হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল

হযরত ওসমান রাঃ এর শাসন, আলী রাঃ এর জীবনী- Hazrat Osman RA, the biography of Ali RA

হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল

দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর আল-ফারূক (রাঃ) ইন্তেকালের পূর্বে ছয়সদস্যের যে কমিটি গঠন করে 

দিয়ে যান সে কমিটি দীর্ঘ আলোচনার পর হযরত ‘ওসমান বিন ‘আফ্ফান (রাঃ) কে ইসলামী রাষ্ট্রের তৃতীয় খলীফা নির্বাচিত করেন। হযরত 'ওসমান (রাঃ) হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর তুলনায় ছয় বছরের ছোট ছিলেন। তিনি ছিলেন কুরাইশ বংশের উমাইয়াহ শাখাগোত্রের লোক। তিনি কাপড়ের ব্যবসা করতেন এবং অত্যন্ত ধনী ছিলেন। তাঁর খেতাব ছিল 'আল-গানী' (ধনী)। 

হযরত ওসমান (রাঃ) হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর স্ত্রী রুকাইয়াকে সাথে নিয়ে আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। হুদায়বিয়াহর আলোচনার সময় তিনি হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হযরত ওসমান (রাঃ) ইসলামী সেনাবাহিনীর অফিসারদের উদ্দেশে যে পত্র পাঠান তা থেকেই তাঁর রাষ্ট্রীয় নীতি সম্বন্ধে ধারণা করা যায়। তিনি লিখেন:

তোমরা হচ্ছ দুশমনদের হামলা থেকে ইসলামের হেফাযতকারী। উমর এমন কতগুলো হুকুম জারী করেছিলেন যেগুলো আমার জানা আছে। প্রকৃত পক্ষে আমার সাথে আলোচনা করেই সেগুলো লেখা হয়েছিল।

সাবধান! আমি তোমাদের দ্বারা কোন সীমালঙ্ঘন হয়েছে বলে রিপোর্ট শুনতে চাই না। তোমরা যদি তাই কর তাহলে তোমাদের জায়গায় অপেক্ষাকৃত উত্তম কাউকে পাঠানো হবে। সব সময় তোমাদের নিজেদের আচরণের দিকে খেয়াল রেখো, আল্লাহ্ তা'আলা আমার তত্ত্বাবধানে যা কিছু ন্যস্ত করেছেন আমি তার ওপর নযর রাখব।”

একবার তিনি কর আদায়কারীদের উদ্দেশে নিম্নোক্ত বক্তব্য রাখেন:

“আল্লাহ্ তা'আলা সব কিছুই সুন্দর করে ও ভারসাম্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন। তিনি কেবল তা-ই কবুল করেন যা সঠিক ও ন্যায়সঙ্গত। আস্থা স্থাপন, আস্থা সৃষ্টি করে। এটা কড়াকড়িভাবে মেনে চলো এবং যারা তা করতে ব্যর্থ তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। 

বিশ্বস্ততা, বিশ্বস্ততা নিয়ে আসে। ইয়াতীমদের ওপর এবং তুমি যাদের সাথে অঙ্গীকার করেছ তাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করো না। যারা তা করবে আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন।”

হযরত সা'বিন আবি ওয়াক্কাস (রাঃ)

ইরাকে কুফা আমীর (প্রশাসক/গভর্নর) ছিলেন। তিনি বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় কোষাগার) থেকে নেয়া একটি ঋণ ফেরত দেন নি বিধায় হযরত ‘ওসমান (রাঃ) তাঁকে বরখাস্ত করেন এবং তাঁর জায়গায় আল-মুগীরাহকে নিয়োগ করেন।

হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর আমলে আযারবাইজান ও আর্মেনিয়ার বিদ্রোহ দমন করা হয়। এছাড়া আশ্-শামের প্রাদেশিক আমীর মুআবিয়াহ মিসরের প্রাদেশিক আমীর ইবনে আবি সারহ-এর সহায়তায় নৌবাহিনী নিয়ে সাইপ্রাসে হামলা চালান এবং দ্বীপটিকে ইসলামী শাসনের আওতায় নিয়ে আসেন। ত্রিপোলীসহ উত্তর আফ্রিকার বিশাল এলাকাও এ সময় ইসলামী রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়।

অন্যদিকে রোমানরা যদিও অতীতে কয়েকবার মুসলিম বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়েছিল তথাপি তারা হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর শাসনামলে আরেকবার তাদের হারানো এলাকা পুনর্দখল করার চেষ্টা করে।

পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের (বাইযান্টাইনের) সম্রাট কনস্টান্টাইন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন এবং পাঁচ থেকে ছয় হাজার সৈন্যের নৌবাহিনীসহ আলেকজান্দ্রিয়ায় আক্রমণ করেন। কিন্তু আমীর ইবনে আবি সার্হ ও আমীর মুয়াবিয়ার নেতৃত্বে নবগঠিত মুসলিম নৌবাহিনীর নিকট রোমান নৌবাহিনী পরাজিত হয়।

হযরত ওসমান (রাঃ)-এর খিলাফতের শেষ ছয়বছর ছিল আভ্যন্তরীন বিরোধ ও গোলযোগপূর্ণ। এ গোলযোগ শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে পরিণত হয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে হযরত ওসমান (রাঃ) উচ্ছৃঙ্খল ক্রুদ্ধ জনতার হামলায় নিহত হন।

হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর খিলাফত ১২ বছর স্থায়ী হয়। তিনি ৩৫ হিজরী সালের (৬৫৬ খৃস্টাব্দে) ১৭ই যিলহজ্জ শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন।

হযরত ‘ওসমান (রাঃ) অত্যন্ত দয়ালু ছিলেন। তিনি তাঁর সরলতা ও দয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন নি। সব চেয়ে বড় কথা, তাঁর নরম প্রকৃতির কারণে তাঁর প্রশাসন হযরত 'ওমর (রাঃ)-এর প্রশাসনের মত ভাল ছিল না। 

হযরত 'ওসমান (রাঃ) খুবই মহানুভব ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সব সময়ই ইসলামের জন্য ও ক্রীতদাস মুক্ত করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতেন। তিনি অত্যন্ত দ্বীনদার লোক ছিলেন। তিনি সব কিছুর উর্ধ্বে আল্লাহকে ভয় করতেন ও ভালবাসতেন। কুর'আন মজীদকে কিতাবের আকারে (মুছ্‌হাফ) পেশ করা তাঁর খিলাফাত-কালের সবচেয়ে বড় অবদান।

হযরত আলী রাঃ এর জীবনী

“আমি আপনাদের মধ্যে সকলের ছোট; আমি একজন বালক হতে পারি, আমার পা যথেষ্ট মযবূত না হতে পারে, কিন্তু হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমি আপনার সাহায্যকারী হব। যে আপনার বিরোধিতা করবে আমি তাঁর বিরুদ্ধে জানী-দুশমনের মত লড়াই করব।” 

এ কথাগুলো আল্লাহর রাসূল (সাঃ) হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর চাচাত ভাই হযরত আলী (রাঃ)-এর। তিনি যখন দশ বছরের বালক তখন এ কথাগুলো বলেছিলেন। 

হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কুরাইশ গোত্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের জন্যে যে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন সেখানে হযরত আলী (রাঃ) এ কথাগুলো বলেছিলেন।

হযরত ‘আলী বিন আবি তালিব (রাঃ) ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হিজরতের রাতে কাফিরদের ঘাতকদল যখন তাঁর ঘর অবরোধ করে রেখেছিল তখন তাঁকে নিরাপদে মক্কা ত্যাগে সহায়তা করার জন্যে হযরত 'আলী (রাঃ) তাঁর বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন। 

এই হযরত আলী (রাঃ)ই হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর পরে ইসলামী রাষ্ট্রের চতুর্থ খলীফা নির্বাচিত হন।

হযরত ‘আলী (রাঃ) আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর কন্যা হযরত ফাতিমাহ (রাঃ) কে বিবাহ করেন। তাঁদের ঘরে তিনটি পুত্রসন্তান- হযরত হাসান, হযরত হুসাইন হযরত মুহাসসিন (রাঃ) ও দু'টি কন্যাসন্তান- হযরত যয়নাব হযরত উম্মে কুলসুম (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন। 

হযরত মুহাসসিন (রাঃ) শৈশবেই ইন্তেকাল করেন। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত ইমাম হাসান (রাঃ) ও হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) কে খুবই ভালবাসতেন।

হযরত ‘আলী (রাঃ) বদর, আহযাব ও খায়বার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। খায়বার যুদ্ধে মূলতঃ হযরত 'আলী (রাঃ)-এর দুর্বার হামলার কারণেই ইয়াহুদীরা পরাজিত হয়েছিল। হযরত 'আলী (রাঃ) হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জীবনকালে এবং তাঁর ইন্তেকালের পরে, প্রথম তিন খলীফার খিলাফাত-কালে বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

অত্যন্ত জটিল ও সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে হযরত 'আলী (রাঃ) খলীফা নির্বাচিত হন। ঐ সময় তৃতীয় খলীফা হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর নিহত হবার পর মুসলিম উম্মাহ আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বহুধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় তিনি খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

তিনি প্রথমেই তাঁর প্রশাসনকে সুসংহত করেন এবং হযরত ওসমান (রাঃ)-এর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করেন। কিন্তু হযরত ‘ওসমান (রাঃ)-এর সমর্থকরা তাঁর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে খলীফার কথা শুনতে রাযী ছিলেন না।

বস্তুতঃ হযরত 'ওসমান (রাঃ)-এর হত্যাকাণ্ড ইসলামের ইতিহাসে মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনে। এ হত্যাকাণ্ড একক, ঐক্যবদ্ধ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও শক্তিশালী মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত করে ফেলে। উপদলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়। 

এর ফলে মুসলিম ঐক্যের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। যে শক্তিশালী ইসলামী বাহিনী একদিন বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এবং তৎকালীন পরাশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের স্বৈরাচারী শোষণ-নির্যাতনের হাত থেকে মযলুম মানুষদেরকে উদ্ধার করেছিল তারা এখন গুরুতরভাবে আভ্যন্তরীণ সংঘাতে লিপ্ত হয়ে পড়ল।

হযরত আলী রাঃ এর মৃত্যু

প্রাজ্ঞ শাসনকর্তা হযরত আলী (রাঃ) কে তাঁর বেশীর ভাগ সময়ই বিভিন্ন জঙ্গী মুসলিম উপদলকে দমন করার জন্যে ব্যয় করতে হয়। তিনি তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সাথে আপোষরফা করেন। কিন্তু এতে তিনি তেমন একটা সফল হতে পারেন নি। 

ফলে মুসলিম উম্মাহ বিভক্ত হয়ে যায় এবং এর পরিণতি হয় খুবই বিপর্যয়কর এ ধরনের চরম সংঘাতমুখর অবস্থায় ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত 'আলী (রাঃ) ফজরের সালাত আদায়ের সময় ইবনে মুজাম নামে জনৈক ঘাতকের তরবারীর আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। এর ফলে তিনি হিজরী ৪০ সালের (৬৫৯খৃস্টাব্দে) ২০শে রামাদান শুক্রবার ইন্তেকাল করেন।

হযরত ‘আলী (রাঃ) চার বছর নয় মাস ইসলামী রাষ্ট্রের শাসন পরিচালনা করেন। তাঁর পুরো শাসনকালই ছিল গোলযোগপূর্ণ।

হযরত ‘আলী (রাঃ) অত্যন্ত সহজ সরল, অনাড়ম্বর ও সংযমী জীবন যাপন করতেন। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী। তেমনি ন্যায়বিচারের জন্যে প্রয়োজনীয় দূরদৃষ্টির ক্ষেত্রে ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

হযরত 'আলী (রাঃ) জ্ঞানার্জন ভালবাসতেন। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকে বাবুল 'ইলম (জ্ঞানের দরজা) খেতাব দিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি 'মুতাযা' (আল্লাহর সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত) ও ‘আসাদুল্লাহ্' (আল্লাহর সিংহ) হিসেবেও অভিহিত ছিলেন।

হযরত আলী রাঃ এর গুরুত্বপূর্ণ বাণী:

  • ***যে নিজেকে চিনেছে সে তার স্রষ্টাকে চিনেছে।
  • ***তুমি যদি আল্লাহকে ভালবাস তাহলে তোমার অন্তর থেকে দুনিয়ার মহব্বতকে উৎপাটিত কর।
  • ***আল্লাহর ভয়ই মানুষকে সুরক্ষিত করে।
  • ***কি করে তুমি এ দুনিয়ার জীবনের জন্যে আনন্দ করতে পার যা প্রতি ঘন্টায়ই অধিকতর সংক্ষিপ্ত হচ্ছে?
এক ঘন্টার বিপথগামিতা বিশ্বজোড়া সুখ্যাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তিনটি ভুল জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে:

ক) প্রতিহিংসা পরায়ণতা 
খ) পরশ্রীকাতরতা 
গ) খারাপ চরিত্র।

  • ***এই প্রবাহমান জীবনে যে পার্থিব ধনসম্পদের জন্যে গর্বিত সে মুর্খ।
  • ***আনন্দের পরেই আসে অশ্রু।
  • ***মানুষের প্রতিটি নিঃশ্বাসই হচ্ছে মৃত্যুর দিকে এক একটি পদক্ষেপ
  • ***সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে তার অধীনস্তদের উপকার করে।
  • ***যে নিজেকে সর্বোত্তম মনে করে সে নিকৃষ্টতম।
  • ***সেই ব্যক্তি ঘৃণিত যে ভাল কাজের জবাবে মন্দ করে।
  • ***সদগুণ সাফল্যের চাবিকাঠি I
  • ***জ্ঞানীরা মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকেন;
  • ***অজ্ঞ লোকেরা বেঁচে থাকলেও আসলে মৃত

  • ***অর্জিত জ্ঞানের তুল্য কোন ধনভাণ্ডার নেই।
  • ***জ্ঞানই হচ্ছে বিচক্ষণতা এবং শিক্ষিত লোকেরাই বিচক্ষণ হয়ে থাকে।
  • ***অভিজ্ঞতা হচ্ছে অর্জিত জ্ঞান।
  • ***যে কখনো নিজেকে সংশোধন করে না সে কখনোই অন্যকে সংশোধন করতে পারে না।
  • ***শোন, তাহলে তুমি নিজেকে শিখাতে পারবে; নীরব থাক, আর তাতে তোমার কোন ঝুঁকি নেই।
  • ***যে আল্লাহ্ নি'আমতসমূহ নিয়ে চিন্তা করে সেই সফল হয়।
  • ***ক্যান্সার শরীরের যতখানি ক্ষতি করে অজ্ঞতা মানুষের তার চেয়েও বেশী ক্ষতি করে।
  • ***নির্বোধ লোকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ঘন ঘন মত পরিবর্তন।
  • ***যখন কথা বলার উপযুক্ত সময় নয় তখন কিছুতেই কথা বলো না।
  • ***গীবত থেকে সাবধান থাক; গীবত তিক্ততার বীজ বপন করে এবং আল্লাহ্ ও মানুষ থেকে তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।

  • ***সব চেয়ে বড় সততা হচ্ছে ওয়াদা রক্ষা করা।
  • ***মিথ্যা বলার চেয়ে বোবা হওয়া ভাল।
  • ***চাটুকারিতা করো না; এটা ঈমানের পরিচায়ক নয়।
  • ***মুনাফিকের জিহ্বা পরিষ্কার (কথা সুন্দর), কিন্তু তার অন্তর রোগগ্রস্ত।
  • ***খারাপ লোকের সাথী হবার তুলনায় একা থাকা ভাল।
  • ***যে ভাল কাজের প্রচলন করে সে তার প্রতিদান পাবে।

অবশেষেঃ

হযরত আবু বকর আছ্-ছিদ্দিক, হযরত ‘ওমর আল-ফারূক, হযরত ‘ওসমান আল-গানী ও হযরত ‘আলী আল-মুরতাযা (রাদিয়াল্লাহু 'আনহুম) পর পর হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর উত্তরসূরি ও স্থলাভিষিক্ত (খলীফা) হন। এই চারজন খলীফা ‘খুলাফাউর রাশিদূন’ বা সঠিক পথে চালিত খলীফাগণ' হিসেবে পরিচিত।

এই চারজন খলীফা সর্বমোট ৩০ বছর ইসলামী খিলাফতের শাসনক্ষমতা পরিচালনা করেন। তাঁরা পুরোপুরিভাবে কুর'আন মজীদ ও হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী নিজ নিজ যুগের জনগণকে শাসন করেছেন। একারণেই তাঁদেরকে খুলাফায়ে রাশিদুন বলা হয়। 

যদিও এসময়ে কিছু অপ্রীতিকর ও বিশৃঙ্খলামূলক ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল তথাপি ইসলামী হুকুমাতের এ সময়টি ছিল মানবজাতির ইতিহাসে ন্যায়বিচারের অতুলনীয় স্বর্ণযুগ। এ সময়ে ইসলামী মূলনীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হত।

খুলাফায়ে রাশিদূনের জীবনকাহিনী নিয়ে বিস্তারিত ও গভীর আলোচনা করলে তা আমাদের সামনে ইসলামী জীবনবিধান সম্বন্ধে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার এক বিরাট ভাণ্ডার উন্মুক্ত করে দেবে, যা মানবজাতির বর্তমান ও ভবিষ্যত সমস্যাবলীর সমাধান করতে সক্ষম। 

বস্তুতঃ ইসলামী শিক্ষা থেকে প্রতিশ্রুত কল্যাণ লাভ করতে হলে আমাদেরকে আন্তরিকতার সাথে তা অনুসরণ বা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর কেবল মুখের কথায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও সৌন্দর্যের প্রশংসা করলেই ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠিত হবে না। 

যদিও সকল প্রকার অত্যাধুনিক প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে ইসলামকে তুলে ধরা খুবই প্রয়োজন, তথাপি কেবল ইসলামের বাস্তব অনুশীলনই কার্যকরভাবে ইসলামী জীবনব্যবস্থা বাস্তবায়নের সঠিক পথ।

তাই এসো, আমরা ইসলামকে জানা, বুঝা, অনুসরণ ও প্রচারের সিদ্ধান্ত নিই। কেবল তাহলেই আমরা নিজেরাও সুখ ও শান্তির সন্ধান পাব এবং সমগ্র মানবজাতিও অশান্তি ও জুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে।

পোস্ট ট্যাগঃ

হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল কত বছর
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন সংস্কার আলোচনা কর
ওমরের শাসন আমল
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন কাল
ওমর রাঃ এর শাসনামল
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন ব্যবস্থা

হযরত ওমর রাঃ এর জীবনী

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url