জাহান্নাম কাকে বলে

জাহান্নাম কাকে বলে

জাহান্নাম কাকে বলে

জাহান্নাম অর্থ ভয়ংকর শাস্তির জায়গা বা গর্ত যেখানে সব ধরনের শাস্তি ছাড়া আর কিছু নাই। জাহান্নাম মানে ভয়, কষ্ট, যন্ত্রণা, নির্যাতন। তাই মহান আল্লাহপাক যাতে আমাদেরকে জাহান্নামে না দেই সেই জন্য আমরা সর্বদা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাবো।

জাহান্নাম কাকে বলে?

জাহান্নাম হলো চির শাস্তির জাগা বা চির দুঃখের কষ্টের জায়গা। আখেরাতে যেভাবে আল্লাহপাক নেক বান্দাগণকে বেহেশতের ব্যবস্থা রয়েছে সেভাবে খারাপ পাপীগণের জন্য রয়েছে শ্রেষ্ঠ শাস্তির জায়গা জাহান্নাম। জাহান্নামকে আবার আগুনও বলা হয়ে থাকে।

জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা

আল্লাহর দয়া অনুগ্রহ ব্যতীত কেউ জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা পাবে না:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ)  নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে তার আমল জান্নাতে প্রবেশ করাবে, জিজ্ঞেস করা হলো আপনি? হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ! তিনি বললেন: আমিও না, তবে যদি আমার রব আমাকে দয়া করে জান্নাত দেন।” (মুসলিম ২৮১৬)'

জাহান্নামের আজাব

তাওহীদ বাদী, মুত্তাকী, সৎ লোকদের সাক্ষি, কারও জন্য জান্নাতী বা জাহান্নামী হওয়ার পরিচয়:

আরবির বাংলা অর্থ: “আলী বিন বকর বিন যুহাইর আস সাকাফী (রাঃ)  তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন আমাদেরকে নবী (সাঃ)  একদা তায়েফের নিকটবর্তী নাবাওয়া বা বানাওয়া নামক স্থানে একটি খুতবা প্রদান করলেন। 

তিনি বললেন : খুব শীঘ্রই এমন এক সময় আসবে যখন তোমরা জান্নাতী বা জাহান্নামী সম্পর্কে জানতে পারবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ! তা কিভাবে? তিনি

বললেন: লোকদের ভাল বা মন্দ প্রশংসার মাধ্যমে। তোমরা একে অপরের ব্যাপারে আল্লাহর সাক্ষী হবে।” (ইবনে মাযা ৪২২১)

জাহান্নামী ব্যক্তি যে মানুষের

আরবির বাংলা অর্থ: “ইবনে আব্বাস (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)  বলেছেন: জান্নাতী ব্যক্তি যে মানুষের নিকট থেকে স্বীয় প্রশংসা শুনতে শুনতে তার কান ভরে যাবে। আর জাহান্নামী ব্যক্তি যে মানুষের নিকট থেকে নিজের দোষ শুনতে শুনতে তার কান ভরে যাবে।” (ইবনে মাযা ৪২২৪)

জাহান্নামের শাস্তি

প্রচন্ড গরম অধিক ঠান্ডা জাহান্নামের দু'টি শ্বাসের কারণে হয়: গরম শ্বাস জাহান্নামের গরম অংশ থেকে আর ঠান্ডা শ্বাস জাহান্নামের ঠান্ডা অংশ থেকে হয়ে থাকে।

মু'মিনের জন্য জ্বর জাহান্নামের অংশ

আরবির বাংলা অর্থ: “আয়েশা (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)  বলেছেন: জ্বর প্রত্যেক মু'মিনের জন্য জাহান্নামের অংশ।” (বাযযার)

জাহান্নামের শাস্তি

কিছু কিছু কালিমা পড়া মুসলমানদের সমস্ত শরীর আগুন জ্বালিয়ে দিবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “জাবের (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: তাওহীদ বাদীদের মধ্য থেকে কিছু লোককে জাহান্নামের শাস্তি দেয়া হবে। এমন কি তারা আগুনে জ্বলে কয়লা হয়ে যাবে। এরপর তারা আল্লাহর রহমত লাভ করবে, তখন তারা জাহান্নাম থেকে বের হবে।

জাহান্নামের শাস্তি

এরপর তাদেরকে জান্নাতের দরজায় এনে বসানো হবে, জান্নাতবাসীরা তাদেরকে পানি প্রবাহিত করে দিবে, তখন তারা উঠে দাঁড়াবে, যেমন কোনো বীচ বন্যার পানিতে ভেসে এসে চারা জন্মায়। এরপর তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী ২৫৯৭)'

জাহান্নামের স্থান সমুদ্র

আরবির বাংলা অর্থ: “ইয়ালা (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: নিশ্চয়ই সমুদ্র জাহান্নামের স্থান।” (হাকেম)

আর সমুদ্রগুলো যখন উদ্বেলিত করা হবে।” (সূরা ইনফিতার)

জাহান্নাম নিয়ে উক্তি

উভয় আয়াত থেকে একথা প্রমাণিত হয় যে, কিয়ামতের দিন সমস্ত সমুদ্র এক স্থানে একত্র করে দেয়া হবে, আর পানি তার মূল রূপে অর্থাৎদুই ভাগ হাইড্রোজেন এবং এক ভাগ অক্সিজেনে পরিণত করা হবে, যার ফলে আগুন উত্তপ্ত হয়ে উঠবে, উল্লেখ্য হাইড্রোজেন নিজেই আগুন দ্বারা উত্তপ্ত হওয়া গ্যাস। আর অক্সিজেন আগুনকে উত্তপ্ত করতে সহযোগিতা করে।

জাহান্নামের আগুন আরো উত্তপ্ত হয়

এসময় জান্নাত জাহান্নাম উভয়ই মওজুদ আছে। অতএব রাসূলুল্লাহ (সাঃ)  -এর বাণীর অর্থ হতে পারে যে, কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করে সমুদ্রের ওপর রেখে দেয়া হবে। যাতে করে জাহান্নামের আগুন আরো উত্তপ্ত হয়। এরপর সমুদ্রের স্থানে জাহান্নামকে স্থাপিত করা হবে।

(আল্লাহই এর সঠিকতা সম্পর্কে সর্বাধিক অবগত)

জাহান্নামের শাস্তি

. পিপাসার মাধ্যমে শাস্তি

পাপিষ্ঠদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করার পূর্বেই কঠিন পিপাসায় পিপাসার্ত করা হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাব।” (সূরা মারইয়াম ৮৬)

কঠিন পিপাসার কারণে জাহান্নামী জাহান্নাম উত্তপ্ত পানির ঝর্ণার মাঝে চক্কর লাগাতে থাকবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “এটাই সে জাহান্নাম যা অপরাধীরা অবিশ্বাস করত, তারা জাহান্নামের অগ্নি ফুটন্ত পানির মাঝে ছুটাছুটি করবে। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোনো অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?” (সূরা রাহমান ৪৩-৪৫)

জাহান্নামীরা তৃষ্ণার্ত উটের ন্যায়

যাক্কুম খাওয়ার পর জাহান্নামীরা তৃষ্ণার্ত উটের ন্যায় তীব্র পিপাসা অনুভব করবে:

. উত্তপ্ত পানি মাথায় ঢালার মাধ্যমে শাস্তি

কাফিরদের জন্য হবে আরেক ধরনের বেদনাদায়ক আযাব (আর তা হবে এই যে) ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে, “তাকে ধরে টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যখানে এবং ওখানে তার মস্তকে ফুটন্ত পানি ঢেলে তাকে শাস্তি দাও।” (সূরা দুখান ৪৭-৪৮)

জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি

আয়াতের ব্যাখ্যায় নবী (সাঃ)  বলেছেন: “যখন কাফিরের মস্তিষ্কে গরম পানি ঢেলে তাকে শাস্তি দেয়া হবে, তখন পানি তার মাথা থেকে গড়িয়ে শরীরের সমস্ত অঙ্গ-পতঙ্গকে জ্বালিয়ে পায়খানার রাস্তা দিয়ে তা তার পায়ে এসে পড়বে।” (মুসনাদ আহমদ)

জাহান্নামের সর্বনিম্ন আযাব কি

মাথায় ফুটন্ত পানি ঢালার পর সর্বপ্রথম পানি কাফিরের মস্তককে জ্বালিয়ে দিবে,যা তার খারাপ কামনা, বাতিল দর্শন, শিরকি আক্বীদার কেন্দ্রবিন্দু ছিল, যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে ইসলাম মুসলমানদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতো, যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে মুসলমানদের ওপর অত্যাচারের পাহাড় চাপানোর জন্য নানান রকম প্রতারণা করতো।

জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি

যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচার প্রপাগাণ্ডার নিত্য নতুন দলীল তৈরী করতো। যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে বড় বড় পদ পরিকল্পনা তৈরী করতো মস্তিষ্ক থেকেই বেদনাদায়ক শাস্তির সূত্রপাত হবে।

সূরা দুখানে উল্লেখিত আয়াতের শেষে

আরবির বাংলা অর্থ: “স্বাদ গ্রহণ করো, (তুমি পৃথিবীতে) ছিলে অভিজাত মর্যাদাবান।” (সূরা দুখান ৪৯)

উল্লেখিত আয়াত একথা স্পষ্ট করছে যে, বেদনাদায়ক আযাবের হকদার হবে সমস্ত কাফির নেত্রীবর্গ যারা পৃথিবীতে বিশাল শক্তিধর মর্যাদার অধিকারী ছিল, পৃথিবীতে তাদের মর্যাদা বড়ত্ব হবে।

জাহান্নাম নিয়ে উক্তি

আর ক্ষমতার বড়াইয়ে উম্মাদ হয়ে তারা ইসলামকে অবনত করতে এবং মুসলমানদেরকে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে নিঃশ্চিহ্ন করার জন্য সর্বপ্রকার হাতিয়ার ব্যবহার করতে থাকবে। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে কাফির নেত্রীবর্গের চক্রান্ত চালবাজির বর্ণনা এসেছে।

আল্লাহর বাণী জাহান্নামের বিষয়ে

আরবির বাংলা অর্থ: “তারা নবী (সাঃ) এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, আর আল্লাহ নবী (সাঃ) কে বাঁচানোর জন্য তদবীর করেন। আর আল্লাহই দৃঢ় তদবীর কারক।” (সূরা আনফাল ৩০)

অন্যত্র এরশাদ হয়েছে:

আরবির বাংলা অর্থ: “তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করছিল কিন্তু সমস্ত চক্রান্ত আল্লাহর ইখতিয়ারে” (সূরা রাদ ৪২)

সূরা ইবরাহীমে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন:

আরবির বাংলা অর্থ: “তারা ভীষণ চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আল্লাহর নিকট তাদের চক্রান্ত রক্ষিত হয়েছে, তাদের চক্রান্ত এমন ছিল না যাতে পাহাড় টলে যেত” (সূরা ইবরাহীম ৪৬)

নূহ () ৯৫০ বছর পর্যন্ত তাঁর কাওমকে দাওয়াত দেয়ার পর যখন তার প্রভূর নিকট আবেদন পেশ করলেন, তখন আবেদনের একটি বিশেষ অংশ ছিল এই যে,

জাহান্নামের সর্বনিম্ন আযাব কি

আরবির বাংলা অর্থ: “আর তারা ভয়ানক চক্রান্ত করেছে।” (সূরা নূহ ২২)

মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীরা, ইসলামকে পরাজিত করার অপচেষ্টা কারীরা, মুসলমানদেরকে নিঃশ্চিহ্ন কারীদেরকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তির মাধ্যমে অভিবাধন জানাবেন।

জাহান্নামের ঘটনা

নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক আযাব কাফিরদের জন্য, তবে মুসলমানদের দেশসমূহে ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠার পথে চক্রান্তকারী, ইসলামী আদর্শসমূহকে বিদ্রুপকারী, ইসলামের নিদর্শনসমূহকে অবজ্ঞাকারী নায়করা কি বেদনাদায়ক আযাব থেকে মুক্তি পাবে?

জাহান্নামের বর্ণনা

অতএব হে দলপতি! মন্ত্রীত্বের আসনে আসীন ব্যক্তিবর্গ, কোট-কাচারীর শোভা 'মাই লর্ডজ' জাতীয় সংসদসমূহের সম্মানিত প্রধান! আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করুন। ইসলাম বিরুধিতা থেকে বিরত থাকুন, ইসলামী আদর্শ ইসলামী বিধানসমূহের সাথে বিদ্রূপ করা থেকে বিরত থাকুন, আল্লাহ এবং তার রাসূলের সাথে প্রতারণা করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যথায় তাঁর শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে না।

আরবির বাংলা অর্থ: “এবং তোমরা আগুন থেকে বেঁচে থাক যা কাফিরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে।” (সূরা আলে ইমরান ১৩১)

জাহান্নামে কাফিরের মাথায় গরম পানি

জাহান্নামের মাঝখানে নিয়ে গিয়ে কাফিরের মাথায় গরম পানি ঢালা হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: (বলা হবে) ‘ওকে ধর, অতঃপর তাকে জাহান্নামের মধ্যস্থলে টেনে নিয়ে যাও' তারপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানির আযাব ঢেলে দাও। (বলা হবে) —তুমি আস্বাদন কর, নিশ্চয় তুমিই সম্মানিত, অভিজাত' নিশ্চয় এটা তা- যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করতে। (সূরা দুখান ৪৭-৫০)

মুশরিকদের মাথায় এত গরম পানি ঢালা হবে

কাফির মুশরিকদের মাথায় এত গরম পানি ঢালা হবে যে এর ফলে তাদের চামড়া, চর্বি, পেটের ভিতরের নাড়ী-ভূঁড়ি, কলিজা, গুর্দা সব কিছু জ্বলে যাবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “ এরা দু'টি বিবাদমান পক্ষ, যারা তাদের রব সম্পর্কে বিতর্ক করে। তবে যারা কুফরী করে তাদের জন্য আগুনের পোশাক প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর থেকে ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। যার দ্বারা তাদের পেটের অভ্যন্তরে যাকিছু রয়েছে তাও তাদের চামড়াসমূহ বিগলিত করা হবে। (সূরা হাজ্জ ১৯-২০)

উত্তপ্ত পানি কাফিরের মাথায় ঢালা হবে

উত্তপ্ত পানি কাফিরের মাথায় ঢালা হবে যার ফলে তাদের পেটের সবকিছু বের হয়ে পায়ে গিয়ে পড়বে, আল্লাহর নির্দেশে কাফির আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে, এভাবে বার বার তাকে আজাব দেয়া হবে:

জাহান্নাম নিয়ে উক্তি

আরবির বাংলা অর্থ: “আবু হুরাইরা (রাঃ)  নবী (সাঃ)  আমার থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: উত্তপ্ত পানি কাফিরের মাথায় ঢালা হবে, যা তাদের মাথা ছিদ্র করে পেটে গিয়ে পৌঁছবে এবং পেটে যাকিছু আছে তা বের করে ফেলবে, (আর সবকিছু) তার পেট থেকে বের হয়ে পায়ে গিয়ে পড়বে, আর এটিই শব্দের ব্যাখ্যা। শাস্তি পর কাফির আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।” (আহমদ)"

. বেড়ি শৃঙ্খলের মাধ্যমে আযাব
জাহান্নামীদের গলায় ভারী বেড়ি

জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাহান্নামীদের গলায় ভারী বেড়ি পরিয়ে দেয়া হবে:

জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার পর জাহান্নামীদেরকে ৭০ হাত প্ৰায় ১০৫ ফিট লম্বা শিকল দিয়ে তাদেরকে শৃঙ্খলিত করা হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: (বলা হবে,) ‘তাকে ধর অতঃপর তাকে বেড়ি পরিয়ে দাও।' ‘তারপর তাকে তোমরা নিক্ষেপ কর জাহান্নামে' 'তারপর তাকে বাঁধ এমন এক শেকলে যার দৈর্ঘ্য হবে সত্তর হাত।' সে তো মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করত না, আর মিসকীনকে খাদ্যদানে উৎসাহিত করত না। (সূরা হাক্কাহ ৩০-৩৪)

আরবির বাংলা অর্থ: “আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি শৃঙ্খল, বেড়ি লেলিহান অগ্নি।” (সূরা দাহর )

জাহান্নামে আগুন

কোনো কোনো অপরাধীদের পায়ে আগুনের বেড়ি পরানো হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “আমার নিকট আছে শৃঙ্খল প্রজ্জ্বলিত অগ্নি।” (সূরা মুযযাম্মিল: ১২)

জাহান্নামে আগুন

ফেরেশতাগণ কাফিরদেরকে জিঞ্জিরাবদ্ধ করে জাহান্নামে টেনে নিয়ে যাবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “যখন তাদের গলদেশে বেড়ি শৃঙ্খল থাকবে, তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে ফুটন্ত পানিতে, অতপর তাদেরকে দগ্ধ করা হবে অগ্নিতে।” (সূরা মু'মিন ৭১-৭২)

জাহান্নামে আগুন

কোনো কোনো অপরাধীদেরকে হাতে পায়ে বেড়ি লাগিয়ে আলকাতারা পোশাক পরিয়ে দেয়া হবে:

আরবির বাংলা অর্থ: “সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃঙ্খলিত অবস্থায়, তাদের জামা হবে আলকাতরার এবং অগ্নি আচ্ছন্ন করবে তাদের মুখমন্ডল।” (সূরা ইবরাহিম: ৪৯-৫০)

গলায় বিষাক্ত সাপকে বেড়ি করে দেয়া হবে

কোনো কোনো লোকদের গলায় বিষাক্ত সাপকে বেড়ি করে দেয়া হবে:

. অন্ধকার সংকীর্ণময় স্থানে নিক্ষেপের মাধ্যমে আযাব জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তির একটি ধরণ হবে যে, জাহান্নামীকে তার হাত, পা ভারী জিঞ্জির দিয়ে বেঁধে অত্যন্ত সংকীর্ণ অন্ধকার রুমের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে ওপর থেকে দরজা পরিপূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে, ফলে সেখানে না বাতাস প্রবেশ করতে পারবে না সূর্যের কিরণ, আর না থাকবে পালানোর মত কোনো রাস্তা।

জাহান্নাম কাফেরের জন্য এত সংকীর্ণ হবে

আবদুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ)  বলেন: “জাহান্নাম কাফেরের জন্য এত সংকীর্ণ হবে যেমন বর্ষার ফলা কাঠের মধ্যে সংকীর্ণ করে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।

জাহান্নামের ওয়াজ

ভয়াবহ শাস্তির একটি অনুমান এভাবে করা যেতে পারে যে, কোনো বড় প্রেসার কোকার যেখানে এক হাজার মানুষ আটবে, সেখানে যদি জোরপূর্বক দু'হাজার মানুষ ঢুকিয়ে দেয়া হয়, তাহলে তাদের শ্বাস নেয়াও মুশকিল হবে, হাত, পা, জিঞ্জির দিয়ে বাঁধা, ফলে নড়া চড়াও করতে পারবে না।

জাহান্নামের আগুনের ছবি

আর ওপর দিয়ে প্রেসার কোকারের ঢাকনা মজবুত করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং জাহান্নামের আগুনে তা রান্না করার জন্য রাখা হয়েছে, এমতাবস্থায় কাফির মৃত্যু কামনা করবে কিন্তু তার মুত্যু হবে না।

জাহান্নামের আয়াত

আল্লাহর বাণীযখন এক শিকলে কয়েকজনকে বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে। বলা হবে আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেক না অনেক মৃত্যুকে ডাক।” (সূরা ফুরকান: ১৩, ১৪)

কাফিররা সর্বদাই ভয়াবহ শাস্তিতে ডুবে

কিন্তু দূর দূরান্তে মৃত্যুর কোনো চিহ্ন পর্যন্ত থাকবে না। আগেই মৃত্যুকে জবাই করে দেয়া হয়েছে, আর কাফিররা সর্বদাই ভয়াবহ শাস্তিতে ডুবে থাকবে। কাফিরকে পদবেড়ি লাগিয়ে আগুনের সংকীর্ণ রুমে ঢুকিয়ে ভয়াবহ শাস্তি কোনো যালেমদেরকে দেয়া হবে? এর উত্তরে সূরা ফুরকানে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন:

আরবির বাংলা অর্থ: “যে কিয়ামতকে অস্বীকার করে আমি তার জন্য অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি।” (সূরা ফুরকান: ১১)

জাহান্নামের সংকীর্ণ অন্ধকার বাসস্থানে

কিয়ামতকে অস্বীকার করার স্বাভাবিক উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীতে পিতা-মাতার স্বাধীন জীবন যাপন, দ্বীন মতাদর্শকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করার স্বাধীনতা, ইসলামী নিদর্শনসমূহকে অবমাননা করার স্বাধীনতা, অশ্লীলতা উলঙ্গপনা বিস্তারের স্বাধীনতা, সৌন্দর্য শরীর প্রদর্শনের স্বাধীনতা,

জাহান্নামের ওয়াজ

উলঙ্গ ছবি প্রকাশের স্বাধীনতা, গাইর মুহরিম (যাদের সাথে বিবাহ জায়েয) নারী-পুরুষের সাথে অবাধ মেলা মেশার স্বাধীনতা, গান, বাদ্য নৃত্য করার স্বাধীনতা, মদ পান ব্যভিচার করার স্বাধীনতা, গর্ভপাত করার স্বাধীনতা, যৌন-চারিতার স্বাধীনতাইচ্ছামত উলঙ্গ হওয়ার স্বাধীনতা

জাহান্নামের সংকীর্ণ অন্ধকার বাসস্থানে

প্রত্যেক বিষয়ের স্বাধীনতা যার মাধ্যমে নারী পুরুষের অবাধ যৌন চর্চা চলে। স্বাধীনতার বিনিময়ে জাহান্নামের সংকীর্ণ অন্ধকার বাসস্থানে জিঞ্জিরাবদ্ধ পা নিয়ে কত বেদনাদায়ক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করতে হবে, হায় কাফিররা যদি তা আজ জানতে পারত!

জাহান্নামকে সত্য বলে জানে

কিন্তু হে মানবমণ্ডলী! যারা আল্লাহ তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখে, জান্নাত জাহান্নামকে সত্য বলে জানে, একটু চিন্তা করো আর উত্তর দাও যে, পৃথিবীর স্বাধীনতার বিনিময়ে, জাহান্নামের বন্দীশালা গ্রহণ করতে কি প্রস্তুত আছ? আল্লাহ তাঁর রাসূলের হালাল করা বিষয়সমূহকে হারাম করে স্থায়ীভাবে

মনে হচ্ছে যৌনচারিতায় প্রাচ্যবাসীরা কাওমে লূতকেও হার মানিয়েছে।

যৌনচারিতাকে বৈধ বন্ধনের সমমান

বৃটিশ আদালতসমূহে যৌনচারিতাকে বৈধ বন্ধনের সমমান দিতে শুরু করেছে, গির্জাসমূহের কোনো কোনো পাদ্রী স্বীয় যৌনচারিতার কথা প্রকাশে গৌরভ বোধ করে, বৃটিশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে এমন অনেক মন্ত্ৰী আছে যারা নির্দ্বিধায় স্বীয় যৌনচারিতার কথা প্রকাশ করে। (তাকবীর ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০০ইং)

জাহান্নামের ওয়াজ

প্রাচ্যে ইচ্ছামত উলঙ্গ হওয়ার স্বাধীনতা তো এখন আর কোন বড় বিষয় নয়। তবে একটি সংবাদ বিবেচ্য যে, সিটেলে ৩৭ বছরের এক উলঙ্গ মহিলার হাইওয়ের মাঝে এক খাম্বা ধরে নৃত্য করতে করতে ওপরে চড়ে গিয়ে গান গাইতে লাগল, তার হাতে একটি মদের বোতল ছিল, পুলিশ দ্রুত বিদ্যুৎ কোম্পানীতে ফোন করে বিদ্যুৎ বন্ধ করাল।

মহিলা নেশাগ্রস্ত ছিল

কেননা মহিলা নেশাগ্রস্ত ছিল আর সে তার জ্বালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেছিল। মহিলার কাণ্ড দেখার জন্য ট্রাফিক জ্যাম লেগে গেল, লোকেরা কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত দৃশ্য দেখতে থাকল। শেষে পুলিশ খুব কষ্ট করে মহিলাকে নিয়ন্ত্রণে এনে তাকে খাম্বা থেকে নামিয়ে গ্রেপ্তার করল।

উলঙ্গপনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই

আর তাকে অভিযোগ করল যে, সে সেফটা এ্যাকট ভঙ্গ করেছে। যার ফলে ট্রাফিক জ্যাম লেগেছিল। (উর্দ নিওউজ ১০ নভেম্বর, ১৯৯৯ইং) মদ পান এবং উলঙ্গপনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। প্রাচ্যের উলঙ্গপনার স্বাধীনতায় মাতাল স্নেহ পরায়ণরা এখন প্রিয় জন্মভূমি (লেখকের) “ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানএর সংবাদ (আমরা হয়ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও আনন্দে লাফাচ্ছি) মাধ্যমও তার স্বজাতিকে কি শিক্ষা দিচ্ছে। হে জ্ঞানবানরা শিক্ষা গ্রহণ কর!

জাহান্নামের সংকীর্ণ অন্ধকার বাসস্থানে জীবন

জাহান্নামের সংকীর্ণ অন্ধকার বাসস্থানে জীবন যাপন করা কি সহজ বলে মনে করছো?

আরবির বাংলা অর্থ: “তাদেরকে জিজ্ঞেস করো: এটাই শ্রেয়, না স্থায়ী জান্নাত। যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? এটাইতো তাদের পুরস্কার প্রত্যাবর্তন স্থল।” (সূরা ফুরকান: ১৫)

জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে

ভীষণ অন্ধকার সংকীর্ণ স্থানে এক সাথে কয়েকজনকে বেঁধে অপরাধীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা মৃত্যু কামনা করবে:

জাহান্নামের আয়াত

আরবির বাংলা অর্থ: “যখন এক শিকলে কয়েকজনকে বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যু কামনা করবে, বলা হবে আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকোনা, অনেক মৃত্যুকে ডাক।” (সূরা ফুরকান: ১৩-১৪)

জাহান্নামীকে জাহান্নামে এমনভাবে

জাহান্নামীকে জাহান্নামে এমনভাবে ঠেসে দেয়া হবে যেমন বর্ণার নিম্নভাগে তার ফলা মজবুত করে ঠেসে দেয়া হয়:

আরবির বাংলা অর্থ: “আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নিশ্চয় জাহান্নাম কাফিরের ওপর এত সংকীর্ণময় করা হবে, যেমন বর্ণার নিম্নভাগে তার ফলা মজবুত করে ঠেসে দেয়া হয়। (শারহুসসুন্না)

জাহান্নামে শুধু আগুন আর আগুন

. জাহান্নামে জাহান্নামীদের মুখমণ্ডল বিদগ্ধ করার মাধ্যমে শাস্তি জাহান্নামে শুধু আগুন আর আগুনই হবে। জাহান্নামীদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সমস্ত শরীর আগুনের মাঝে নিমজ্জিত থাকবে।

পোস্ট ট্যাগঃ

জাহান্নাম কাকে বলে
জান্নাত ও জাহান্নাম কাকে বলে
jahannam kake bole
জাহান্নাম জাহান্নাম
জাহান্নম
জাহান্নামের আওয়াজ
জাহান্নামী
জাহান্নামে যাওয়ার কারণ
কোন কাজে কোন জাহান্নাম
জাহান্নাম কেমন
জাহান্নামের খাবার
জাহান্নামীদের খাবার
জাহান্নাম কত গভীর
জাহান্নামের ঘটনা
জাহান্নামের স্তর কয়টি ও কি কি
জাহান্নামি জাহান্নামি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url