ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ



ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ

ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ হলো “আল্লাহুম্মা আন্তা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আস্তা, খালাকতানী, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়াদিকা মাস্তাতাতু, আউজুবিকা মিন সাররি মা সানাতু, আবুওলাকা বিনি'মাতিকা আলাইয়া, আবু লাকা বিজ্ঞানবি, মাগফিরলী ফাইন্নাহু লাইয়াগফিরুজুনুবা ইল্লা আন্তা।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার অর্থ সহ

অর্থ: “হে আল্লাহপাক! তুমি আমার প্রভু, তুমি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য আর কোনো ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো, আর আমি হচ্ছি তোমার বান্দা, আর আমি আমার সাধ্যমত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। 

আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্টতা থেকে তোমার আশ্রয় কামনা করছি, আমার প্রতি তোমার নিআমতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহখাতা স্বীকার করছি, অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করো, নিশ্চয় তুমি ব্যতীত গুনাহ মাফকারী আর কেউ নেই।

ইস্তেগফারের ফজিলত
ইস্তেগফারের ৭০ ফজিলত
সকাল-সন্ধ্যা সায়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠকারী জান্নাতী হবে

অর্থ: সাদ্দাদ বিন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি একীনসহ এদুআ দিনের বেলা পাঠ করে, আর সন্ধ্যার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে সে জান্নাতী। আর যে ব্যক্তি রাতের বেলা ইকীন সহ এদুআ পাঠ করে এবং সকাল হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে সেও জান্নাতী।” (বুখারী ৮/৬৩০৬)

আর যে যে আমলে আমরা জান্নাতে যেতে পারবোঃ

আর যে যে আমলে আমরা জান্নাতে যেতে পারবো সে আমলের ব্যপারে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই পুরো পোস্টটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

জান্নাতি মানুষদের গুণাবলী

নরম দিল, খোশ মেজাজ, সর্বদা আল্লাহ ভিতু কারো কোনো ক্ষতিকারী নয় ধৈর্যশীল ব্যক্তি জান্নাতী হবে:

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: জান্নাতে প্রবেশ করবে এমন ব্যক্তি যাদের অন্তরসমূহ হবে পাখীর অন্তরের ন্যায়।” (মুসলিম ৪/২৮৪০)

জান্নাতে গরিব-মিসকিন, ফকীর, দুর্বল লোকদের সংখ্যাধিক্য হবে:

অর্থ: “হারেসা বিন ওহাব (রাঃ) নবী (সাঃ)-কে বলত শুনেছেন তিনি বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের গুণাবলীর কথা বললোনা? সাহাবাগণ বলল: হ্যাঁ বলুন। তিনি বললেন: প্রত্যেক দুর্বল, লোকচোখে হেয়, কিন্তু সে যদি কোনো বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করে তাহলে আল্লাহ তার কসম পূর্ণ করবেন।

অতঃপর তিনি বললেন: আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের কথা বলবো না? তারা বললো: বলুন। তিনি বললেন: প্রত্যেক ঝগড়াকারী, দুশ্চরিত্র, অহংকারী ব্যক্তি।” (মুসলিম ৪/২৮৫৩)

জাহান্নাম থেকে মুক্তি বা যাদের জন্য জাহান্নাম হারাম

অর্থ: “ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: প্রত্যেক নমর দিল ভদ্র এবং মানুষের সাথে মিশুক লোকদের জন্য জাহান্নাম হারাম।” (আহমাদ ৭/৩৯৩৮)

আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কারী ব্যক্তি জান্নাতে যাবে:

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আমার সমস্ত উম্মত জান্নাতে যাবে তবে ঐ সমস্ত লোক ব্যতীত যারা জান্নাতে যেতে চায় না। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলো হে আল্লাহর রাসূল সাঃ কে জান্নাতে যেতে চায়না?

যে ব্যক্তি বার রাকাত নামাজ আদায় করে সে জান্নাতে

মাসআলা-৩৩৭: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যে ব্যক্তি প্রতি দিন বার রাকআত নামাজ (ফজরের পূর্বে দু'রাকাত, যোহরের পূর্বে চার রাকআত, পরে দু'রাকআত, মাগরিবের পরে দু'রাকআত, ইশার পরে দু'রাকআত সুন্নাত) আদায় করে সে জান্নাতে যাবে:

অর্থ: “নবী সাঃ-এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিদিন ফরয ব্যতীত বার রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় করবে” (মুসলিম ১/৭২৮)

আত্মীয়তার সম্পর্ক নিয়ে উক্তি
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী জান্নাতে

অর্থ: “আবু আয্যুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি নবী (সাঃ) এর নিকট এসে বলল: আমাকে এমন কোনো আমলের কথা বলেন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। তিনি বললেন: আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার করবে না।

নামাজ কায়েম করো, যাকাত আদায় করো, আর আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, যখন লোক ফিরে যেতে লাগল তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন: তাকে যা করতে বলা হলো যদি সে এর ওপর আমল করে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম ১/১৩)

ক্ষুধার্তকে খাওয়ানোর সওয়াব জান্নাতে যাবে

মাসআলা-৩৩৯: চরিত্রবান, তাহাজ্জুদগুজার, অধিক পরিমাণে নফল রোযা আদায়কারী ও অন্যকে খাদ্যদানকারী জান্নাতে যাবে:

তিনি বললেন: ঐ ব্যক্তির জন্য যে ভাল কথা বলে, অন্যকে আহার করায়, অধিক পরিমাণে নফল রোযা রাখে, আর যখন লোকেরা আরামে নিদ্রারত থাকে তখন উঠে নামাজ আদায় করে।” (তিরমিযী ৪/২৫২৭)

ন্যায়পরায়ণ শাসক জান্নাতী হবে

মাসআলা-৩৪০: ন্যায়পরায়ন বাদশা, অপরের প্রতি অনুগ্রহকারী, নরম অন্তর, কারো নিকট কোনো কিছু চায় না এমন ব্যক্তিও জান্নাতে যাবে:

অর্থ: “ইয়াজ বিন হিমার মুজাসেয়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: তিন প্রকারের লোক জান্নাতে যাবে। ন্যায় পরায়ন বাদশা, সত্যবাদী, নেক আমল কারী, আর ঐ ব্যক্তি যে প্রত্যেক আত্মীয়ের সাথে এবং প্রত্যেক মুসলমানের সাথে দয়া করে। ঐ ব্যক্তি যে লজ্জাস্থানকে সংরক্ষণ করে এবং বিনা প্রয়োজনে কারো নিকট কোনো কিছু চায় না।” (মুসলিম)

ইসলামকে স্বীয় দ্বীন হিসেবে বিশ্বাসকারী জান্নাতে

মাসআলা-৩৪১: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনায় আনন্দ অনুভব কারী, ইসলামকে সন্তুষ্টচিত্তে স্বীয় দ্বীন হিসেবে বিশ্বাসকারীও জান্নাতে যাবে:

অর্থ: “আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি বলে যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ আমার-কে নবী হিসেবে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।” (আবু দাউদ)

সন্তানের প্রতি পিতা মাতার দায়িত্ব ও কর্তব্যকারী জান্নাতী হবে

মাসআলা-: দুই বা দুয়ের অধিক কন্যাকে সু-শিক্ষা দানকারী এবং বালেগা হওয়ার পর তাদেরকে সুপাত্রে পাত্রস্থকারী ব্যক্তিও জান্নাতী হবে:

তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজের ফজিলত
ওযুর পর (তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজ) রীতিমত আদায়কারীও জান্নাতী হবে:

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফজরের নামাযের পর বেলাল (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন হে বেলাল! ইসলাম গ্রহনের পর তোমার এমনকি আমল আছে যার বিনিময়ে তুমি পুরস্কৃত হওয়ার আশা রাখ?

বেলাল (রাঃ) বললো: আমি এর চেয়ে অধিক কোনো আমল তো দেখছি না যে, দিনে বা রাতে যখনই আমি ওজু করি তখনই যতটুকু আল্লাহ তাওফীক দেন ততটুকু নফল নামাজ আমি আদায় করি। (বুখারী ও মুসলিম ৪/২৪৫৮)

যথাযথ নামাজি, স্বামীর অনুগত স্ত্রী জান্নাতী হবে:

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমযান মাসে রোযা রাখে, স্বীয় লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে, স্বীয় স্বামীর অনুগত থাকে কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে যে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি তা দিয়ে তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।” (ইবনে হিব্বান)

মাসআলা-৩৪৫: নবীরা জান্নাতী, শহীদরা জান্নাতী, মৃত্যুবরণকারী নবজাতক শিশু জান্নাতী জান্নাতী হবে:

অর্থ: “হাসনা বিনতে মুয়াবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমাকে আমার চাচা এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: আমি নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছি যে, কোনো ধরনের লোকেরা জান্নাতী হবে? তিনি বললেন: নবীরা জান্নাতী, শহীদরা জান্নাতী, মৃত্যুবরণকারী নবজাতক শিশু জান্নাতী, (জাহিলিয়াতের যুগে) জীবন্ত প্রথিত শিশু জান্নাতী।” (আবু দাউদ ৩/১৫২১)

আল্লাহর পথে জিহাদকারী জান্নাতে

অর্থ: মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ করেছে যতক্ষণ কোন উটের দুধ দোহন করতে সময় লাগে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।” (তিরমিযী ৪/১৬৫৭)

মুত্তাকী এবং চরিত্রবান লোক জান্নাতে যাবে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো কোনো আমলের কারণে সর্বাধিক লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে? তিনি বললেন: তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) ও উত্তম চরিত্র।” (তিরমিযী ৪/২০০৪)

এতিম পালনের ফজিলত পালনকারী জান্নাতে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন ইয়াতীমের লালন পালনকারী, চাই ইয়াতীম তার আত্মীয় হোক আর অনাত্মীয় ও আমি জান্নাতে এ দু'আঙ্গুলের ন্যায় এ বলে তিনি তাঁর দু'আঙ্গুলকে একত্র করে দেখালেন যে এভাবে এক সাথে থাকবো। ইমাম মালেক (রহঃ) শাহাদাত ও মধ্যাঙ্গুলের প্রতি ইশারা করে দেখিয়েছেন।” (মুসলিম ৪/২৯৮৩)

যার হজ্জ কবুল হয়েছে সে জান্নাতী হবে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: এক ওমরা থেকে অপর ওমরার মাঝে যে পাপ করা হয়, পরবর্তী ওমরা তার জন্য কাফ্ফারা। আর কবুল হজ্জের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত।” (বুখারী ৩/১৭৭৩ও মুসলিম)

মসজিদ নির্মাণের ফজিলত মসজিদ নির্মাণকারী জান্নাতী
লজ্জাস্থানের হেফাজত ও জিহ্বা সংরক্ষণকারী জান্নাতী

অর্থ: “সাহাল বিন সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি তার দাড়ী ও গোফের মধ্যবর্তী স্থান (মুখ) এবং তার উভয় পায়ের মধ্যবর্তীস্থান (লজ্জা স্থান) সংরক্ষণের জিম্মা গ্রহণ করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মা গ্রহণ করবো।" (বুখারী ৮/৬৪৭৪)

প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য উত্তম আচরণকারী জান্নাতী

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! ওমুক মহিলা দিনে রোযা রাখে রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে, কিন্তু সে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়, নবী (সাঃ) বললেন: সে জাহান্নামী, অতঃপর সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলো যে, অন্য এক মহিলা শুধু ফরয নামাজ আদায় করে, আর পনিরের এক টুকরা করে তা দান করে, কিন্তু সে তার প্রতিবেশীকে কোনো কষ্ট দেয় না। তিনি বললেন: সে জান্নাতী।” (আহমদ)"

আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত
আল্লাহর নিরানব্বই নাম মুখস্তকারী জান্নাতী হবে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহর এক কম একশত অর্থাৎ, নিরানব্বইটি নাম আছে, যে ব্যক্তি তা মুখস্ত করবে সে জান্নাতে যাবে।” (তিরমিযী ৫/৩৫০৭)

সালামের উত্তর দেওয়া কি বেশি বেশি সালাম বিনিময়কারী জান্নাতী হবে

অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: হে মানবমন্ডলী! সালাম বিনিময় করো, মানুষকে আহার করাও, যখন মানুষ ঘুমন্ত থাকে তখন নামাজ পড়, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী)

রোগী দেখার শোনাকারী জান্নাতী হবে

অর্থ: সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: রুগীর দেখাশোনাকারী যতক্ষণ পর্যন্ত ফিরে না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত সে জান্নাতের বাগানে থাকে।” (মুসলিম ৪/২৫৬৮)

কালেমা শাহাদাত এর ফজিলত পাঠকারী জান্নাতে

যে ব্যক্তি দৈনিক সঠিকভাবে ওযু করার পর কালেমা শাহাদাত পাঠ করে সে ব্যক্তি জান্নাতী হবে।

অন্ধ হয়ে যায় ধৈর্যধারণ করে সে জান্নাতী ধৈর্য সফলতার চাবিকাঠি

নবিজী সাঃ বলেন, মহান আল্লাহ বলেন, মানুষের চোখ অন্ধ করে আমি পরীক্ষা করি, আর সে তাতে ধৈর্যধারণ করে তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি।” (বুখারী ৭/৫৬৫৩)

পিতা মাতার হক সম্পর্কে ঘটনা সেবাকারী জান্নাতী হবে

অর্থ: “আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুলণ্ঠিত হোক, ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুলণ্ঠিত থেকে, ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুলণ্ঠিত হোক, যে তার পিতা-মাতাকে বা তাদের কোনো একজনকে বা উভয়কে বৃদ্ধ বয়সে পেল অথচ তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ করতে পারলো না।” (মুসলিম ৪/২৫৫১)

মুসলমানদের কষ্টদায়ক বস্তু সরানো জান্নাতে

অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: একটি গাছ মুসলমানদেরকে কষ্ট দিতে ছিল, তখন এক ব্যক্তি এসে তা কেটে দিল, এর বিনিময়ে সে জান্নাত লাভ করল” (মুসলিম)

রোগে ধৈর্যধারণকারী জান্নাতে হবে

আমি বললাম কেন নয়, তিনি এক মহিলার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন: গত কাল যে মহিলাটি, নবী (সাঃ) -এর নিকট এসে বললো: যে, আমি মৃগী রুগী, আর এ রোগে আক্রান্ত হলে আমার সতর খুলে যায়,

ধৈর্য সফলতার চাবিকাঠি তুমি জান্নাত লাভ করবে

তাই আপনি কি আমার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করবেন যেন আল্লাহ আমাকে সুস্থ করেন? তখন ঐ মহিলা বললো: আমি ধর্য্যধারণ করবো। কিন্তু সাথে আবেদনও করছি যে এ রোগে আক্রান্ত হলে আমার সতর খুলে যায়, আপনি আমার জন্য দুআ করুন যাতে আমার সতর না খুলে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার জন্য এ দুআ করলেন।” (বুখারী ৭/৫৬৫২)

মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতকারী জান্নাতে হবে

মাসআলা-: নবী, শহিদ, সিদ্দীক, মৃত্যুবরণ কারী নবজাতক শিশু, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতকারী জান্নাতী হবে:

স্বামীর নির্যাতনে ধৈর্যধারণ কারীনী জান্নাতে হবে

মাসআলা-: স্বীয় স্বামীর ভক্ত, অধিক সন্তান জন্মদানে কষ্ট সহ্যকারী এবং স্বামীর নির্যাতনে ধৈর্যধারণ কারীনী জান্নাতী হবে:

অর্থ: “কা'ব বিন ওজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আমি কি জান্নাতী পুরুষদের কথা তোমাদেরকে বলবো না?

জান্নাতে মহিলাদের ব্যাপারে অবগত করাব না

(তিনি আরো বলেন) আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী মহিলাদের ব্যাপারে অবগত করাব না? সাহাবীরা বললো ইয়া রাসূলুল্লাহ! স্বীয় স্বামী ভক্ত, অধিক সন্তান প্রসবে ধৈর্য ধারণকারী, ঐ সতী নারী যে তার স্বামীর অত্যাচারে ধৈর্যধারণ করে বলে যে, আমার হাত তোমার হাতে, আমি ততক্ষণ পর্যন্ত রাগ করবো না যতক্ষণ না তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হও।” (ত্বাবারানী)

হালাল রিজিক বৃদ্ধির আমলকারীও জান্নাতে

অর্থ: "জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি রাসূলূল্লাহ জিজ্ঞেস করলো ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! যদি আমি ফরয নামাজ আদায় করি, রমযানে রোযা রাখি শরিয়তে হালালকৃত বিষয়সমূহকে হালাল বলে জানি এবং শরিয়তে হারামকৃত বিষয়সমূহকে হারাম বলে জানি, আর এর চেয়ে অধিক আর কোনো কিছু না করি, তাহলে কি আমি জান্নাত পাব? তিনি বললেন: হ্যাঁ। (মুসলিম ১/১৫)

সন্তানের মৃত্যুতে ধৈর্যধারণকারী জান্নাতে হবে

অর্থ: “আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আনসারী মহিলাকে লক্ষ্য করে বললেন: তোমাদের মধ্যে যার তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করে আর সে তাতে সাওয়াবের আশা নিয়ে ধৈর্য্যধারণ করে সে জান্নাতী হবে, তাদের মধ্যে এক মহিলা জিজ্ঞেস করলো ইয়া রাসূলুল্লাহ যদি দু'জন মৃত্যুবরণ করে? তিনি বললেন: দুজন মৃত্যুবরণ করলেও। (মুসলিম ৪/২৬৩২)

আয়াতুল কুরসী পাঠকারী জান্নাতে হবে

অর্থ: “আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জন্য মৃত্যু ব্যতীত জান্নাতে যাওয়ার ব্যাপারে আর কোনো বাধা নেই।” (নাসায়ী, ইবনে হিব্বান, ত্বাবারানী)

la hawla wala quwwata illa billah” বেশি বেশি পাঠকারী জান্নাতে

আমি বললাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ! অবশ্যই অবগত করাবেন, তিনি বললেন: লা-হাওলা ওলা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” la hawla wala quwwata illa billah (বলা)। (ইবনে মাজা ২/৩৮২৫)

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম আস্তাগফিরুল্লাহ” বেশি বেশি পাঠকারী জান্নাতী হবে

উক্ত দোয়া সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠকারীর জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়।" (তিরমিযী ৪/৩৪৬৪)

যে সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে নিহত হয়েছে সে জান্নাতে

অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সালাম বলেছেন: যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে নিহত হলো সে জান্নাতী।” (নাসায়ী ৭/৪০৮৬)

অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত হওয়াতে ধৈর্যধারণ করে সে জান্নাতে

অর্থ: “মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন: তিনি বলেন, সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের মাধ্যমে ভূমিষ্ট হওয়া বাচ্চা, তার মায়ের আঙ্গুল ধরে টেনে টেনে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তবে এ শর্তে যে ঐ মহিলা সাওয়াবের আশায় তাতে ধৈর্য্যধারণ করেছিলো।” (ইবনে মাজাহ ১/১৬০৯)

ন্যায়বিচার কারী বিচারক জান্নাতে হবে

অর্থ: “বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: দু'প্রকারের বিচারক জাহান্নামী হবে, আর এক প্রকার জান্নাতী হবে, ঐ বিচারক যে সত্যকে বুঝেছে এবং ঐ অনুযায়ী বিচার করেছে সে জান্নাতী হবে, আর যে বিচারক সত্যকে বুঝেছে এবং জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে বিচার করেছে এবং ঐ বিচারক যে, কোনো যাচাই বাছাই ব্যতীত বিচার করেছে সেও জাহান্নামী হবে।” (হাকেম)

মাসআলা-৩৭৪: যে ব্যক্তি কোনো মুসলমান ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার ইজ্জত রক্ষার ব্যাপারে ভুমিকা পালন করলো সে জান্নাতী হবে:

কারো নিকট কখনো হাত পাতে না এমন ব্যক্তিও জান্নাতে যাবে

অর্থ: “সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি আমাকে এ বিষয়ে জিম্মাদারী দিবে যে, সে কারো নিকট কখনো হাত পাতবে না আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হবো।” (আবু দাউদ ২/১৬৪৩)

রাগ দমন করার কৌশল ব্যক্তি জান্নাতে

অর্থ: “আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তুমি রাগ করো না তোমার জন্য জান্নাত” (ত্বাবারানী ১/২১)

আসর ফজরের নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি জান্নাতে

মাসআলা-৩৭৭: আসর ও ফজরের নামাজ নিয়মিত জামাতের সাথে আদায়কারী ব্যক্তি জান্নাতী হবে:

অর্থ: “আবুবকর বিন আবু মূসা আল আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি দু'টি ঠাণ্ডার সময় নামাজ আদায় করে সে জান্নাতী হবে।” (বুখারী ১/৫৭৪)

যোহরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নাত আদায়কারী ব্যক্তি জান্নাতে

মাসআলা-৩৭৮: যে ব্যক্তি যোহরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নাত নিয়মিত আদায় করে সে ব্যক্তি জান্নাতী হবে:

অর্থ: “উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি যোহরের পূর্বে চার রাকআত নামাজ (নিয়মিত) আদায় করে তার ওপর আল্লাহ জাহান্নাম হারাম করেছেন।” (তিরমিযী ২/৪২৭)

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায়কারী জান্নাতী হবে

মাসআলা-৩৭৯: একাধারে চল্লিশ দিন পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায়কারী জান্নাতী হবে:

আরশের ছায়া সাত ব্যক্তি
নিম্নোক্ত সাত ব্যক্তি জান্নাতী হবে:

(১) ন্যায়বিচারক,

(২) যৌবন কালে ইবাদত কারী,

(৩) মসজিদের সাথে অন্তরের সম্পর্ক স্থাপনকারী,

(৪) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে অপরের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকারী,

(৫) আল্লাহর ভয়ে একান্ত ক্রন্দনকারী,

(৬) আল্লাহর ভয়ে সুন্দরী রমণীর খারাপ প্রলোভনকে ত্যাগকারী,

(৭) গোপনে আল্লাহর পথে দান কারী:

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই একে অপরকে ভালবাসে এবং এ উদ্দেশ্যে একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। ঐ ব্যক্তি যে একা একা আল্লাহর স্মরণে অশ্রুপ্রবাহিত করে, ঐ ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশের মহিলা ব্যভিচারের জন্য আহ্বান করলো আর সে তার উত্তরে বললো: আমি আল্লাহকে ভয় করি। ঐ ব্যক্তি যে এমনভাবে দান করে সে তার বাম হাত জানে না যে তার ডান হাত কি দান করেছে।” (তিরমিযী ৪/২৩৯১)

ক্ষমাকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন ক্ষমাকারী জান্নাতে

সৃষ্টি জীবের সামনে উপস্থিত করে, তাকে হুরেইন বাছাই করার স্বাধীনতা দিবেন, তাদের মধ্যে যাকে খুশি তাকে সে বিয়ে করবে।” (আহমদ ২৪/১৫৬৩৭)

অহংকার, খিয়ানত, ঋণ থেকে মুক্ত ব্যক্তি জান্নাতী হবে

অর্থ: “সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি অহংকার, খিয়ানত, ঋণ থেকে মুক্ত থাকে সে জান্নাতী হবে।” (তিরমিযী ৪/১৫৭২)

আযানের উত্তর দেওয়ার ফজিলত জান্নাতী

যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাস সহ মুয়ায্যনের ন্যায় বলবে সে জান্নাতী হবে।” (নাসায়ী ২/৬৭৪)

পোস্ট ট্যাগঃ

ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
ছোট ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
সকল ইস্তেগফার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
ইস্তেগফার আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ
ইস্তেগফার দুআ বাংলা
ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ
দোয়া ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ
ইস্তেগফার বাংলা
ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ
ইস্তেগফার এর দোয়া
ইস্তেগফার দোয়া বাংলা
সাইয়েদুল ইস্তেগফার তওবা

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url