহার করে।” (মুসলিম ৩/২০৯০)

সোনা চাঁদির প্লেটে পানাহার কারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি সোনা-চাঁদির প্লেটে পান করে সে স্বীয় পেটে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করাল।” (মুসলিম ২০৬৫)

যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে তার আগমনে লোকেরা দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগতম জানাক সে জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আৰু মিজলায থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: মুয়াবিয়া (রা) বের হলে আবদুল্লাহ বিন যুবাইর ও ইবনে সাফওয়ান (রা) দাঁড়িয়ে গেল, তখন মুয়াবিয়া (রা) বললেন: তোমরা উভয়ে বসে যাও আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার জন্য লোকেরা দাঁড়িয়ে থাকুক, সে যেন তার ঠিকানা নিজেই জাহান্নামে বানিয়ে নিল।” (তিরমিযী ২৭৫৫)

গণীমতের মাল চুরিকারী জাহান্নামী

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন আমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবীজি (সাঃ) এর যুগে এক লোক গণীমতের মাল পাহারা দিত, তার নাম ছিল কারকারা সে যখন মারা গেল, তখন রাসূলূল্লাহ সাঃ বললেন: সে জাহান্নামী। সাহাবাগণ গিয়ে তার সম্পদ দেখতে লাগল, সেখানে তারা একটি চাদর পেল যা গণীমতের মাল থেকে সে চুরি করেছিল।” (ইবনে মাজাহ ২৮৪৯)

গিবতকারী জাহান্নামী
অধিকাংশ লোক তার মুখ লজ্জাস্থানের কারণে জাহান্নামী হবে

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ - কে জিজ্ঞেস করা হলো যে ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ! অধিকাংশ লোক কোনো আমলের মাধ্যমে জান্নাতে যাবে? তিনি বললেন: আল্লাহ ভীতি ও সৎচরিত্র। তাঁকে আরো জিজ্ঞেস করা হলো কি কারণে অধিকাংশ লোক জাহান্নামে যাবে? তিনি বললেন: মুখ ও লজ্জাস্থানের কারণে।” (তিরমিযী ২০০৪)

নামাজি হয়েও জাহান্নামী

যারা লোক দেখানো নামাজ আদায় করে; যারা দায়সারাভাবে নামাজ পড়ে; যারা অলসতা করে সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করে না

বেপর্দা নারীর ওয়াজ

জাহেলী যুগে নারীরা নগ্ন, অর্ধনগ্ন হয়ে নিজেদেরকে প্রদর্শন করত যাকে বর্বরতা ও অসভ্য বলা হয়েছে। আমাদের নারীদেরকে এ নির্লজ্জতা, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা পথ অবলম্বন করতে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের আয়াতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।

জাহান্নামী নারী কারা

নবিজী বলেন: তারা স্বীয় স্বামীর অকৃতজ্ঞ হয় এবং তার অনুগ্রহকে অস্বীকার করে, আর তুমি যদি তাদের কারো প্রতি জীবনভর অনুগ্রহ করতে থাক, কিন্তু হঠাৎ যদি তার মর্জি বিরোধী কিছু তোমার কাছ থেকে পায়, তাহলে সে বলে: “আমি কখনো তোমার কাছ থেকে ভাল কোনো কিছু পাই নি।” (মুসলিম ২/৯০৭)

জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব উপসংহার

আজকের পোস্টে জানতে পারলাম যে, জাহান্নামে নারী, জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব, জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা বেশি, জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা কেন বেশি হবে, জাহান্নামী নারী, জাহান্নামি নারি ইত্যাদি। তাই নারীগণের উচিত সর্বদা জাহান্নামের আগুন হতে বাচার জন্য মহান আল্লাহপাকের নিকট পানাহ চাওয়া, নিজ স্বামীর আদেশ নিষেধ মেনে চলা আল্লাহর ইবাদত ও নবিজীর দেখানো পথে চলা।

পোস্ট ট্যাগঃ

জাহান্নামে নারী
জাহান্নামে নারীর কবরের আজাব
জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা বেশি
জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা কেন বেশি হবে
জাহান্নামী নারী
জাহান্নামি নারি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url